সিদ্ধিদাতা গণেশের (Siddhidata Ganesh) জন্মোৎসব গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi) নামে পরিচিত। ভাদ্রপদ মাসের চতুর্থী তিথির শুক্লপক্ষে সাধারণত পালিত হয় এই উৎসব। বিশ্বাস করা হয় যে, নিষ্ঠা করে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সিদ্ধিদাতার পুজো করলে, সুখ -শান্তি বজায় থাকে, সমৃদ্ধি হয় এবং সমস্ত বাধা দূর হয়।
করোনার জেরে জাঁকজমক কিছুটা কমলেও দেশের বিভিন্ন প্রাপ্তে সকলে মেতে উঠেছেন গণেশ চতুর্থীতে। পশ্চিমবঙ্গতেও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। গণেশকে, হিন্দুদের সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের দেবতা মনে করা হয়।
এই বছর গণেশ চতুর্থী পড়েছে ১০ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার। ৯ সেপ্টেম্বর রাত ২.২৫ মিনিট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১২.২২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে চতুর্থী তিথি। মধ্যাহ্ন গণেশ পুজোর শুভ মুহূর্ত - ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ১১.০৩ মিনিট থেকে দুপুর ১.৩৩ মিনিট পর্যন্ত।
গণপতিকে (Ganpati) ভালোবেসে ভক্তরা একাধিক ভোগ (Bhog) উৎসর্গ করেন। তবে তার মধ্যে গণেশ চতুর্থীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু প্রচলিত ভোগ। এগুলো গণেশের অত্যন্ত প্রিয়। নিষ্ঠা করে এই ভোগ উৎসর্গ করলে সিদ্ধিদাতা সন্তুষ্ট হন।
মোদক (Modak)
গণেশের আরেক নাম মোদকপ্রিয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। একবার স্বর্গে, দেবী পার্বতী, একটি মোদক উপহার স্বরূপ পান। কিন্তু কে খাবে সেই একটি মোদক এই নিয়ে কার্তিক ও গণেশের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। শেষমেশ দেবী বলেন, যে তিনবার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে আগে আসতে পারবে, সে মোদকটি পাবে। কার্তিক গোটা পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে শুরু করেন। অন্যদিকে গণেশ, পার্বতীকে প্রদক্ষিণ করে বলেন "তুমিই আমার পৃথিবী"। সন্তুষ্ট হয়ে দেবী তাঁর হাতেই মোদকটি দেন।
নারকেলের মোদকই মূলত গণেশকে উৎসর্গ করার চল ছিল আগে। তবে ক্ষিরের মোদকও যথেষ্ট জনপ্রিয়। আজকাল চকোলেট সহ আরও একাধিক ফ্লেভারের রকমারি মোদক পাওয়া যায় দোকানে।
লাড্ডু (Laddoo)
লাড্ডু গণেশের অত্যন্ত প্রিয় খাবার। বোঁদে ও বেসনের লাড্ডু মূলত সেই প্রিয় তালিকায় সবার প্রথমে আসে।
পায়েস (Kheer)
গোবিন্দভোগ চালের পায়েস গণেশের পছন্দ। পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী পরমান্ন রেঁধে দিতেন মহাদেবকে। আর তখন গণেশও খেতেন সেই পদ। সেজন্যেই গণেশ চতুর্থীর ভোগে এটি অবশ্যই রাখবেন।
মুড়ির মোয়া (Puffed Rice Laddoo)
গণেশ সিদ্ধিদাতা। দরিদ্রদের তিনি ভালোবাসেন, তাঁদের প্রার্থনায় সাড়া দেন। তাই গুড় ও মুড়ি দিয়ে তৈরি মোয়া অর্থাৎ মুড়ির মোয়া তাঁর অত্যন্ত পছন্দের।
নারকেল (Coconut)
নারকেলকে যে কোনও পুজোর জন্যই শুভ বলে মনে করা হয়। গণেশ পুজোতেও নারকেল উৎসর্গ করা হয়। মনে করা হয়, গণেশ চতুর্থীর দশ দিনের মধ্যে অন্তত একদিন এই ফল ভোগ হিসাবে দেওয়া ভাল।
কলা (Banana)
সনাতন ধর্মে কলাকে স্বাস্থ্যকর নৈবেদ্য হিসাবে মনে করা হয়। গণেশ পুজোতেও কলা ভোগ হিসাবে দেওয়ার চল আছ। মনে করা হয় এটি গণপতির অত্যন্ত প্রিয়।