Pitru Paksha 2024 Starting- Ending Dates: কবে থেকে শুরু পিতৃপক্ষ? জানুন এই ধর্মীয় তিথির গুরুত্ব- নিয়মকানুন

শাস্ত্র মতে কোনও মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ শান্তি করলে, তাঁর আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং সেই আত্মা মুক্তি লাভে সক্ষম হয়। হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পিতৃ দোষ সবেচেয়ে জটিল রাশিফলের ত্রুটি বলে বিবেচিত।

Advertisement
কবে থেকে শুরু পিতৃপক্ষ? জানুন এই ধর্মীয় তিথির গুরুত্ব- নিয়মকানুন প্রতীকী ছবি

 গণেশ চতুর্থী মানেই দুর্গাপুজোর কাউন্ট ডাউন শুরু। মহালয়ার দিন থেকে সূচনা হয় মাতৃপক্ষের। তার আগে ১৫ দিন চলে পিতৃপক্ষ। অর্থাৎ পিতৃপক্ষের অবসান হয়েই সূচনা হয় মাতৃপক্ষের। উমার মর্তে আগমনের আগে পিতৃপক্ষের শেষে পিতৃ তর্পণ ঘিরে হিন্দু ধর্মে নানা রীতিনীতি রয়েছে। 

শাস্ত্র মতে কোনও মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ শান্তি করলে, তাঁর আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং সেই আত্মা মুক্তি লাভে সক্ষম হয়। হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পিতৃ দোষ সবেচেয়ে জটিল রাশিফলের ত্রুটি বলে বিবেচিত। ব্রহ্ম বৈবত পুরাণ মতে, একজন ব্যক্তির, তাঁর পিতৃ পুরুষদের সন্তুষ্ট করা উচিত, দেবতাদের আগে। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী ভাদ্র পূর্ণিমা তিথিতে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়ে মহালয়ার দিন সমাপ্তি হয়। 

অন্যদিকে উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্র মাসের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়। তবে সাধারণভাবে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদে পিতৃপক্ষ শুরু হয় এবং অমাবস্যা তিথি অবধি থাকে। এই বছর পিতৃপক্ষ শুরু হবে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর। ২ অক্টোবর, মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে, শুরু হবে দেবীপক্ষ বা মাতৃপক্ষ। 

বিশ্বাস করা হয় যে পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধ শান্তি ও তর্পণ করলে পূর্ব পুরুষেরা খুশি হন এবং আশীর্বাদ করেন। তাঁদের কৃপায় জীবনের অনেক বাধা দূর হয়। জীবনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে। জ্যোতিষী ডাঃ অরবিন্দ মিশ্র জানালেন, যে শ্রাদ্ধ না করলে আত্মা মুক্তি পায় না। পিতৃপক্ষের নিয়মকানুন পালন করলে দাতব্য করলে রাশিচক্র থেকে পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পিতৃ পক্ষের শ্রাদ্ধ ও তর্পণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

পিতৃশ্রাদ্ধের নিয়ম 

পিতৃপক্ষে দক্ষিণ দিকে মুখ করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্য জল দেওয়া উচিত। জলের সঙ্গে কালো তিল মিশিয়ে, একহাতে কুশ রাখতে হয়। পূর্বপুরুষের মৃত্যু দিনে খাদ্য ও বস্ত্র দান করা ভাল। একই দিনে দরিদ্র ব্যক্তিকে খাবার দান করা হয়। 

Advertisement

পিতৃলোক কী? 

পুরাণ অনুযায়ী, কোনও জীবিত ব্যক্তির তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বসবাস করেন। এই লোক আসলে, স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। মৃত্যু দেবতা যমরাজই পিতৃলোকের শাসক।

পিতৃলোক থেকে স্বর্গে গমন 

সদ্য মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান যমরাজ। আবার পরবর্তী প্রজন্মের কারও মৃত্যু হলে, আগের প্রজন্মের একজনের স্বর্গে গমন হয় এই পিতৃলোক থেকে। স্বর্গে গমনের পর সেই আত্মা, পরমাত্মায় লীন হন।  

শ্রাদ্ধ- শান্তির সময় কাককে খাওয়ানোর রীতি

পিতৃপক্ষে কাককে খাওয়ানোর তাৎপর্য রয়েছে হিন্দু ধর্মে। আসলে মনে করা হয় কাক, যমরাজের প্রতীক। এজন্যে শ্রাদ্ধের আগে অশৌচ চলাকালীন হবিষ্যি খাওয়ার আগে কাককে খাওয়ার উৎসর্গ করে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে হয়। সেই খাবারে কাক মুখ না দিলে, সেটি হবিষ্যি করা যায় না। বিশ্বাস করা হয় যে, কাক যদি সেই খাবার গ্রহণ করে, তাহলে পূর্ব পুরুষেরা সন্তুষ্ট হন।

প্রসঙ্গত, হিন্দু শাস্ত্রে কেবল মাত্র কাকের উল্লেখ আছে, যা পূর্ব পুরুষ বা আত্মার সঙ্গে সম্পর্কিত। কাকের উল্লেখ ও গুরুত্ব রয়েছে ভারতের বাইরের বিভিন্ন পুরাণেও। গরুড় পুরাণ অনুসারে, কাক হলেন যমরাজের বার্তা বহনকারী। গ্রীক পুরাণে মনে করা হয়, কাক, সৌভাগ্যের প্রতীক।  


 

POST A COMMENT
Advertisement