
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরটি দেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় হিন্দু ধর্মীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। গর্ভগৃহটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রাচীনতার দীর্ঘ ইতিহাস বজায় রাখে। প্রতি বছর অনুষ্ঠিত রথযাত্রার (Jagannath Rath Yatra 2023) প্রস্তুতি শুরু হয় নতুন রথ তৈরির মাধ্যমে। ১৫ দিন ধরে চলা এই উৎসব হাজার হাজার ভক্তদের আকর্ষণ করে। রথ টানা বা রথের দড়ি স্পর্শ করতে বহু মানুষ পুরী যান প্রতিবছর রথযাত্রায়। কিন্তু আপনি কি জানেন কেন মানুষ শুধু রথের দড়ি স্পর্শ করতে এত ব্যাকুল?
ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে ভগবান জগন্নাথের পবিত্র রথ হল স্বয়ং দেবতার মূর্ত প্রতীক। যার আত্মা রথের উপরে অধিষ্ট দেবতাদের মধ্যে থাকে। বছরে একবার এটিই একমাত্র উপলক্ষ যখন ভগবান জগন্নাথ, ভগবান বলভদ্র এবং দেবী সুভদ্রা ভক্তদের দর্শন দেওয়ার জন্য মন্দির থেকে বেরিয়ে আসেন। পুরী, মাহেশ থেকে কলকাতায় ইসকনের রথ, সর্বত্রই রথের রশি ছুঁয়ে দেখার জন্য মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। যেহেতু অ-হিন্দুদের পুরীর মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি নেই, তাই সকলের জন্য ত্রিত্বের আভাস পাওয়ার একমাত্র উপলক্ষ রথযাত্রা। ভক্তরা মনে করেন ভগবান জগন্নাথের আশীর্বাদ অনুভব করার এটিই একমাত্র উপলক্ষ এবং এইভাবে প্রতিটি দর্শনার্থী রথে লাগানো দড়িটি টানতে ও ছুঁতে চায়।
ভক্তরা মনে করেন যে ভগবান জগন্নাথের দড়ি স্পর্শ করলে তাদের সমস্ত পাপ মুছে যাবে। বিশ্বাস অনুযায়ী, জগন্নাথদেবের রথের দড়ি স্পর্শ করলে পুনর্জন্মের কষ্ট সহ্য করতে হয় না। যেমনটি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করা হয়। ভক্তি এতটাই যে কয়েক দশক আগেও হঠাৎ রথের চাকার নীচে এসে প্রাণ বিসর্জন দিতেন ভক্তরা। তবে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে মন্দির প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতীকীভাবে, এটিও বলা হয় যে রথটি মনের মতো কাজ করে যেখানে ভগবান তাঁর ভক্তদের শেখান কীভাবে একজনের মনের সারথী হতে হয় এবং কীভাবে এটি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
ভগবান জগন্নাথ, ভগবান বলভদ্র এবং দেবী সুভদ্রার রথগুলি নিম এবং অন্যান্য গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। পরে রথযাত্রা শেষ হওয়ার পরে, রথগুলি ভেঙে ফেলা হয় এবং মন্দিরের রান্নাঘরে জ্বালানি কাঠ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।