কালীপুজো মানেই নৈহাটির বড়মার দর্শন করা মাস্ট। বড়মায়ের মন্দির তৈরির পর থেকে সারাবছরই ভিড় লেগে থাকে। তবে কালীপুজো উপলক্ষ্যে জনসুমদ্রে ভাসে নৈহাটি। অতিরিক্তি ভিড় সামাল দিতে কার্যত নাকানি-চোবানি খায় পুলিশ। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবার বড় পদক্ষেপ করল রেল।
আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে নৈহাটির বড়মার মন্দিরের ভিড় সামাল দিতে। রেল ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা এই মর্মে যৌথ ভাবে পরিদর্শন করেছে নৈহাটি স্টেশনে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ রূপরেখাও স্থির করেছে তারা।
RPF, পূর্ব রেলের কর্তারা, নৈহাটি পুরসভার আধিকারিকরা, দমকল বিভাগ এবং পূর্ত দফতর পরিদর্শন করেন নৈহাটি স্টেশন। ছিলেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা। নৈহাটির বড়মার মন্দিরের বীভৎস ভিড় সামাল দিতে ঠিক কী পরিকল্পনা করা হবে তা নিয়েই ব্লুপ্রিন্ট ছকেছেন তাঁরা।
রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, নৈহাটি স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রাখা হবে কালীপুজোর দিন। ১৯ অক্টোবর রবিবার থেকে নৈহাটি স্টেশনের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন ট্রেন ছাড়বে না।
কালীপুজোর দিনগুলিতে রবিবার থেকে নৈহাটির ৫ এবং ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকেই কেবল ট্রেনে চড়া যাবে। বড়মার মন্দির দর্শনের জন্য ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেমেই দেশের দর্শনার্থীরা। সেক্ষেত্রে ওই প্ল্যাটফর্ম বন্ধ থাকায় কোন পথে বড়মার মন্দিরে যাওয়া যাবে?
জানা গিয়েছে, যে সমস্ত দর্শনার্থীরা বড়মার মন্দিরে যেতে ট্রেনে চেপে নৈহাটি আসবেন তাদের সাবওয়ে ব্যবহার করতে হবে। সাবওয়ে দিয়ে সোজা বেরিয়ে অরবিন্দ রোডে ঢুকতে হবে দর্শনার্থীদের।
নৈহাটির প্ল্যাটফর্মের পূর্ব দিকে একটি বহু পুরনো ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার রেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন যাতে কালীপুজোর দিনগুলিতে সেই ফুট ওভারব্রিজে কোনও দর্শনার্থী না ওঠেন তার ব্যবস্থা করতে।
নৈহাটি পুরসভার তরফেও কার্যত মেনে নেওয়া হয়েছে নৈহাটি স্টেশনের পরিকাঠামো মজবুত নয়। হাল খারাপ এই স্টেশনের। বিষয়টি রেলের আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন পুরসভার প্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায়। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আশা লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থীদের বড়মার মন্দিরে যেতে ভোগান্তি পোয়াতে হবে।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং রেলরক্ষী বাহিনীর তরফ থেকে একটি যৌথ কন্ট্রোলরুম খোলা হবে কালীপুজোর সময়ে। যাতে দর্শনার্থীরা কোনও সমস্যায় না পড়েন।
বড়মা'র মন্দির কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, এবার কালীপুজো রাত ১২টায় শুরু হবে। রাত আড়াইটের সময়ে উপস্থিত ভক্তরা চাইলে অঞ্জলি দিতে পারবেন। ভোগ ও প্রসাদ দেওয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার রাখা হয়েছে। ১৭ অক্টোবর থেকে তিনটি কাউন্টার, আর ২০ অক্টোবর কালীপুজোর দিনে চারটি কাউন্টার খোলা থাকবে।
পুজো উপলক্ষে বড়মা'র মন্দির ১৮ থেকে ২৫ অক্টোবর বন্ধ থাকবে। ২৬ অক্টোবর থেকে পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পুজো অনুষ্ঠিত হবে। প্রসাদ গ্রহণ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ৩ নভেম্বর থেকে পুনরায় শুরু হবে। তবে বাইরে বড়মার মূর্তি দর্শন করা যাবে। এই মূর্তিই নিরঞ্জন হয় প্রতিবছর।