Jagadhatri Puja 2023: জগদ্ধাত্রী পুজো কবে? প্রস্তুতি তুঙ্গে, রইল শুভ মুহূর্ত

Jagadhatri Puja 2023: দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হলেও কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে জগদ্ধাত্রী পুজোই মূল আকর্ষণ। দুর্গাপুজোর দশমীর দিনের পরেও তুলনামূলকভাবে সেই অর্থে বিষাদের সুর লক্ষ্য করা যায় না নদিয়ায়। তার কারণ দুর্গাপুজোর একমাস পরেই শুরু হয়ে যায় কৃষ্ণনগরের শ্রেষ্ঠ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো।

Advertisement
জগদ্ধাত্রী পুজো কবে? প্রস্তুতি তুঙ্গে, রইল শুভ মুহূর্তদুর্গা-কালীপুজো শেষ হতেই, ফের পুজোর প্রস্তুতি শুরু, জানুন তারিখ ও মুহূর্ত

জগদ্ধাত্রী দেবী দুর্গার অপর রূপ। উপনিষদে এঁর নাম উমা হৈমবতী। বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরাণ গ্রন্থেও এঁর উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষত বঙ্গদেশেই প্রচলিত আবার পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর, গুপ্তিপাড়া ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত।

জগদ্ধাত্রী পূজা বাঙালি হিন্দু সমাজের একটি বিশিষ্ট উৎসব হলেও, দুর্গা বা কালী পূজার তুলনায় এই পূজার প্রচলন অপেক্ষাকৃত আধুনিক কালে ঘটে। অষ্টাদশ শতকে নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় তাঁর রাজধানী কৃষ্ণনগরে এই পূজার প্রচলন করার পর এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। যদিও দেবী জগদ্ধাত্রী যে বাঙালি সমাজে একান্ত অপরিচিত ছিলেন না, তার প্রমাণও পাওয়া যায়। শূলপাণি খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে কালবিবেক গ্রন্থে কার্তিক মাসে জগদ্ধাত্রী পুজার উল্লেখ করেন।

দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব হলেও কৃষ্ণনগরবাসীর কাছে জগদ্ধাত্রী পুজোই মূল আকর্ষণ। দুর্গাপুজোর দশমীর দিনের পরেও তুলনামূলকভাবে সেই অর্থে বিষাদের সুর লক্ষ্য করা যায় না নদিয়ায়। তার কারণ দুর্গাপুজোর একমাস পরেই শুরু হয়ে যায় কৃষ্ণনগরের শ্রেষ্ঠ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজো। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি এবং নদিয়ায় পুজোর উন্মাদনা বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। হুগলির চন্দননগর এবং নদিয়ার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো পালন করা হয় মহা ধুমধামে।

নদিয়ায় হয় একদিনেই পুজো

হুগলির চন্দননগরে চারদিন ধরে পুজো হলেও নদিয়ার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো হয় একদিনই। মূলত নবমীর দিনই কৃষ্ণনগরের বেশিরভাগ জগদ্ধাত্রী পুজো করা হয়ে থাকে। এই বছর জগদ্ধাত্রী পুজো কবে থেকে শুরু হচ্ছে তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক। 

কবে শুরু জগদ্ধাত্রী পুজো

এ বছর কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হবে ২১ নভেম্বর, মঙ্গলবার। বাংলা মাস অনুযায়ী, অগ্রহায়ণ মাসের চার তারিখে। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে, অক্ষয় নবমী ব্রত। তবে নবমীর দিন কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হলেও ওই একই দিনেই দেবীর সপ্তমী এবং অষ্টমীর পুজো সম্পন্ন করা হয় ভক্তি সহকারে। বাঙালি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো মিটে গেলেও কৃষ্ণনগরবাসীর উন্মাদনা কিন্তু চলতে থাকবে গোটা মাস জুড়ে। দশমীর দিন থেকেই জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন গোনা শুরু করে আপামোর জেলাবাসী। 

Advertisement

জগদ্ধাত্রী পুজোর শুভ মুহূর্ত

১৯ নভেম্বর সপ্তমী, ২০ নভেম্বর অষ্টমী, ২১ নভেম্বর নবমী। ১৮ নভেম্বর পুজোর ষষ্ঠী। তবে মূল পুজো রীতি অনুযায়ী নবমীতেই হয়। ২১ নভেম্বর মুহূর্ত শুরু হবে ভোর ৩টে ১১ টা থেকে আর নবমী মুহূর্ত শেষ হবে ২২ নভেম্বর সকাল ৯টা ০৩ টা পর্যন্ত।

দেবীর রূপ 

তন্ত্র ও পুরাণ মতে দেবী জগদ্ধাত্রীর তিনটে চোখ ও চারটে হাত। এই চারটে হাতে দেবীর থাকে শাঁখ, চক্র, তীর ও ধনুক। সিংহের ওপর বসে থাকেন মা জগদ্ধাত্রী, এই সিংহ আবার দাঁড়িয়ে থাকে হাতির ওপর।

জগদ্ধাত্রী পুজোর তাৎপর্য

নদীয়া জেলার সদর কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়। কিংবদন্তী অনুসারে নবাব আলীবর্দী রাজত্বকালে কৃষ্ণচন্দ্র রাজার কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করেন। তিনি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কে মুর্শিদাবাদ এ নিয়ে যান। তারপর মুক্তির পর নদীপথে যখন কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় নিজের রাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেন সেই সময় ঘাটে বিজয়া দশমীর বিসর্জনের বাজনা শুনে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি দুর্গাপুজোর সময় অতিক্রম করে এসেছেন। এবছর তিনি দুর্গাপুজো দেখতে পেলেন না, দুর্গা পুজোর আয়োজন করতে না পেরে অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিলেন। সেই রাতে দুর্গা জগদ্ধাত্রী রূপে রাজা কে পরবর্তী শুক্লা নবমী তিথিতে জগদ্ধাত্রী দুর্গার পুজো করার আদেশ দিয়েছিলেন। সেই মত কৃষ্ণনগরে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন। বলা যায় জগদ্ধাত্রী, দুর্গার আরেক রূপ।

 

POST A COMMENT
Advertisement