বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। মূলত কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে বাঙালির ঘরে ঘরে অনুষ্ঠিত হয় ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। তবে অনেক বাড়িতে রয়েছে কিছু নিয়মভেদ। তাই এটি শুক্লপক্ষের প্রতিপদের দিনও বহু জায়গায় উদযাপিত হয় ভাইফোঁটা।
ভাইফোঁটার দিন বোনেরা তাদের ভাই -দাদাদের কপালে চন্দন-কাজল- দইয়ের ফোঁটা পরিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে তাঁদের মঙ্গল কামনা করেন। এটি ভাই-বোনের অটুট বন্ধনের কামনায় পালিত একটি পবিত্র উৎসব। ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনার উদ্দেশ্যে বোনেরা এই রীতি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন।
ভ্রাতৃদ্বিতীয়াকে যমদ্বিতীয়াও বলে (Yam Dwitiya)
ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উৎসবকে আবার যমদ্বিতীয়াও বলে। কথিত আছে, এদিন মৃত্যুর দেবতা যম, তার বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্যদিকে প্রচলিত আছে আরও একটি লোককথা। শোনা যায়, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে যখন এসেছিলেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। এরপর থেকেই ভাইফোঁটা উৎসবের সূচনা হয়।
ভাইফোঁটা ২০২৪ দিনক্ষণ (Bhaiphota 2024 Date And Auspicious Time)
* ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া - ৩ নভেম্বর (১৭ কার্তিক), রবিবার।
* প্রতিপদ থাকছে - ১ নভেম্বর (১৫ কার্তিক) সন্ধ্যা ৫/৮/৮ মিনিট থেকে ২ নভেম্বর (১৬ কার্তিক) রা ৬/৫৩/২৩ পর্যন্ত।
* দ্বিতীয় শুরু - ২ নভেম্বর (১৬ কার্তিক) রা ৬/৫৩/ ২৪ মিনিট থেকে।
* দ্বিতীয়া শেষ - ৩ নভেম্বর (১৭ কার্তিক) রা ৮/১৫/১২ পর্যন্ত।
ভাইফোঁটার মন্ত্র (Bhaiphota Mantra)
"দ্বিতীয়ায় দিয়া ফোঁটা, তৃতীয়ায় দিয়া নিতা,
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা,
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।"
এই উৎসব বাঙালিদের কাছে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা নামে পরিচিত হলেও, দেশের অন্যান্য রাজ্যে এর রয়েছে ভিন্ন নাম। গোয়া, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে এই পার্বণ 'ভাইবিজ' নামে পালিত হয়। ভারতের পশ্চিমাংশে এই উৎসব ‘ভাই দুজ’ নামে পালিত হয়। আবার অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে ও নেপালে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে।