চলছে কৃষ্ণপক্ষ। আর মাত্র কয়েকদিন পরই শক্তির আরাধনায় মাতবে বাংলা। প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপান্বিতা কালীপুজো খুবই ধুমধাম করে পালন করা হয়। এই বছর কালীপুজো পালন হবে ২০ অক্টোবর, সোমবার। কেউ শ্মশান কালী, কেউ ডাকাত কালী আবার কেউ শ্যামা মা হিসেবেই পরিচিত। আদ্যাপীঠ হোক কিংবা ত্রিপুরেশ্বরী সকলে পুজো পান কালী হিসেবেই। অনেকেই কিন্তু শ্মশান কালী ও দক্ষিণাকালীর মধ্যে পার্থক্য জানেন না। এই বিষয়ে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্তারিত জানালেন বিশিষ্ট পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী।
কী বলছেন নৃসিংহপ্রসাদ
নৃসিংপ্রসাদ ভাদুডী তাঁর ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও করে শ্মশান কালী ও দক্ষিণাকালীর মধ্যে প্রধান পার্থক্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণাকালীর ডান পা-টা শিবের ওপরে থাকবে। খর্গটা থাকবে বাম হাতে। শ্মশান কালীর ক্ষেত্রে তাঁর বাম পা-টা শিবের হৃদয়ের কাছে যায়। এটাই হল দুই মা কালীর ক্ষেত্রে প্রধান পার্থক্য। তিনি আরও বলেন, শ্মশান কালীর ক্ষেত্রে তাঁর ডান বাহুতে খর্গ, এখানে তিনি বামা। তার মানে অন্য যা যা সঠিক চেহারাগুলির বৈশিষ্ঠ্য এক রমণীর থাকে, তার সঙ্গে ইনি বামা। শ্মশান কালীর রূপ কিন্তু বলিষ্ঠ রুপ, এক্ষেত্রে দাঁত দেখানো হবে ও জিহ্বা দেখানো হবে। যদিও কেউ কেউ অবশ্য বলেন শ্মশান কালীতে নাকি জিহ্বা দেখানো হয় না।
দক্ষিণাকালী ও শ্মশানকালী
দক্ষিণাকালী বাংলায় সবচেয়ে বেশি আরাধনা হয়। কালীর এই রূপ জায়গা ভেদে শ্যামাকালী নামেও পরিচিত। সারা শরীর নীল বর্ণের, তাঁর মূর্তি ক্রুদ্ধ, ত্রিনয়নী, মুক্তকেশ, চারটি হাত এবং গলায় মুণ্ডমালা। বাম দিকের দুই হাতে নরমুণ্ড এবং খড়গ। অপরদিকে, মূলত প্রাচীন কালে ডাকাতেরা দেবীর এই রূপের আরাধনা করত। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'দেবী চৌধুরানী' উপন্যাসে এই দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। গৃহস্থের বাড়িতে কালীর এই রূপের পুজো হয় না একেবারেই। মূলত শ্মশানেই তাঁর আরাধনা।
কালী পুজোর মাহাত্ম্য বিপুল। কড়া নিয়ম বিধির মধ্যে রাত জেগে আরাধনা হয় কালী ঠাকুরের। যজ্ঞ-বলি অনেক কিছুরই আয়োজন থাকে এই পুজোয়। বারোয়ারি পুজো, গৃহস্থের বাড়ির উদযাপন এবং বিভিন্ন মন্দিরে আরাধনা করা হয় কালীর বিভিন্ন রূপকে।