scorecardresearch
 

Mahalaya 2023- Pitri Tarpan Timing- Rules: মহালয়ায় পিতৃ তর্পণের নিয়ম কী? জানুন পূর্ব পুরুষকে জলদানের সময়

Mahalaya 2023: মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। পুরাণ মতে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর অমর হয়ে উঠেছিলেন।

Advertisement
পিতৃ তর্পণের মুহূর্ত (ছবি: ফেসবুক) পিতৃ তর্পণের মুহূর্ত (ছবি: ফেসবুক)

মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে, মাতৃপক্ষ শুরু হয়। সেদিনই আক্ষরিক অর্থে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়। কথিত আছে মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। এই মহালয়ার গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে অনেক। মহালয়ার দিন পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি প্রচালিত আছে। এদিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। জানুন পিতৃ তর্পণের নিয়মকানুন ও সময়। 

মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। পুরাণ মতে, ব্রহ্মার বরে মহিষাসুর অমর হয়ে উঠেছিলেন। শুধুমাত্র কোনও নারীশক্তির কাছে তার পরাজয় নিশ্চিত। অসুরদের অত্যাচারে যখন দেবতারা অতিষ্ঠ, তখন ত্রিশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর নারীশক্তির সৃষ্টি করেন। তিনিই মহামায়ারূপী দেবী দুর্গা। দেবতাদের দেওয়া অস্ত্র দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করেন দুর্গা। এই জন্যেই বিশ্বাস করা হয় যে, এই উৎসব খারাপ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির বিজয়।

তর্পণ বৈদিক অনুশীলনের একটি শব্দ যা ঐশ্বরিক সত্তার প্রতি কোন কিছু নিবেদন করাকে বোঝায়। তর্পণ শব্দটার উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত 'তৃপ্' (অর্থাৎ সন্তুষ্ট করা) থেকে। হিন্দুধর্মে দেবতা, ঋষি ও মৃত পূর্বপুরুষদের (পিতৃকুল ও মাতৃকুল) উদ্দেশ্যে জল নিবেদন করে তাঁদের সন্তুষ্ট করার পদ্ধতিকে তর্পণ বলা হয়। বংশের যে সকল‌ পিতৃপুরুষ পরলোক গমন করেছেন, তাঁদের প্রীতির উদ্দেশ্যে মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক স-তিল জল (তিল মেশানো জল) দান করে সাধারণত পুত্রসন্তানেরা পিতৃতর্পণ করে থাকেন। এভাবে তর্পণ করাকে আবার তিল তর্পণও বলে।

আরও পড়ুন

হিন্দুধর্মে দেবতা, ঋষি ও মৃত পূর্বপুরুষদের (পিতৃকুল ও মাতৃকুল) উদ্দেশ্যে জল নিবেদন করে তাঁদের সন্তুষ্ট করার পদ্ধতিকে তর্পণ বলা হয়। বংশের যে সকল‌ পিতৃপুরুষ পরলোক গমন করেছেন, তাঁদের প্রীতির উদ্দেশ্যে মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক স-তিল জল (তিল মেশানো জল) দান করে সাধারণত পুত্রসন্তানেরা পিতৃতর্পণ করে থাকেন। এভাবে তর্পণ করাকে আবার তিল তর্পণও বলে।

Advertisement

কোশা-কুশী পুজোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এই কোশা-কুশীটি খাঁটি তামা দিয়ে তৈরি। কোশা-কুশী দেব ও দেবীর প্রতি পবিত্র জল নিবেদন এবং শ্রাদ্ধ তর্পণ পূজার জন্য ব্যবহৃত হয়। কোশা-কুশী, ঐশ্বরিক মাতার তান্ত্রিক পূজার জন্য ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু।

হিন্দুশাস্ত্রে নানারকম তর্পণের কথা বলা হয়েছে। যেমন, দেব তর্পণ, মনুষ্য তর্পন, ঋষি তর্পণ, দিব্যপিতৃ তর্পন, যম তর্পণ, ভীষ্ম তর্পণ, পিতৃ তর্পণ, মাতৃ তর্পণ, অগ্নিদগ্ধাদি তর্পন, রাম তর্পন ও লক্ষণ তর্পণ ইত্যাদি। এর মধ্যে পিতৃতর্পণ রীতিই সাধারণ মানুষের মধ্যে অধিক প্রচলিত। এর অপর নাম পিতৃযজ্ঞ। তবে তর্পণের ক্ষেত্রে সব সময় তিল সহ জল অর্পণ করা যায় না। এক্ষেত্রে কিছু নিয়ম আছে। 

তর্পণের নিয়ম 

* রবি ও শুক্রবারে, সপ্তমী ও দ্বাদশীতে, শ্রাদ্ধ দিনে ও জন্ম দিনে তিলসহ তর্পণ নিষিদ্ধ।

* অমাবস্যা শ্রাদ্ধে, সংক্রান্তিতে, গ্রহণকালে, গঙ্গা প্রভৃতি তীর্থে, বৃষোৎসর্গে, যুগাদ্যায়, মৃতাহে ও প্রেত পক্ষে নিষিদ্ধ দিনেও তিল তর্পণ করা যায়।

* পিতা জীবিত যাদের, তারা কেবল প্রেততর্পণ করতে পারবেন। সাধারণ তর্পণ করা তাদের নিষেধ।

* শ্বেত চন্দন জলে মিশিয়ে তর্পণ করলে তা বিশেষ ফলপ্রদ হয়।

* ব্রাহ্মণ শূদ্র সকলেরই তর্পনের সমান অধিকার।

* সকাল-সন্ধ্যা দু'বেলাতেই পুজোর পরে তর্পণ করা যায়। তবে দুই বেলা না পারলেও অন্তত পক্ষে এক বেলা তর্পণ করা। 

* কাল অশৌচে প্রেত তর্পণ ছাড়া অন্য কোন তর্পণ করা যায় না।

* পিতৃ ও মাতৃ তর্পণের ক্ষেত্রেই খালি তিল অর্পণ করা যায়। দেব তর্পন, ঋষি তর্পণ ও মনুষ্য তর্পণের ক্ষেত্রে তিলের ব্যবহার নিষেধ। এই সকল ক্ষেত্রে যব ব্যবহার করতে পারা যায়।

পিতৃ তর্পণের সময় ও সঠিক দিক

মহালয়ার দিনের অষ্টম মুহুর্তে অর্থাৎ কুতুপ কাল শ্রাদ্ধ করুন। ১১টা ৩৬ মিনিট থেকে ১২টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত হল কুপুত কাল শ্রাদ্ধের সময়। দক্ষিণ দিকে মুখ করে, বাম পা মুড়ে মাটিতে আপনার হাঁটু দিয়ে বসুন। একটি চওড়া তামার পাত্রে বার্লি, তিল, চাল, কাঁচা গরুর দুধ, গঙ্গা জল, সাদা ফুল এবং জল একসঙ্গে মিশ্রিত করুন। হাতে কুশা ঘাস রেখে ওই জল পূরণ করুন। এরপর বুড়ো আঙুল দিয়ে সরাসরি একই পাত্রে ফেলে দিন। এইভাবে ১১ বার করে আপনার পূর্বপুরুষদের ধ্যান করুন।

তর্পণের সময় কোন মন্ত্র জপ করা উচিত। তবে কতবার পূর্ব পুরুষদের জল দেওয়া উচিত জেনে নিন। প্রথমে হাতে কুশ নিয়ে দুই হাত জোড় করে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করুন ও তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়ে 'ওম আগচ্ছন্তু মে পিতর এবং গ্রহন্তু জলাঞ্জলিম' মন্ত্র জপ করা উচিত। এই মন্ত্রের অর্থ হল 'হে পিতৃপুরুষ আসুন এবং জলাঞ্জলি গ্রহণ করুন।'

মহালয়া ২০২৩ তারিখ 

এই বছর মহালয়া পড়েছে ১৪ অক্টোবর (২৬ আশ্বিন), শনিবার। 

কতক্ষণ থাকছে অমাবস্যা তিথি? 

১৩ সেপ্টেম্বর (২৫ আশ্বিন), রাত ৯/২৬/৯  থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর (২৬ আশ্বিন), রাত ১০/৪৯/৪৪ পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা তিথি।  

Advertisement