কেন বড়দিন পালন করে না মুসলিমরা?প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টানদের জন্য একটি অত্যন্ত বিশেষ দিন। খ্রিষ্টানরা এই দিনটিকে যীশুর জন্ম হিসাবে উদযাপন করে। তবে যখনই বড়দিনের কথা উল্লেখ করা হয়, তখনই এটাও উল্লেখ করা হয় যে মুসলিমরা যীশুকে (সাঃ) গভীরভাবে সম্মান করে এবং ভালোবাসে, কিন্তু বড়দিন পালন করে না। আসুন জেনে নিই এর পিছনে থাকা প্রকৃত কারণ।
ইসলামে আল্লা প্রেরিত নবীদের মধ্যে ঈসা
ইসলামে ঈসা (সাঃ)-তে আল্লা দ্বারা প্রেরিত নবীদের মধ্যে একজন বলে মনে করা হয়। কোরানে যার উল্লেখ রয়েছে। কোরানে যীশুকে নবী মুহাম্মদের আগে আগত একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে দেখা হয়। উল্লেখ্য, কোরানে নবী মুহাম্মদের চেয়ে যীশুর কথা বেশিবার উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামের ধর্মীয় গ্রন্থে কমপক্ষে ৩৫ বার যিশুর কথা বলা হয়েছে। তাঁকে যীশু বা ঈসা নামে ২৭ বার এবং মসীহ নামে ৮ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
খ্রিষ্ট ও ইসলামে যীশু এক
খ্রিষ্টানদের মতো, মুসলিমরাও বিশ্বাস করে যে যীশুর জন্ম পিতা ছাড়াই শুধু মরিয়ামের গর্ভ থেকে ঈশ্বরের ইচ্ছায় হয়েছে। যেমনটা আল্লা মা-বাবা ছাড়াই আদমের জন্ম করিয়েছেন, সেরকমই যীশুর জন্ম আল্লার নির্দেশেই হয়েছে। ইসলামরা বিশ্বাস করেন যে যীশু অন্যান্য নবী যেমন আদম, নূহ, ইব্রাহিম, মুসা এবং মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মতোই মানুষকে আল্লার প্রতি অনুগত থাকতে শিখিয়েছেন।
যীশুতে বিশ্বাস
খ্রিষ্টানরা বিশ্বাস করে যে যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। আর মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়নি। তাঁকে আল্লা রক্ষা করেছিলেন এবং স্বর্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে যীশু পৃথিবী ধ্বংসের (কেয়ামত) আগে বিশ্বে আসবেন। যদিও খ্রিষ্টানরা মনে করেন যে যীশু আবার ফিরে আসবেন আর তাঁর ফিরে আসাই হবে এই পৃথিবী ধ্বংসের অন্যতম লক্ষণ।
মুসলিমরা ক্রিসমাস কেন পালন করেন না
ইসলাম এটা বিশ্বাস করে যে যে সব নবীদের আল্লা পাঠিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে বিশ্বাস করুন। এই কারণে মুসলিমরা যীশুর প্রতি গভীর প্রেম রাখেন ও সম্মান করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও মুসলিমরা বড়দিন পালন করেন না। খ্রিষ্টধর্মে ত্রিমূর্তির দাবি করা হয়ে থাকে, কিন্তু মুসলিমরা একশ্বেরবাদীতে বিশ্বাসী। যীশু একজন নবী ছিলেন। কোরানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ, যিশুকে ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া ইসলামী শিক্ষার পরিপন্থী। কোরানে আয়াত-আল-ইখলাসে বলা হয়েছে, বল, উনি আল্লা, যিনি এক এবং অদ্বিতীয়। আল্লাহ, চিরন্তন। তিনি জন্মগ্রহণ করেননি, তাঁকে সৃষ্টি করা হয়নি। তাঁর মতো আর কেউ নেই। অথচ বেশিরভাগ খ্রিস্টান যীশুকে ঈশ্বর বলে মনে করেন।
বড়দিন ইসলামের অংশ নয়
মুসলিমরা নবীদের শিক্ষা অনুসরণ করে, যার মধ্যে রয়েছে সুন্নাহ এবং কোরান, যেখানে কোনও জন্মদিন উদযাপনের কথা উল্লেখ নেই। তবে মুসলিমরা যীশুকে লম্মান করে অন্যভাবে। সন্তানদের নামকরণ করা সহ অন্য অনেখ উপায়ে। মুসলিমদের জন্য নির্ধারিত দুটি ইদ (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) ছাড়া অন্য কোনও ধর্মীয় উৎসব পালন করা নিষিদ্ধ।