ভগবান শিবের মন্ত্র উচ্চারণে ও তাঁর আরাধনা করলে জীবনে আসে সুখ-শান্তি, কেটে যায় সমস্ত বাধাবিঘ্ন। ধর্মীয় গ্রন্থে শিবের বেশকিছু রূপের বর্ণনা করা হয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম মহামৃত্যুঞ্জয় (Maha Mrityunjaya Mantra)। এই রূপে শিব হাতে অমৃত নিয়ে ভক্তদের রক্ষা করেন। শোনা যায়, মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করলে, পাওয়া যায় দীর্ঘ আয়ু। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মন্ত্রের মহিমা এবং এই এটি জপের সময় কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা উচিত।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের মহিমা
শিবের অনেক রূপের মধ্যে একটি হল মহামৃত্যুঞ্জয়। তাই শিবকে মৃত্যুঞ্জয়ও বলা হয়। এই মন্ত্রের মাধ্যমে মহাদেবের কাছে জীবন রক্ষার প্রার্থনা করা হয়। এই মন্ত্রের দুটি রূপ, ছোট এবং বড়। এই দুই রূপের মন্ত্র জব করলে ভক্ত সবসময় সুরক্ষিত থাকেন বলে মনে করা হয়। বিভিন্নভাবে এই মন্ত্র প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে বিভিন্ন দোষ কাটানর জন্যও এই মন্ত্র বিশেষ কার্যকরী।
মন্ত্র জপের সময় এই সাবধানতাগুলি অবলম্বন করুন
এই মন্ত্রজপের কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম অনুসারে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করলে তা বিশেষভাবে কার্যকরী হয়ে ওঠে। সকাল ও সন্ধ্যা, দুই সময় এই মন্ত্র জপ করা যায়। তবে সঙ্কটকালে যেকোনও সময় এই মন্ত্রোচ্চারণ করা যেতে পারে। শিবলিঙ্গ বা ভগবান শিবের মূর্তির সামনে এই মন্ত্রের জপ করা বেশি ভাল। রুদ্রাক্ষের মালা সহ এই মন্ত্র জপ করা উচিত। মন্ত্রোচ্চারণের আগে ভোলানাথকে বেলপাতা ও জলদান করলে তা খুবই ভাল ফল দেয়।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র কত প্রকার?
এই মন্ত্র বেশকয়েক ধরনের হয়। রয়েছে এক অক্ষরের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র, যা জপ করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানাতেই নিয়মিতভাবে এই মন্ত্র জপ করলে দীর্ঘ আয়ু পাওয়া যায় এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
রয়েছে তিন অক্ষরের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রও। রাতে ঘুমনোর আগে ২৭ বার এই মন্ত্র পাঠ করলে দেহে রোগব্যাধি বাসা বাঁধে না। আর চার অক্ষরের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করলে অস্ত্রোপচার ও দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কমে যায়। সকালে উঠে মহাদেবকে জলদানের পর ৩ বার এই মন্ত্র জপ করা উচিত।
এছাড়া রয়েছে দশ অক্ষরের মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। একে বলা হয় অমৃত মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র। যাঁর নামে এই মন্ত্র জপ করা হচ্ছে তাঁর নামও এই মন্ত্রের মধ্যে রাখতে হবে। তামার ঘটিতে জল ভরে তার সামনে এই মন্ত্র জপ করা উচিত। তারপর সেই জল তাঁকে খাওয়ান যাঁর স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে।
মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রকে মৃত সঞ্জীবনী মন্ত্রও বলা হয়। শাস্ত্র অনুসারে এই মন্ত্র পাঠ করলে, মরণাপন্ন মানুষও ফের জীবন ফিরে পেতে পারেন। যখন জীবনের আশা প্রায় থাকেই না, সেই সময় এই মন্ত্র কমপক্ষে ৬৪ হাজার বার সওয়া লক্ষবার পাঠ করা উচিত। এই মন্ত্র জপ করার সময় সমগ্র আচার -অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা উচিত। আর যদি অন্য কারও জন্য এই মন্ত্রটি জপ করা হয়, তাহলে রোজ পুজোর পর, ওই ব্যক্তির মাথায় সেই ফুল রাখা দরকার। তাতে অবশ্যই সুফল মিলবে।