কার্তিক বা কার্ত্তিক বাংলা সনের সপ্তম মাস এবং হিন্দু পঞ্জিকা ও ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শকাব্দের অষ্টম মাস। এই মাসের নামটি কৃত্তিকা নক্ষত্রের নাম থেকে এসেছে। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী, এবছর কার্তিক মাস ১৯ অক্টোবর থেকে ১৭ নভেম্বর অবধি থাকবে।
হিন্দু ধর্মে কার্তিক মাস অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। এই সময় ভগবান বিষ্ণুর বিশেষ প্রার্থনা এবং পুজো করা হয়। শাস্ত্র অনুসারে, কার্তিক মাসে ভগবান বিষ্ণু যোগনিদ্রা থেকে জাগেন এবং তাঁর উপাসনা করলে আশীর্বাদ লাভ হয়। ভক্তরা কার্তিক মাসে ভগবান কৃষ্ণের কাছেও বিশেষ প্রার্থনা করেন। এছাড়াও, দীপাবলির মতো পবিত্র উৎসবও এই মাসে রয়েছে। ফলে প্রদীপ জ্বালানোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কার্তিক মাসে প্রদীপ দান করলে বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: কেতুর প্রভাবে ৪ রাশির কপালে দুঃখ! অক্টোবরেই খারাপ দিন শুরু এদের
এবছর কার্তিক মাসে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি উৎসব ও পুজো রয়েছে। হিন্দু ধর্মে (Hinduism) এই মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাসভর রয়েছে নানা ধর্মীয় রীতি। দীপাবলি থেকে শুরু করে কার্তিক পুজো, উৎসবে ভরা কার্তিক মাসে কবে, কোন বিশেষ পুজো- পার্বণ, দেখে নিন এক নজরে।
হিন্দু বর্ষপঞ্জী অনুসারে, কার্তিক মাসের ব্রত- উৎসবের দিন
* ১৯ অক্টোবর (১ কার্তিক)- ভূত চতুর্দশী
* ২০ অক্টোবর (২ কার্তিক)- কালীপুজো/ দীপাবলি
* ২২ অক্টোবর (৪ কার্তিক)- গোবর্ধন পুজো
* ২৩ অক্টোবর (৫ কার্তিক)- ভাইফোঁটা
* ২৭ অক্টোবর (৯ কার্তিক)- ছট পুজো
* ৩০ অক্টোবর (১২ কার্তিক)- জগদ্ধাত্রী পুজো
* ১ নভেম্বর (১৪ কার্তিক)- দেবুথানী একাদশী এবং চতুর্মাস সমাপ্তি
* ৪ নভেম্বর (১৭ কার্তিক)- রাসযাত্রা
* ৫ নভেম্বর (১৮ কার্তিক)- গুরুনানক জয়ন্তী/ দেব দীপাবলি
* ১৭ নভেম্বর (১৮ কার্তিক)- কার্তিক পুজো
আরও পড়ুন: কালী পুজো, দীপাবলি কবে? শুভ তিথি, দেবীর রূপভেদের বৈশিষ্ট্য জেনে নিন
কার্তিক মাসের প্রতিকার
কার্তিক মাসে সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে স্নান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই কাজ করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং মানসিক শান্তি আসে। স্নানের পর, ভগবান বিষ্ণু বা শ্রীকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা করার সময় আপনার বাড়ির মন্দিরে বা ঠাকুরঘরে একটি প্রদীপ জ্বালান। যদি ঘি না থাকে, তাহলে তিলের তেল দিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে পারেন। এরপর মন্ত্র জপ করুন, বিশেষ করে 'ওঁ নমোঃ ভগবতে বাসুদেবায় নমঃ', ১০৮ বার জপ করলে অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করা হয়।
এছাড়াও, কার্তিক মাসে তুলসী পুজো এবং তুলসী বিবাহ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই মাসে তুলসী মাতার নিয়মিত সেবা জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: বৃহস্পতির প্রিয় এই ৪ রাশির কপাল সোনায় মোড়া, জীবনভর জ্যাকপট লেগে থাকে
কার্তিক মাসে স্নান এবং দান-পুজোর গুরুত্ব
কার্তিক মাসে স্নান, দান এবং পুজোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই মাসে গঙ্গা বা অন্য কোনও পবিত্র নদীতে স্নানের পর চাল, মুসুর ডাল, আটা এবং ফল মূলের মতো খাবার দান, পাপ নির্মূল করতে এবং পুণ্য লাভ করতে সাহায্য করে। যদি সময় কম থাকে, তাহলে স্নানের জলে গঙ্গার জল মিশিয়ে পুণ্যলাভ করতে পারেন। বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করাও উল্লেখযোগ্য উপকারিতা রয়েছে। এই মাসে প্রদীপ দান করাও অত্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত। মন্দির বা নদীতে প্রদীপ জ্বালালে ইচ্ছা পূরণ হয় এবং মঙ্গল বয়ে আনে বলে বিশ্বাস করা হয়।