বছরের নতুন ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকা হাতে পেলেই বাঙালিরা যে দিনগুলিতে সবার আগে চোখ বোলায়, তার মধ্যে দুর্গা পুজো একটি। উৎসবপ্রেমী বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ এই দুর্গা পুজো (Durga Puja 2022)। চার ছেলেমেয়েকে নিয়ে উমা কৈলাশ থেকে মর্তে বাপের বাড়ি এসে দিন পাঁচেক থেকে ফিরে যান শ্বশুর বাড়ি। আর ঘরের মেয়েকে আদরে যত্নে ভরিয়ে, জাকজমকপূর্ণ ভাবে সেই উদযাপন করেন পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, এমনকি গোটা বিশ্বের বাঙালিরা।
দুর্গা পুজো একেবারে দোরগোড়ায়। তিলোত্তমার (Tilottama Kolkata) বিভিন্ন প্রান্তর ইতিমধ্যে সেজে উঠেছে পুজোর আবহে। পুজোর বেশ কিছু মাস আগে থেকেই শুরু হয় যায় প্যান্ডেল তৈরি কাজ। গত কয়েক বছর ধরে থিম পুজোর (Durga Puja Theme) প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছে বেশীরভাগ ক্লাবগুলি। সেরার সেরা লড়াইয়ে জোড়দার টেক্কা চলে ক্লাবে -ক্লাবে। সল্টলেক এজি ব্লক দুর্গাপূজা কমিটির (AG Block Durga Puja Committee) এবছর ৩৬তম বর্ষ। কীভাবে সেজে উঠছে এবারের মণ্ডপ। এবছরের থিমই বা কী? আসুন খুঁটিনাটি জানা যাক...
আরও পড়ুন: এবছর মা দুর্গার গজে আগমন- নৌকায় গমন! শুভ না অশুভ ফল?
এবছর এই পুজো মণ্ডপের থিম 'প্রত্যাবর্তন' (Pratyabartan)। বিগত দু'বছরে পৃথিবী তথা গোটা ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো, মানবসভ্যতার জীবনশৈলীর বিপুল পরিবর্তন ঘটেছে। কর্মহীন হয়েছেন বহু মানুষ। বর্তমানে ফের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। জীবনের মূল স্রোতে ফেরার লড়াই তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। যেমন এজি ব্লক দুর্গাপূজা কমিটিও নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তেমন সেই সব শিল্পীদেরও পাশে দাঁড়াতে চেয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই কলকাতা থেকে পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার একাধিক বাস চালু করছে পরিবহণ দফতর
প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার সংস্কৃতি তার বিভিন্ন চিত্রকলা ও শিল্পকলার মাধ্যমে সব সময় অত্যন্ত সমৃদ্ধ। ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে নারী- পুরুষ পটশিল্পের (Pot Shilpa) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এতে যেমন মিটত তাদের আর্থিক চাহিদা, তেমন সমৃদ্ধ হত বাংলার সংস্কৃতি (Culture Of Bengal)। পটশিল্প পশ্চিমবঙ্গের শিল্প- সংস্কৃতিতে অনেকটা জায়গা জুড়ে অবস্থান করে। তাই সেই সব শিল্পীদের সম্মান ও তাদের কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে, সল্টলেক এজি ব্লক দুর্গাপূজা কমিটির এবছরের ভাবনা 'প্রত্যাবর্তন'। প্রবীর সাহার পরিকল্পনায় সেজে উঠছে এবারের মণ্ডপ। প্রতিমা সজ্জা করছেন শিল্পী বাবলু পালের।
আরও পড়ুন: কলকাতার পুজোয় রসনা বিলাশ হবে না? বিরিয়ানি খেতে ক্লিক করুন...
দুর্গা পুজোর সময়ও এই সমস্ত পটশিল্পীরা বসে লাইভ আঁকবেন। দর্শনার্থীরা সেখান থেকেও অর্থের বিনিময় তাদের শিল্পকর্মের নিদর্শন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন। এর ফলে এই শিল্পীদেরও কিছুটা আয় হবে। এছাড়াও মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রয়াসকে সার্থক করার উদ্দেশ্যে, এবার প্রথমবার এই মণ্ডপে বর্ধমানের কাটোয়ার আটজন মহিলা ঢাকির (Women Dhaki) দলকে আহ্বান করা হয়েছে। এই শিল্পীদের ঢাকের তালে পুজো প্রাঙ্গণ মেতে উঠবে নিঃসন্দেহে।