নৈহাটির বড়মা'ধর্ম হোক যার যার, বড়মা সবার'। বড়মার খ্যাতি বর্তমানে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। চারিদিকে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে জাগ্রত বড়মা (Boroma)। এক অমোঘ টানে সারা বছর বড়মার কাছে ছুটে যান হাজার হাজার মানুষ। বিশেষত কালীপুজোর সময় রাজ্যের বাইরের ভক্তরাও মানত করেন, পুজো দেন, ভিড় জমান এক ঝলক শুধু বড়মাকে দেখার জন্য। অনেকে আবার মনোবাসনা পূরণ করার জন্য গঙ্গাস্নান করে প্যান্ডেলে দণ্ডি কাটেন।
কালীপুজো শেষ হতেই, ২৯ অক্টোবর বড়মার মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বিশেষ পুজোর আয়োজন হয়। সেসময়ও মন্দিরে ভিড় হয় প্রতি বছর। তবে অনেকেই ইচ্ছে থাকলেও সেসময় পুজো দিতে পারেননি। সেসব ভক্তরা এমাসেই মনের ইচ্ছে মতো বড়মার পুজো দিতে পারবেন। জেনে নিন, কবে- কখন, কীভাবে পুজো দেবেন।
আরও পড়ুন: ৫০০ বছর পর শনি, বুধ একসঙ্গে মার্গী হবে! ৩ রাশির জাতকদের জীবনে বড় বদল
আগামী বুধবার (১৯/১১/২৫) আছে বড়মার অমাবস্যা পুজো। অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও পুজো দেওয়ার সুযোগ থাকছে। নাম ও গোত্র লিখে মঙ্গলবার (১৮/১১/২৫) রাত ১০টার মধ্যে অনলাইনে বুক করতে হবে। এছাড়া ওইদিন মন্দিরে পুজো নেওয়া হবে দুপুর ৩টে পর্যন্ত। এছাড়াও জয় বড়মা অ্যাপসের মাধ্যমে পুজো পাঠানো সম্ভব।
অমাবস্যা কবে?
১৯ নভেম্বর ২০২৫ (২ অগ্রহায়ণ)
অমাবস্যা শুরু কখন?
১৯ নভেম্বর (২ অগ্রহায়ণ), বুধবার সকাল ৮:৫৫ মিনিটে।
অমাবস্যা শেষ কখন?
২০ নভেম্বর (৩ অগ্রহায়ণ), বৃহস্পতিবার সকাল ১১:০১ মিনিট পর্যন্ত।
বড়মার মন্দির স্থাপন
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে, ভবেশ চক্রবর্তী ও তাঁর চার বন্ধু মিলে নবদ্বীপে ভাঙা রাস দেখতে যান। সেখানে গিয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে বিস্মিত হয়ে, নৈহাটিতে একটি রক্ষাকালী মূর্তিকে বিশালাকার মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা করেন। কথিত আছে, এই পুজো ভবেশ চক্রবর্তী স্থাপন করেছিলেন, তাই এই দেবীকে ভবেশ কালীও বলা হয়। প্রথমে সকলে ভবেশ কালীই বলে ডাকতেন, তারপর বিশালাকার মূর্তিকে বড়মা বলে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন: পকেটে টান পড়বে, আয়ের নতুন পথ খুলবে এদের! নতুন সপ্তাহে কার কপাল কেমন?
বড়মা কেন নাম?
বড়মা কেন নাম? আসলে এই কালী মূর্তির আকারে ও উচ্চতায় বিরাট, প্রায় ২২ ফুট উচ্চতা। প্রায় ধরুন ১৪ হাত উঁচু একটি কালীমূর্তি। এই কারণে এই দেবীকে বড়মা বলে ডাকেন সকলে। তবে এই পুজো আগে এতটা জনপ্রিয় ছিল না। রাস্তার ধারে রক্ষাকালী মূর্তিতেই পুজো করতেন একদল যুবক। নৈহাটিতে বড়মায়ের একটি স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পুজো হলেও, আগে যে জায়গায় রক্ষাকালী পুজো করা হত কালীপুজোয়, সেখানেই প্রতি বছর মৃন্ময়ী রূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সেখানেই পুজো করা হয়।
আরও পড়ুন: নক্ষত্র পাল্টাবে রাহু, বছর শেষ হওয়ার আগেই ৩ রাশির 'গোল্ডেন টাইম' শুরু
এই পুজো সার্বজনীন হলেও, কারও কাছ থেকে কখনও চাঁদা বা দক্ষিণা নেওয়া হয় না। দেবীর গায়ের গয়না থেকে ভোগ, পুজোর সামগ্রী,পুজোর সমস্ত খরচ করে থাকেন সাধারণ ভক্তরা। নৈহাটির বড়মায়ের গায়ে গয়না দেখলে অবাক হতে হয়। কারণ গোটা মূর্তিই সোনা- রুপোর বিভিন্ন আকারের গয়নায় মোড়া থাকে। শোনা যায়, বড়মা সোনা - রুপো ছাড়া আর কোনও ধাতুর অলঙ্কার পরেন না। তাই ভক্তরাই মনোবাসনা পূরণ করার জন্য বিভিন্ন সময় সোনা ও রুপোর গয়না মানত হিসেবে দিয়ে থাকেন। কেজি- কেজি সোনা ও রুপোর অলঙ্কারে সজ্জিতা হন কৃষ্ণবর্ণ কালী প্রতিমা।