Jamai Shashthi 2023: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। সেই বারো মাসের দ্বিতীয় মাস জ্যৈষ্ঠের উৎসব জামাইষষ্ঠী। চলতি বছর ৫ জুন, রবিবার বাঙালি কন্যার মা-বাবারা জামাইকে নেমন্তন্ন করে খাওয়াবেন। শ্বশুরবাড়িতে ভূরিভোজ করবেন জামাইবাবাজিরা। সকালে ফলাহার দিয়ে শুরু হয় জামাই-অপ্যায়ন। তার পর মিষ্টি থেকে নানা ব্যঞ্জন। এককালে নিজের হাতে ষোড়শ ব্যাঞ্জন রেঁধে খাওয়াতেন শাশুড়ি মেয়েরা। এখন ছবিটা বদলে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও মূল সুর একই আছে।
আরও পড়ুনঃ দু'হাতে রোজগার করবেন অর্থ, থাকবে খ্যাতিও, শুধু বিয়েতেই যত সমস্যা এই রাশির
আরও পড়ুনঃ ৩৩ বছরে শুকিয়ে গিয়েছে পৃথিবীর অর্ধেকের বেশি হ্রদ, দেখলে আঁতকে উঠবেন
কন্যার সুখী সংসারের কামনায় জামাইষষ্ঠী করেন মা-বাবারা। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠী দেবীর পুজো করা হয়। বিবাহিত মেয়ে এবং জামাইকে আমন্ত্রণ করে খাওয়ানোই বিধি। জামাইয়ের কপালে মা ষষ্ঠীর ফোঁটা এবং হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে মঙ্গল কামনা করেন শাশুড়ি মায়েরা।
জামাইষষ্ঠীর ইতিহাস
জামাইষষ্ঠী মূলত বাংলার লৌকিক আচার। এককালে বাংলার মেয়েরা ঘরকন্যাই ছিলেন। সেই সঙ্গে বহুবিবাহও ছিল সমাজে। এই অবস্থায় জামাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করতেন মেয়ের বাড়ির লোকজন। পাশাপাশি সারাবছর মেয়েকে দেখতে পেতেন না মা-বাবারা। তখন সামাজিক নানা বাধানিষেধ ছিল। ফলে জামাইকে আমন্ত্রণ করলে বছরে অন্তত একটিবার মেয়ের দেখাও মেলে। এই সব কারণে ষষ্ঠীপুজোর লৌকিক প্রথাই হয়ে উঠল বাঙালির জষ্টি মাসের উৎসব। জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে প্রথম প্রহরে ষষ্ঠী পুজো করা হয়। মনে করা হয়, ষষ্ঠী মাতৃত্বের প্রতীক। তাঁর বাহন বিড়াল। মেয়ের দাম্পত্য-সুখ তো বটেই সন্তান লাভের কামনায় মেয়ে জামাইদের আপ্যায়নের প্রথা চলে আসছে বঙ্গভূমিতে।
জামাইষষ্ঠীর ব্রতকথার গল্প অনুযায়ী, এক নিপীড়িত মহিলাকে আশিস করলেন স্বয়ং দেবী ষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল ষষ্ঠীতে অরণ্যষষ্ঠী ব্রতের বিধি জানালেন। ওই দিনে মেয়ে-জামাইকে নেমন্তন্ন করলেন ওই মহিলা। জামাইয়ের কপালে দইয়ের ফোঁটা দিয়ে আম-কাঁঠালের বাটা দিলেন। সেই থেকে জ্যেষ্ঠ মাসের এই দিনটি জামাইষষ্ঠী হিসেবেও উদযাপিত হয়।
এ বছরের জামাইষষ্ঠী কবে?
তারিখ- ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ (বাংলা), ২৫ মে (ইংরেজি)
বার-বৃহস্পতিবার
ষষ্ঠীর সময় নির্ঘণ্ট
ষষ্ঠী শুরু ৩ঃ২৮ মিনিটে (রাত্রি), ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
ষষ্ঠী শেষ ৫ঃ২৬ মিনিটে (বিকাল), ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
পুজোর রীতি
জামাইষষ্ঠীর দিন জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেন শাশুড়ি মা। এরপর মঙ্গল কামনায় তেল-হলুদের ফোঁটা কপালে দিয়ে তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করেন। মাথায় ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করেন মেয়ের মা। সেই সঙ্গে থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয় পাঁচ রকমের গোটা ফল। পরে দুপুরে জামাইয়ের জন্য নানা পদ সাজিয়ে দেওয়া হয়। যা নিজের হাতে রান্না করেন শাশুড়ি মা।