শ্রীকৃষ্ণের (Shri Krishna) জন্ম তিথিতেই দেশ জুড়ে পালিত জন্মাষ্টমী (Janmashtami)। জন্মাষ্টমীর অপর নাম কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নবদ্বীপ, নদীয়া, মথুরা, বৃন্দাবন সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মহা সমারোহে উৎসব পালন করা হয়। প্রায় একমাস আগে থেকে চলে তার প্রস্তুতি।
বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম সন্তান এবং বিষ্ণুর অষ্টম অবতার কৃষ্ণ কংসের কারাগৃহে জন্ম হয়। ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ও রোহিণী নক্ষত্রে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। প্রতি বছর এই তিথিতে কৃষ্ণের ছোটবেলার রূপ, ননীগোপালের পুজো করা হয়।
জন্মাষ্টমী কবে? (Janmashtami 2025 Date)
এবছর ১৬ অগাস্ট পড়েছে জন্মাষ্টমী এবং ১৭ অগাস্ট নন্দোৎসব।
জন্মাষ্টমীর অষ্টমী তিথি (Janmashtami 2025 Ashtami Tithi)
১৫ অগাস্ট রাত ১/১৬/৮ থেকে ১৬ অগাস্ট রাত ১০/৪৮/৩ পর্যন্ত থাকবে অষ্টমী তিথি।
সনাতন ধর্মে মধ্যে বিশেষত বৈষ্ণবদের কাছে জন্মাষ্টমী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসব নানা ভাবে উদযাপন করা হয়। ভগবত পুরাণ অনুযায়ী নৃত্য, নাটক যাকে বলা হয় রাসলীলা বা কৃষ্ণ লীলা। মধ্যরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের মুহূর্তে ধর্মীয় গীত গাওয়া, উপবাস, দহি হান্ডি ইত্যাদি। রাসলীলাতে মূলত শ্রীকৃষ্ণের ছোটবেলার বিভিন্ন ঘটনা দেখানো হয়। অন্যদিকে দহি হান্ডি প্রথায় অনেক উঁচুতে মাখনের হাড়ি রাখা হয় এবং অনেকে মিলে মানুষের পিরামিড তৈরি করে সেই হাড়ি ভাঙার চেষ্টা করে। তামিলনাড়ুতে এই প্রথা উড়িয়াদি নামে পরিচিত।
শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে মধ্যরাতে তার ছোট মূর্তিকে স্নান করিয়ে, কাপড় দিয়ে মোছা হয় এবং দোলনায় সাজানো হয়। এরপর প্রসাদ খেয়ে বিনিময় উপবাস ভঙ্গ করা হয়। অনেক বাড়িতে দরজার বাইরে, রান্নাঘরে শ্রী কৃষ্ণের পদচিহ্ন এঁকে আল্পনা দেওয়া দেয়, দেন যা শ্রীকৃষ্ণের যাত্রা হিসেবে বিবেচিত হয়।
নন্দোৎসব
নন্দোৎসব, জন্মাষ্টমীর পরের দিন পালিত হয়। এটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসবের আনন্দ উদযাপন করে, যেখানে নন্দ মহারাজ (কৃষ্ণের পালক পিতা) তার পুত্রের জন্ম উপলক্ষে এই উৎসব পালন করেন। নন্দোৎসব, যা নন্দনন্দন উৎসব নামেও পরিচিত, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়। এদিন, ভক্তরা নন্দ মহারাজ এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করে এবং তাদের প্রতি ভক্তি জানায়।
নন্দোৎসব ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মোৎসবের আনন্দ ও উল্লাসের উদযাপন। এই দিনে, ভক্তরা নন্দ মহারাজ এবং শ্রীকৃষ্ণের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এটি ভক্তদের মধ্যে আনন্দ, প্রেম এবং ভক্তির বার্তা ছড়িয়ে দেয়। এই উৎসবটি বৃন্দাবনের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই বিশেষ দিনে কৃষ্ণের প্রিয় ভোগ নিবেদন করা হয়। অনেক বাড়িতে জন্মাষ্টমীর থেকেও বেশি বড় করে নন্দোৎসব পালন করা হয়।
জন্মাষ্টমীর ভোগ
জন্মাষ্টমীর দিন শ্রীকৃষ্ণের পছন্দের সব খাবারগুলি ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়। সেই পছন্দের তালিকায় রয়েছে তালের বড়া, তালের ক্ষীর, মাখন, মিছরি, ৫৬ ভোগ, মোহনভোগ, ক্ষীর। এছাড়াও নারকেল নাড়ু, লুচি -সুজি, রকমারি মিষ্টি, পোলাও ও অনেক রকম নিরামিষ পদ ভোগ হিসাবে উৎসর্গ করার রীতি রয়েছে লাড্ডু গোপালকে।