আজ ২০২১ সালের প্রথম চন্দ্রগ্রহণের (Chandra Grahan 2021) সাক্ষী হবে বিশ্ববাসী। এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণটি (Lunar Eclipse 2021) ভারতীয় সময় দুপুর ২টো থেকে শুরু হয়েছে। প্রায় সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মেয়াদ। ভারতের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বের রাজ্যগুলিতে দুপুর ৩টে ১৫ থেকে সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত চন্দ্রগ্রহণ (Chandra Grahan Timing) দেখা যাচ্ছে।
গ্রহণ নিয়ে সংস্কারের শেষ নেই। পুরাণেও গ্রহণের তাত্পর্য বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়। বিশ্বের সব ধর্মেই গ্রহণ নিয়ে নানা সংস্কার রয়েছে। বিজ্ঞানমনস্করা এই সংস্কারগুলিকে কুসংস্কার আখ্যা দিলেও, যুগের পর যুগ মানুষ মেনে আসছে।
হিন্দু ধর্মে গ্রহণের তাত্পর্য
হিন্দু পুরাণ মতে, সমুদ্র মন্থনের সময় রাহু নামক এক অসুর লুকিয়ে অমৃতের কয়েক ফোঁটা পান করে ফেলে। সূর্য্য ও চন্দ্রদেব তাকে চিনতে পেরে মোহিনী অবতাররূপী ভগবান বিষ্ণুকে জানায়। তৎক্ষণাৎ,অমৃত গলাধঃকরণের আগেই বিষ্ণু সুদর্শন চক্রের মাধ্যমে রাহুর ধড় থেকে মুন্ড ছিন্ন করে দেন। অমৃত পানের জন্য মুন্ডটি অমরত্ব লাভ করে এবং এভাবেই রাহু গ্রহটির উৎপত্তি হয়, বাকি মুন্ডহীন দেহটির নাম হয় কেতু। সূর্য ও চন্দ্রের প্রতি বিদ্বেষের কারণে বছরের নির্দিষ্ট সময় অন্তর রাহু এদেরকে গ্রাস (গ্রহণ) করে ফেলে। কিন্তু এই গ্রহণের পর সূর্য ও চন্দ্র রাহুর কাটা গ্রীবা থেকে আবার মুক্ত হয়।
ইসলাম ধর্মে গ্রহণের ব্যাখ্যা
ইসলামের প্রবর্তক নবি মহম্মদ বলেছিলেন সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হল আল্লার দুটি নিদর্শন। তাঁর কথায়, আমাকে জান্নাত দেখানো হয় এবং তারই একটি আঙুরের ছড়া নিতে যাচ্ছিলাম। আমি যদি তা নিয়ে আসতাম, তা হলে দুনিয়ার স্থায়িত্বকাল পর্যন্ত তোমরা তা থেকে খেতে পারতে। তিনি বলেছিলেন সবাই যেন চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ দেখামাত্র নামাজ পড়তে যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ পরিষ্কার না হয়, ততক্ষণ নামাজ পড়তে হবে।
খ্রিস্টান ধর্মে গ্রহণের ব্যাখ্যা
খ্রিস্টান ধর্মে গ্রহণকে ঈশ্বরের অলৌকিক কর্ম হিসেবেই বর্ণনা করা আছে। বাইবেলে রয়েছে, ঈশ্বর বলছেন, আমিই সূর্য ও চন্দ্রকে অস্তমিত করব, পৃথিবীকে দিনদুপুরে অন্ধকার করব।
ইহুদি ধর্মে কী বলছে গ্রহণকে?
ইহুদি মতে মানুষের পাপের ফল এই গ্রহণ। ঈশ্বর বারবার মানুষকে সতর্ক করে, সূর্য ও চন্দ্রকে ঢেকে দিয়ে। তাই গ্রহণ মানবজাতির কুলক্ষণ।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে গ্রহণ কী
বৌদ্ধ পালিশাস্ত্র বলছে, রাহু সূর্য ও চন্দ্রকে গ্রাস করলে সূর্য ও চন্দ্র বুদ্ধদেবের স্তোত্র পাঠ করে রাহুর কবল থেকে আবার বেরিয়ে আসে। এরপর বুদ্ধ রাহুর মস্তক সাতটি টুকরো করে দেন।