আগামী ১১ মার্চ দেশজুড়ে পালিত হবে শিবরাত্রি ( Maha Shivratri)। হিন্দু ধর্মে মহা শিবরাত্রির মাহাত্ম্য অনেক। পুণ্যার্থীরা শিবের জন্যে ব্রত পালন করেন। দিনভর চলে নানা ধর্মীয় রীতি পালন। এমনকি অনেক জায়গায় শিবরাত্রি উপলক্ষে নানা মেলাও হয়। মন্দিরে তো বটেই, বাড়িতে বাড়িতেও পুজো হয় মহাদেবের। 'হড় হড় মহাদেব' (Har Har Mahadev) উচ্চারণ করে তারকেশ্বর দেশের ভিন্ন প্রান্তে বাবার মাথায় জল ঢালতে ভক্তদের সমাগম হয়। প্রায় এক মাস আগে থেকে চলে প্রস্তুতি। তবে জানেন কেন কেন পালন হয় মহাশিবরাত্রি? রইল এই বিশেষ দিনের পৌরাণিক গুরুত্ব।
মাঘ মাসে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে শিবরাত্রি পালন করা হয়। 'শিবরাত্রি' কথাটা দুটি শব্দ থেকে এসেছে। 'শিব' ও 'রাত্রি', যার অর্থ শিবের জন্য রাত্রী। শিবরাত্রির সঙ্গে প্রচলিত আছে নানা কথা।
* পুরাণ মতে দেবী পার্বতীর সঙ্গে এদিন দেবাদিদেব মহাদেবের মিলন হয়। আবার শোনা যায় এদিন থেকেই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছিলেন।
* আবার শিবরাত্রির ব্রতকথা অনুযায়ী, এক শিকারি এদিন, বানের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে কোনও শিকার না পেয়ে ক্লান্ত হয়ে একটি বেলগাছের ডালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। খেয়াল না করেই তিনি বেলপাতা ছিঁড়ে নীচে ফেলতে থাকেন। আর সেই গাছের নীচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ। বেলপাতা পেয়ে তুষ্ট হন মহাদেব এবং তাঁকে আশীর্বাদ করেন।
* আরও একটি প্রচলিত কথা লোকমুখে শোনা যায়। এদিনই দেবতা ও রাক্ষসদের সমুদ্র মন্থনের ফলে ভ্যাঙ্ক কালকূট বিষ উঠে আসে। সেই সময়ে বিষের প্রভাব পরে ধরণীতেও। সেই জ্বালায় ছটফট করতে শুরু করে বসুন্ধরার সকলে। সেই সময়ে মহাদেব নীজেই সেই বিষ পান করেন এবং তাঁর কণ্ঠ নীল হয়ে যায়। সেই জন্যেই তাঁর আরেক নাম 'নীলকণ্ঠ'। সেই জন্যে এই তিথিতে শিবরাত্রি পালিত হয়।
আরও পড়ুন: আশ্রমকে কেন্দ্র করেই পূণ্যস্নান! জানুন কপিল মুনির কাহিনী
এই বছরের শিবরাত্রির দিনক্ষণ
সাধারণত ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে শিবরাত্রির তিথি পড়ে। এই বছর ১১ মার্চ, বৃহস্পতিবার পড়েছে মহাশিবরাত্রির তিথি। ১১ মার্চ দুপুর ২.৪২ থেকে ১২ মার্চ দুপুর ২.৪১ মিনিট পর্যন্ত থাকবে শিবরাত্রির তিথি।
মহাশিবরাত্রিতে মূলত স্বামীর মঙ্গল কামনায় উপবাস করে থাকেন মহিলারা। তবে শুধু বিবাহিত মহিলা নয়, অবিবাহিত মহিলা এবং অনেক পুরুষও এই ব্রত পালন করেন নিষ্ঠা করে। প্রচলিত কথা অনুয়ায়ী বলা হয়, অবিবাহিত মেয়েরা এই ব্রত পালন করেন, যাতে তাঁরা শিবের মতো বর পান, যাকে তাঁরা আদর্শ পুরুষ হিসাবে মনে করেন।