আশ্বিন মাসে প্রায় দশ দিন ধরে দুর্গা পুজোর উৎসব পালিত হয়। যদিও প্রকৃত অর্থে, উৎসব শুরু হয় ষষ্ঠি দিন থেকে। দুর্গাপুজোর পাঁচ দিন মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়া দশমী হিসেবে পরিচিত। ষষ্ঠীতে হয় দেবীর বোধন, আর তারপরই মূল পুজো শুরু। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, মহাসপ্তমীতে মহাপুজো হয়। সপ্তমীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানা রীতিনীতি। যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ আচার হল নবপত্রিকা স্নান। আসুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মকানুন।
নবপত্রিকা স্নান
প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলাবউ। এই নবপত্রিকা স্নানকে অনেকে কলা বউ স্নানও বলে থাকেন। সূর্য ওঠার আগেই, একটি কলাগাছ পবিত্র গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, তারপর এটিকে নববধূর (কলা বউ) মতো নতুন শাড়ি পরানো হয়।
৯ টি উদ্ভিদ
'নবপত্রিকা' শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ৯ টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা ৯ টি গাছের পাতা নয়, আসলে ৯ টি উদ্ভিদ। যেগুলি হল - কদলী বা রম্ভা (কলা), বিল্ব (বেল), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, ধান ও মান।
নবপত্রিকা স্নানের নিয়ম
একটি পাতাসহ কলাগাছের সঙ্গে অপর আটটি সমূল সপত্র উদ্ভিদ একত্র করা হয় প্রথমে। এরপর একজোড়া বেল-সহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে, সাদা - লাল পাড় শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া সেটিকে। সিঁদুর পড়িয়ে গনেশের পাশে অর্থাৎ দেবী দুর্গার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয় নবপত্রিকা।
দেবীর ৯ রূপ
নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ আসলে দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে কল্পনা করা হয়। এই ৯ দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী। এই ৯ দেবী একত্রে 'নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা' নামে পূজিতা হন। যার মূল মন্ত্র "নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ"।
মহাসপ্তমীর তারিখ
২৩ আশ্বিন, ইং ১০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার
মহাসপ্তমীর নির্ঘণ্ট
* পূর্বাহ্ণ ঘ ৯। ২৮। সপ্তমী দিবা ঘ ৭। ২৫ পর্যন্ত।
* দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা প্রশস্তা।