চোদ্দ শাক-চোদ্দ প্রদীপ, সংখ্যাটা '১৪'ই কেন? ব্যাখ্যা দিলেন পুরাণ গবেষক

কালীপুজোর আগে ভূত চতুর্দশীর দিন ১৪ শাক খাওয়ার রীতি রয়েছে ঘরে ঘরে। এছাড়াও সন্ধ্যায় জ্বালানো হয় ১৪ প্রদীপ। সংখ্যাটি ১৪ কেন, কম বা বেশি হলে ক্ষতি কী? ব্যাখ্যা করলেন পুরাণ গবেষক

Advertisement
চোদ্দ শাক-চোদ্দ প্রদীপ, সংখ্যাটা '১৪'ই কেন? ব্যাখ্যা দিলেন পুরাণ গবেষককী বলছেন পুরাণ গবেষক
হাইলাইটস
  • ভূত চতুর্দশীতে খাওয়া হয় ১৪ শাক
  • সন্ধ্যায় জ্বালা হয় ১৪ প্রদীপ
  • সংখ্যাটি ১৪ই কেন?

২০ অক্টোবর দেশজুড়ে পালিত হবে আলোর উৎসব দীপাবলি। বাংলায় মা কালীর পুজো হবে সর্বত্র। তার আগের দিন পালিত হবে ভূত চতুর্দশী। কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথি অর্থাত্‍ কালীপুজোর আগের দিনটি ভূত চতুর্দশী নামে পরিচিত। অনেক জায়গায় এই দিনকে নরক চতুর্দশী বা প্রেত চতুর্দশীও বলা হয়ে থাকে। ভূত চতুর্দশীতে বাঙালিদের মধ্যে একটি বিশেষ রীতি প্রচলিত রয়েছে। এদিন ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো হয় ও ১৪ রকমের শাক দিয়ে এদিন ভাত খাওয়ার প্রথা রয়েছে। জানেন কেন এমনটা করা হয়? কেন ১৪ সংখ্যা বেছে নেওয়া হয়, তার বেশি বা কম নয়? bangla.aajtak.in-এ এর ব্যাখ্যা দিলেন পুরাণ গবেষক সুচেতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

ভূত চতুর্দশীতে কেন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়?
অশুভ শক্তিকে নিজের বাড়ি থেকে দূরে রাখতেই ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে। সুচেতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যেহেতু দিনটি চতুর্দশী, তাই ১৪টি প্রদীপই জ্বালানো হয়। পুরানে বলে, প্রদীপ জ্বালানো উচিত মোট ৫টি। একটি যমের উদ্দেশে, একটি চিত্রগুপ্তের উদ্দেশে, একটি যমদূতের উদ্দেশে এবং দু'টি যমের দুই ছেলের উদ্দেশে। বাড়ি, ঘরে, উঠোনে, ছাদে, দরজার বাইরে, মাঠে, গোরুর গোয়ালে, চার রাস্তার মোড়ে এমনকী শ্মশানেও প্রদীপ দেওয়ার নিয়ম প্রচলিত রয়েছে। সেক্ষেত্রে ১৪ কেন, তার বেশিই হয়ে যায়। আসলে অনেক প্রদীপ দিতে হবে। কিন্তু সেটাই আমরা নিজেদের সুবিধার্থে করে নিয়েছি, গৃহস্থ্য বাড়িতে অন্তত ১৪টি স্থানে প্রদীপ দিতেই হবে।' বাংলার নিজস্ব লৌকিক ভাবনা থেকেই বিষয়টি ১৪ করে নেওয়া হয়েছে চতুর্দশী তিথির সঙ্গে মিল রাখতে। এমনটাই জানাচ্ছেন পুরাণ গবেষক। 

১৪ শাক খাওয়ার নিয়ম কেন?
এ প্রসঙ্গে সুচেতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ধনতেরাসে শাক খেতে নেই। অথচ আমাদের এখানে কবিবারজরা ধন্বন্তরীর পুজো করতেন। সকলে এটিকে অবাঙালি উৎসব ভাবলেও বাংলায় বৈদ্য এবং কবিবারজরা দেব ডাক্তারের পুজো করতেন। ১৪ শাক খাওয়াটি মিলে গিয়েছে চতুর্দশী থেকেই। বাঙালি কোনও কবিরাজই সম্ভবত এই শাকগুলি খাওয়ার বিধান দিয়ে থাকবেন। কারণ এই ১৪ শাক আসলে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃ, যেগুলির কিছু না কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে। সংখ্যা ১৫ বা ১৮ হলে কিছু এসে যায় না। এই শাকগুলিতে সাধারণত সাধারণ অসুখ সরানোর গুণাগুণ রয়েছে।' 

Advertisement

কী কী রয়েছে ১৪ শাকের তালিকায়?
এই ১৪টি শাক হল - ওল, কেও, বেতো, কালকাসুন্দা, নিম, সরষে, শালিঞ্চা বা শাঞ্চে, জয়ন্তী, গুলঞ্চ, পলতা, ঘেঁটু বা ভাঁট, হিঞ্চে, শুষনি, শেলু। এই ১৪ শাক ঋতু পরিবর্তনের সময় খেলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ে। আসলে হেমন্তকালের এই সময় তখন আস্তে আস্তে শীত পড়ে। এই সময় সর্দি কাশি-সহ নানা ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সেই সব রোগ মোকাবিলার জন্যই বৈদ্য, কবিরাজ ১৪ শাক খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেই প্রচলিত। 
 

 

POST A COMMENT
Advertisement