Boro Maa Naihati Kali Puja 2025: কালীপুজোয় নৈহাটির বড়মার পুজো কখন? অঞ্জলি ও ভোগের সময়ও রইল

Naihati Boro Maa Temple: এক অমোঘ টানে প্রতি বছর কালীপুজোর সময় হাজার হাজার ভক্ত মানত করেন, পুজো দেন, ভিড় জমান এক ঝলক শুধু বড়মাকে দেখার জন্য। অনেকে আবার মনোবাসনা পূরণ করার জন্য গঙ্গাস্নান করে প্যান্ডেলে দণ্ডি কাটেন।

Advertisement
কালীপুজোয় নৈহাটির বড়মার পুজো কখন? অঞ্জলি ও ভোগের সময়ও রইলনৈহাটির বড়মা

হিন্দু ধর্মে বিভিন্ন তিথিতে মা কালীর (Goddess Kali) বিভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। দেবীর আরাধনা সর্বজনবিদিত। কোথাও শ্যামাপুজো, কোথাও শ্মশানকালী, কোথাও চামুণ্ডাকালী আবার কোথাও কৃষ্ণকালী রূপে পূজিত হন দেবী।  কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে হয় কালী পুজো (Kali Puja) বা শ্যামা পুজো (Shyama Puja)। দক্ষিণেশ্বর, ঠনঠনিয়া, লেক কালীবাড়ি, তারাপীঠ, কামাখ্যা, কালীঘাট, কঙ্কালীতলা, ফিরিঙ্গি কালী বাড়ি থেকে শুরু করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কালী মন্দিরে দীপান্বিতা অমাবস্যায় বিশেষপুজোর আয়োজন করা হয়। 

পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরগুলির (Kali Mandir) মধ্যে, গত কয়েক বছর ধরে একটি মন্দিরের নাম খুব পরিচিত। যে কোনও অমাবস্যা তিথি তো বটেই, এছাড়াও প্রায় রোজই ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে এই মন্দিরে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রয়েছেন মন্দিরের কালী মা। বিশ্বাস অনুযায়ী, মন থেকে ডাকলে মা কাউকে খালি হাতে ফেরান না। কথা হচ্ছে বড়মার (Boro Maa) মন্দির নিয়ে। এবছর ২০ অক্টোবর কালীপুজো। ইতিমধ্যেই বড় মায়ের মন্দিরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জোর কদমে। 

 

Boro Maa Naihati

আরও পড়ুন: আগামী বছর দুর্গাপুজো কবে পড়েছে ? জানুন ২০২৬-র মহালয়া, কালীপুজো, ভাইফোঁটার দিনক্ষণ

 নৈহাটির বড়মা

'ধর্ম হোক যার যার, বড়মা সবার'।  বড়মার খ্যাতি বর্তমানে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। চারিদিকে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে জাগ্রত বড়মা। এক অমোঘ টানে প্রতি বছর কালীপুজোর সময় হাজার হাজার ভক্ত মানত করেন, পুজো দেন, ভিড় জমান এক ঝলক শুধু বড়মাকে দেখার জন্য। অনেকে আবার মনোবাসনা পূরণ করার জন্য গঙ্গাস্নান করে প্যান্ডেলে দণ্ডি কাটেন। নৈহাটির অরবিন্দ রোডের ধর্মশালা বড় কালী ঠাকুরকেই স্থানীয়রা বড়মা বলে ডাকেন।  বড় কালী সমিতি ট্রাস্টের কালীপুজোই আসলে বড়মার পুজো বলে পরিচিত। 

 

এবছর কখন পুজো ও ভোগ? 

সেই জাগ্রত কালীর পুজো এ বার ১০২ বছরে পা দিতে চলেছে। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন প্রথা মেনে মায়ের কাঠামো পুজো সম্পন্ন হয়েছে। পুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বাংলা ডট আজতক ডট ইন-কে জানান, "২০ অক্টোবর, কালীপুজোর রাতে বড়মার মূল পুজো। এদিন সারাদিন দণ্ডি কাটবে ভক্তরা। রাত ১২টায় পুজো। ২.৩০ মিনিটে অঞ্জলি হয়ে ভোগ প্রসাদ বিতরণ করা হবে। যতক্ষণ ভোগ থাকে, আমরা ততক্ষণ বিতরণ করি। এর পরের দিন, ২১ অক্টোবর দুপুর ও রাতে পুজো হবে। ২২ অক্টোবরও দু'বেলা পুজো হবে। ২৪ অক্টোবর বড়মার প্রতিমা নিরঞ্জন হবে।" 

Advertisement

 

Boro Maa Naihati mandir

বড়মার পুজোর প্রস্তুতি 

এবছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড়মায়ের কাছে বিপুল সংখ্যক ভক্তের আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাপস ভট্টাচার্য জানালেন, "আমাদের তরফ থেকে আমরা কিছু এনসিসি-র ক্যাডারকে রেখেছি। এছাড়া বিপর্যয় মোকাবেলা দলকে বলা হয়েছে। মেইল করা হয়েছে। ভোগ প্রসাদ দেওয়ার জন্যে আমরা কিছু আলাদা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের লোককে বলেছি। তাঁরা এমনভাবে ভোগ প্রসাদ বিতরণ করবে, যাতে মানুষ তাড়াতাড়ি প্রসাদ নিয়ে যেতে পারে ভাল মতো। এছাড়াও পুলিশের বাড়তি ফোর্স থাকছে। 

আরও পড়ুন: কেতুর প্রভাবে ৪ রাশির কপালে দুঃখ! অক্টোবরেই খারাপ দিন শুরু এদের

মন্দিরে যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

তাপস ভট্টাচার্য জানান, "আমার কাছে খবর আছে ২১ অক্টোবর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন। সেই জন্যে পুলিশ- প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে আমাদের বাড়তি কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। ওঁর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী আছে।" 

 

Boro Maa Naihati mandir notice

বড়মার মন্দির বন্ধ থাকবে? 

আগামী ১৮ থেকে ২৫ অক্টোবর বন্ধ থাকবে বড়মার মন্দির। বার্ষিক পুজো উপলক্ষে সর্বসাধারণের জন্য সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ থাকবে। ২৬ অক্টোবর থেকে পূর্ব নির্ধারিত সময় মতো মন্দিরে পুজো দেওয়া যাবে। এছাড়াও বার্ষিক পুজো উপলক্ষে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর মন্দিরে বসে প্রসাদ গ্রহণ বন্ধ থাকবে। ৩ নভেম্বর থেকে পুনরায় মন্দিরে বসে প্রসাদ গ্রহণ শুরু হবে পূর্ব নির্ধারিত সময় মতো। 

বড়মার বার্ষিক পুজো

কালীপুজোর সময় প্রতি বছরই মূল মন্দিরের পুজো বন্ধ থাকে। সেই সময় মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ ও কাজ হয়। মন্দির রং হয়। এছাড়াও মায়ের অঙ্গরাগ হয়। ২৯ অক্টোবর বড়মার মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস। এদিন মায়ের প্রতিষ্ঠা পুজো হয়।   

 

Naihati Kali Puja 2025 boromaa

বড়মা কেন নাম? 
 
বড়মা কেন নাম? আসলে এই কালী মূর্তির আকারে ও উচ্চতায় বিরাট, প্রায় ২২ ফুট উচ্চতা। প্রায় ধরুন ১৪ হাত উঁচু একটি কালীমূর্তি। এই কারণে এই দেবীকে বড়মা বলে ডাকেন সকলে। তবে এই পুজো আগে এতটা জনপ্রিয় ছিল না। রাস্তার ধারে রক্ষাকালী মূর্তিতেই পুজো করতেন একদল যুবক। নৈহাটিতে বড়মায়ের একটি স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পুজো হলেও, আগে যে জায়গায় রক্ষাকালী পুজো করা হত কালীপুজোয়, সেখানেই প্রতি বছর মৃন্ময়ী রূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সেখানেই পুজো করা হয়। 

আরও পড়ুন: কুবেরের প্রিয় এই ৩ রাশির জীবনভর জ্যাকপট, কখনও টাকার অভাব হয় না

চাঁদা নেওয়া হয় না

এই পুজো সার্বজনীন হলেও, কারও কাছ থেকে কখনও চাঁদা বা দক্ষিণা নেওয়া হয় না। দেবীর গায়ের গয়না থেকে ভোগ, পুজোর সামগ্রী,পুজোর সমস্ত খরচ করে থাকেন সাধারণ ভক্তরা। নৈহাটির বড়মায়ের গায়ে গয়না দেখলে অবাক হতে হয়। কারণ গোটা মূর্তিই সোনা- রুপোর বিভিন্ন আকারের গয়নায় মোড়া থাকে। শোনা যায়, বড়মা সোনা - রুপো ছাড়া আর কোনও ধাতুর অলঙ্কার পরেন না। তাই ভক্তরাই মনোবাসনা পূরণ করার জন্য বিভিন্ন সময় সোনা ও রুপোর গয়না মানত হিসেবে দিয়ে থাকেন। কেজি- কেজি সোনা ও রুপোর অলঙ্কারে সজ্জিতা হন কৃষ্ণবর্ণ কালী প্রতিমা। 

বড়মার মন্দির স্থাপন 

আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে, ভবেশ চক্রবর্তী ও তাঁর চার বন্ধু মিলে নবদ্বীপে ভাঙা রাস দেখতে যান। সেখানে গিয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে বিস্মিত হয়ে, নৈহাটিতে একটি রক্ষাকালী মূর্তিকে বিশালাকার মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা করেন। কথিত আছে, এই পুজো ভবেশ চক্রবর্তী স্থাপন করেছিলেন, তাই এই দেবীকে ভবেশ কালীও বলা হয়। প্রথমে সকলে ভবেশ কালীই বলে ডাকতেন, তারপর বিশালাকার মূর্তিকে বড়মা বলে অভিহিত করেন।

Advertisement

 


 

POST A COMMENT
Advertisement