প্রবাহিত জলে মুদ্রার গুরুত্ব হিন্দুধর্ম অনুসারে প্রবাহিত জলে তামার মুদ্রা ফেলার ঐতিহ্য অত্যন্ত প্রাচীন বলে মনে করা হয়। এটি কেবল একটি ধর্মীয় রীতি নয়, বরং বিশ্বাস, শক্তি এবং গ্রহ শান্তির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি পরিমাপও। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, তামা হল সূর্যের ধাতু এবং জল চাঁদের প্রতীক। যখন একটি তামার মুদ্রা প্রবাহিত জলে নিবেদন করা হয়, তখন বিশ্বাস করা হয় যে এটি সূর্য এবং চাঁদের শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখে, যা মন এবং জীবনে শান্তি আনে।
রাহু-কেতু দোষ থেকে মুক্তি
জ্যোতিষশাস্ত্রে রাহু এবং কেতুকে ছায়া গ্রহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই গ্রহগুলি একজন ব্যক্তির জীবনে হঠাৎ সমস্যা, মানসিক চাপ, বিভ্রান্তি এবং বাধা নিয়ে আসতে পারে। বিশ্বাস করা হয় যে প্রবাহিত জলে তামার মুদ্রা নিক্ষেপ করলে রাহু এবং কেতুর নেতিবাচক শক্তি ধুয়ে যায়। অমাবস্যা, শনিবার বা নাগ পঞ্চমীতে এই প্রতিকারটি করা আরও কার্যকর বলে মনে করা হয়। এটি মনে শান্তি এবং জীবনে স্থিতিশীলতা আনে।
অর্থের ক্ষতি এবং আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্তি
তামা এমন একটি ধাতু হিসেবে বিবেচিত যা ইতিবাচক শক্তি আকর্ষণ করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে যখন এটি কোনও নদীবা প্রবাহিত জলে নিবেদন করা হয়, তখন স্থবির আর্থিক প্রবাহ ধীরে ধীরে পুনরায় সক্রিয় হতে শুরু করে। জ্যোতিষশাস্ত্রীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই প্রতিকার অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, পুনরাবৃত্ত আর্থিক ক্ষতি এবং আর্থিক বাধা কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু, এটি একজন ব্যক্তির কর্মক্ষেত্রে নতুন সুযোগ নিয়ে আসে এবং লক্ষ্মী উপাদানকে শক্তিশালী করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
পিতৃ দোষ নিবারণ
পিতৃদোষ পূর্বপুরুষদের অসন্তুষ্ট আত্মার সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশ্বাস করা হয় যে ভক্তি এবং আন্তরিক হৃদয়ের সঙ্গে প্রবাহিত জলে একটি তামার মুদ্রা নিবেদন করলে এই শক্তি পূর্বপুরুষদের কাছে জলের মাধ্যমে সঞ্চারিত হয়। এটি ধীরে ধীরে পিতৃদোষের কারণে সৃষ্ট সমস্যা, পারিবারিক উত্তেজনা এবং সন্তান-সম্পর্কিত সমস্যাগুলি দূর করে। এই রীতিকে তর্পণের একটি সরল এবং প্রতীকী রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি
প্রবাহিত জল নিজেই নেতিবাচকতা দূরকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি, তামার মুদ্রার সঙ্গে, নিজের চারপাশের শক্তিকে শুদ্ধ করে। এটি মনকে হালকা করতে, চিন্তাভাবনায় স্বচ্ছতা আনতে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। এই অনুশীলন প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এবং জীবনে ভারসাম্য এবং ইতিবাচকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করা হয়।