করোনা মহামারিকে অতিক্রম করে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শহর কলকাতা। স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারি খুলে গিয়েছে। এবার দুর্গাপুজও জাকজমকের সঙ্গে হবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এর মাঝেই বেলুড় মঠ ভক্তদের জন্য প্রকাশ করে দিল এই বছরের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট।
বিগত দুটি বছর করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে বেলুড় মঠের দুর্গোৎসবেও কাটছাঁট করা হয়েছিল। বন্ধ হয়েছিল কুমারী পুজো । এমনকি ভক্তদের মঠের প্রবেশাধিকারও ছিল না। বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিরবিছিন্নভাবেই পালিত হয়ে এসেছে দেবী দুর্গার আরাধনা ও কুমারী পূজার মতো বিশেষ অনুষ্ঠান । তবে কোভিডের জন্য গত দু'বছর ভক্তদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে অনুষ্ঠিত হয়েছিল দুর্গা আরাধনা। কুমারী পূজার অনুষ্ঠানেও ছেদ পড়েছিল বেলুড় মঠে। তবে এবার অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পুজো।
প্রতিবছর নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে বৈদিক প্রথা মেনে দুর্গাপূজা ও কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বেলুড় মঠে। প্রথা অনুসারে জন্মাষ্টমীর পুণ্য তিথিতে বেলুড় মঠে কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে সূচনা হয়েছে শারদোৎসবের । গত শুক্রবার মন্দিরে মঙ্গলারতির পর কাঠামো পুজো করা হয়। সেইসঙ্গে শুরু হয় মণ্ডপ তৈরির কাজ। ফলে বেলুড় মঠে ইতিমধ্যে দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে তা বলাই যায় ।
বেলুড় মঠের রীতি কী
প্রতিবছর দুর্গা প্রতিমার বিসর্জনের পর কাঠামো তুলে এনে রাখা হয়। তারপর জন্মাষ্টমীর দিনই পুজো করা হয় সেই কাঠামো। সেইমতো গত শুক্রবার মন্দিরে মঙ্গলারতির পর কাঠামো পুজো করা হয়। সেইসঙ্গে শুরু হয় মণ্ডপ তৈরির কাজ।
বেলুড় মঠের তরফে এবার প্রকাশ করা হয়েছে দুর্গা পুজোর নির্ঘণ্ট। মঠের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫,১৬,১৭ আশ্বিন অর্থাৎ ২,৩,৪ অক্টোবর অর্থাৎ (রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার) বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে বেলুড় মঠে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট
২০১৯ সালে এবং তার আগেও যেভাবে দুর্গা পুজো হয়েছে, এবারও সেভাবেই দুর্গা পুজো করতে চাইছে মঠ কতৃর্পক্ষ৷ নবপত্রিকার স্নান থেকে আরম্ভ করে কুমারী পুজো, সন্ধি পুজো, নবমীর হোম বাকি সবকিছু আগের মতোই হবে বলে মনস্থ করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বেলুড় মঠের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি ভক্তদের থেকে ইমেল আইডিও চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রণামী পাঠানোর জন্য দাতার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ প্যান কার্ড , আধার কার্ড অথবা ভোটার কার্ডের যে কোনও একটি নম্বর পাঠাতে হবে বলেই জানানো হয়েছে। চেক অথবা ডিমান্ড ড্রাফ্ট (Check or Demand Draft) পাঠানো হলে তাতে অবশ্যই 'রামকৃষ্ণ মঠ, বেলুড় মঠ' কথাটি উল্লেখ রাখতে হবে।
কোভিডকালে একাধিক বিধি নিষেধের বেড়াজাল থাকায় বেলুড় মঠের দুর্গাপুজো থেকে খানিকটা দূরেই থাকতে হয়েছে ভক্তদের । তবে চলতি বছরে তেমন কড়াকড়ি না থাকার কারণে বেলুড় মঠে ভক্তদের ঢল নামতে চলেছে বলেই মনে করছেন মঠ কর্তৃপক্ষ।