কথায় আছে, 'বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন।' এই ১৩টি পার্বনের অন্যতম ভাইফোঁটা। ঘরে ঘরে ভাই এবং দাদাদের মঙ্গলকামনায় ফোঁটা দেন দিদি-বোনেরা। প্রতিবছরই দীপাবলির পরে ভাইফোঁটা উৎসব পালন করা হয়। এ বছর ২০ অক্টোবর ভাইফোঁটা। সেক্ষেত্রে ২২ না ২৩ অক্টোবর, কবে পড়েছে ভাইফোঁটার তিথি, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। জেনে নিনি সঠিক তারিখ...
কোনও কোনও পরিবারে প্রথা অনুযায়ী, প্রতিপদের দিনই ভাই-দাদাদের ফোঁটা দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ বাঙালি পরিবারেই অবশ্যই দ্বিতীয়ার দিনই ভাইফোঁটা উৎসব পালন করা হয়। পূর্ববঙ্গের অনেক জায়গায় প্রতিপদে ভাইফোঁটা দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। ফলে এখনও অনেক বাঙাল বাড়িতে প্রতিপদে এবং ঘটি বাড়িতে দ্বিতীয়ার দিন ভাইফোঁটা হয়।
প্রতিপদে ফোঁটা দিলে অবশ্য ভাইফোঁটার ছড়াতেও খানিকটা বদল আসে। সেক্ষেত্রে 'দ্বিতীয়ায় দিয়া ফোঁটা, দ্বিতীয়াতে নিতা' বলার বদলে প্রথম দ্বিতীয়ার জায়গায় প্রতিপদ বলা হয়। সাধারণত ভাইফোঁটায় ভাই বা দাদার কপালে ফোঁটা দেওয়ার সময়ে যে ছড়াটি বলা হয় তা হল, 'ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা। বোনের কনিষ্ঠ আঙুল নড়ে, ভাইয়ের ১০০ বছর আয়ু বাড়ে।'
কেউ হোমের, কেউ বা চন্দন ও কাজলের ফোঁটা দেন ভাই ও দাদার কপালে। মঙ্গল কামনা করে তার শতায়ু প্রার্থনা করেন।
এ বছর ভাইফোঁটা পালিত হবে ২৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার। এবার ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময় দুপুর ১টা ১৩ মিনিট থেকে দুপুর ৩টে ২৮ মিনিট পর্যন্ত। জ্যোতিষীদের একাংশের মধ্যে ওই দিন ব্রহ্ম মুহূর্তে স্নান করে থালায় প্রদীপ, চালের দানা, হলুদ, শুকনো নারকেল, ধান-দুব্য রাখা উচিত। ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁর আরতি করে মিষ্টি খাইয়ে দিতে হয় দিদি-বোনেদের। এতে ভাইয়েরা দীর্ঘায়ু হয় এবং তার জীবন সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে। ফোঁটা নেওয়ার সময়ে ভাইদের মুখ উত্তর পশ্চিম দিকে থাকা উচিত। বোনেরা বসবেন উত্তর পূর্ব বা পূর্ব দিকে মুখ করে।