
Kalpataru Utsav 2024: প্রতি বছরের মতো এ বছরেও কাশীপুর উদ্যানবাটীতে পালিত হচ্ছে কল্পতরু উৎসব। রামকৃষ্ণ মঠের সন্ন্যাসী, রামকৃষ্ণ মিশনের সব শাখায় এই উৎসব পালন করা হয়। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতেও শ্রীরামকৃষ্ণ অনুগামীরা এই দিনে পুজো-উৎসবে মেতে ওঠেন।
কল্পতরুর অর্থ কী?
১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি উত্তর কলকাতার কাশীপুরের উদ্যানবাটীতে কল্পতরু হয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ। কল্পতরু কী? পুরাণের ব্যাখ্যায় কল্পতরু হল এক বৃক্ষ যার কাছে যা চাওয়া হবে, তাই পাওয়া যাবে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, কল্পতরু দিবসে শ্রীরামকৃষ্ণর কাছে যা চাওয়া হবে তিনি তাঁর ভক্তদের তা-ই দেবেন। তাই বলে কী অর্থ-যশ-খ্যাতিও চেয়ে পাওয়া যাবে?
শ্রীরামকৃষ্ণের কল্পতরু হওয়ার কাহিনী
এর পেছনে একটি বিশেষ কাহিনী রয়েছে। সেই সময় শ্রীরামকৃষ্ণের গলায় দূরারোগ্য ক্যানসারে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই তাঁকে তখন কাশীপুর উদ্যানবাটীতে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল। সেই সময় ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি তাঁর গৃহী শিষ্যদের নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ। ওই দিন শ্রীরামকৃষ্ণের কোনও সন্ন্যাসী অনুগামী তাঁর কাছে ছিলেন না, ছিলেন শুধু তাঁর গৃহী শিষ্যরাই।
কীভাবে কল্পতরু দিবসের নামকরণ হল?
উদ্যানবাটীর একটি গাছতলায় পৌঁছে শ্রীরামকৃষ্ণ গিরিশ ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমার কী মনে হয়, আমি কে?’ জবাবে গিরিশ ঘোষ বলেন, ‘আমার বিশ্বাস আপনি মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার।’ এর উত্তরে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন, ‘তোমাদের চৈতন্য হোক।’ তারপর শ্রীরামকৃষ্ণ সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। শোনা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণের এই স্পর্শে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যের মধ্যে সে সময় অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়। ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রীরামকৃষ্ণের শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত এই দিনটির নাম দেন কল্পতরু দিবস, যা তার পর থেকে কল্পতরু উৎসব রূপে পালিত হয়ে আসছে।