কালীঘাট মন্দিরের একেবারে জগৎজোড়া খ্য়াতি। কলকাতায় আসবেন আর কালীঘাট দেখবেন না এটা যেন অনেকের কাছেই অকল্পনীয়। কলকাতার বুকে মায়ের অন্যতম শক্তিপীঠ হলো কালীঘাট। সতী পীঠের ৫১ পীঠের অন্যতম এই তীর্থক্ষেত্র। প্রতিদিনই উপচে পড়া ভিড় থাকে এই মন্দিরে।
এই মন্দিরে নিত্য কালীপুজো হয়। প্রতিদিন বিভিন্ন পালাদার ভোগের দায়িত্বে থাকেন, তিনিই ভোগের সমস্ত খরচ বহন করেন। বর্তমানে কালীঘাট মন্দিরে রয়েছে প্রায় ৬০০ সেবায়েত। সেই কালীঘাট মন্দির একেবারে নতুন সাজে এসেছে ভক্তদের মাঝে। কালীঘাট মন্দিরের উপর সোনার চূড়া বসেছে। মায়ের মন্দিরের এই রূপ দেখে আপ্লুত ভক্তরা। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী এক মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাচ্ছে কালীঘাট স্কাইওয়াক। নতুন বছরে একেবারে নতুন রূপে দর্শন করতে পারবেন দেবীকে। তবে ঠিক কখন গেলে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে পারবেন সহজেই, চলুন জেনে নেওয়া যাক টাইমিং।
কালীঘাট মন্দির প্রতিদিন খোলা থাকে সকাল ৫ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। মন্দিরে সকালে আরতি হয় সকাল ৫.৩০ মিনিটে। বিকেলে আরতির সময় সন্ধে সাতটা। দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয় বেলা ১২টায়। বাইরে থেকে প্রসাদ কিনে মাকে নিবেদন করা যায়। শনি ও মঙ্গলবার অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ভিড় হয় মন্দিরে। মন্দিরে ঢুকতে কোনও অর্থের প্রয়োজন হয় না। কালীঘাটের ঠিক পিছন দিকে নকুলেশ্বর মহাদেবের মন্দির রয়েছে। কালীঘাটে গেলে সেখানেও ঘুরে আসতে পারেন।
শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাকালী দেবীর তামসী রূপ। অনেকের মতে, কালীঘাটের দেবী মায়ের ভয়ংকর রূপের শ্রেষ্ঠ নিদর্শনগুলির অন্যতম। এই কালীমন্দির বাংলার স্থাপত্যের এক অন্যতম নিদর্শন। গ্রামের মাটির বাড়ি ও কুঁড়েঘরের সংমিশ্রণ ধরা পড়ে এই কালীমন্দিরের ছাদে। যে স্থাপত্যে মন্দিরের ছাদ তৈরি, তাকে গ্রামবাংলায় ‘চালাঘর’ বলা হয়। যে কারণে স্থাপত্য ভাষার কালীঘাট মন্দিরের নাম ‘চালা টেম্পল’।
নিত্যদিন কালীঘাটে মায়ের ভোগে থাকে পোলাও-ঘি ভাত, প্রথম বলির পাঁঠার মাংস। সঙ্গে শুক্তো, আলু-বেগুন-পটল-উচ্ছে-কাঁচকলা দিয়ে পাঁচ রকমের ভাজা, পোনা-চিংড়ি মাছ, খেজুর-কাজু-কিশমিশ দিয়ে চাটনি, পায়েস, জল এবং শেষ পাতে মুখ শুদ্ধি হিসেবে থাকে সাজা পান। এছাড়াও ময়দার লুচি, খিচুড়ি-তরকারি, রাবড়ি-রসগোল্লা।