scorecardresearch
 

Pitri Paksha: গয়াতেই কেন পিণ্ডদান এবং শ্রাদ্ধ করতে যান মানুষ? জেনে নিন কারণ

হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, পিণ্ড দান মোক্ষ লাভের একটি সহজ এবং সরল উপায়। যদিও পিণ্ড দান দেশের অনেক জায়গায় করা হয়, কিন্তু বিহারের ফাল্গু উপকূলে অবস্থিত গয়াতে পিণ্ড দানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কথিত আছে যে রাজা দশরথের আত্মার শান্তির জন্য ভগবান রাম এবং তাঁর স্ত্রী সীতা গয়ায় পিণ্ড দান করেছিলেন।

Advertisement
প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
হাইলাইটস
  • আগে গয়াতে বিভিন্ন নামের ৩৬০টি বেদী ছিল
  • যেখানে পিণ্ড দানের অনুষ্ঠান করা হত।
  • এর মধ্যে এখন মাত্র ৪৮ টি অবশিষ্ট আছে
  • এই বেদীতে পূর্বপুরুষদের তর্পণ ও পিণ্ড দান করেন বহু মানুষ

পিতৃপক্ষে (Pitri Paksha) পূর্বপুরুষদের আত্মার জন্য পিণ্ড দান এবং শ্রাদ্ধ করার ঐতিহ্য রয়েছে। বেশিরভাগ মানুষের ইচ্ছে থাকে যে তারা গয়ায় গিয়ে পিণ্ড দান করে পূর্বপুরুষদের আত্মার মোক্ষলাভের পথ প্রশস্ত করবেন। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, পিণ্ড দান মোক্ষ লাভের একটি সহজ এবং সরল উপায়। যদিও পিণ্ড দান দেশের অনেক জায়গায় করা হয়, কিন্তু বিহারের ফাল্গু উপকূলে অবস্থিত গয়াতে পিণ্ড দানের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কথিত আছে যে রাজা দশরথের আত্মার শান্তির জন্য ভগবান রাম এবং তাঁর স্ত্রী সীতা গয়ায় পিণ্ড দান করেছিলেন। এর আগে গয়াতে বিভিন্ন নামের ৩৬০টি বেদী ছিল, যেখানে পিণ্ড দানের অনুষ্ঠান করা হত। এর মধ্যে এখন মাত্র ৪৮ টি অবশিষ্ট আছে। এই বেদীতে পূর্বপুরুষদের তর্পণ ও পিণ্ড দান করেন বহু মানুষ। প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ পিণ্ড দানের জন্য গয়াতে আসেন।

 

গয়ায় শ্রাদ্ধ নিয়ে পৌরাণিক বিশ্বাস

পৌরাণিক বিশ্বাস এবং কিংবদন্তি অনুসারে, ভস্মাসুরের বংশে গায়াসুর নামে এক দৈত্য কঠোর তপস্যা করেছিলেন এবং ব্রহ্মার কাছে বর চেয়েছিলেন যে তার দেহ দেবতাদের মতো পবিত্র হবে এবং মানুষ তাঁকে দেখামাত্র পাপ থেকে মুক্তি পাবে। এই বর পাওয়ার পর, স্বর্গের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং সবকিছু প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে ঘটতে থাকে। মানুষ ভয় ছাড়াই পাপ করতে শুরু করে এবং গায়সুরের কৃপাদৃষ্টিতে পাপ থেকে মুক্তি পেতে শুরু করে। এটি এড়ানোর জন্য, দেবতারা যজ্ঞের জন্য একটি পবিত্র স্থান গয়াসুরকে দান করতে বলেন। দেবতাদের যজ্ঞের জন্য গায়সুর তার দেহ দান করেছিলেন। গায়সুর শুয়ে পড়লে তার দেহ পাঁচ ক্রোসে ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে এই স্থানটি গয়া নামে পরিচিত। এই কারণেই আজও মানুষ গয়াতে তাঁদের পূর্বপুরুষদের মোক্ষলাভ করানোর জন্য পিণ্ড দানের জন্য আসেন ।

Advertisement

পণ্ডিতদের মতে, ফল্গু নদীর তীরে পিণ্ড দান না করলে পিণ্ড দান অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পিণ্ড দানের প্রক্রিয়া পুনপুন নদীর তীর থেকে শুরু হয়। একটি সাধারণ বিশ্বাস আছে যে একটি পরিবার থেকে শুধুমাত্র একজনই গয়ায় আসেন। গয়া করা মানে গায় পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধ, পিন্ড দান করা। গরুড় পুরাণে লেখা রয়েছে যে, গয়া যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় হাঁটার প্রত্যেকটি পদক্ষেপ পূর্বপুরুষদের স্বর্গে আরোহণের জন্য সিড়িতে পরিণত হয়।

 

গয়াতে শ্রাদ্ধের গুরুত্ব

গয়াকে বিষ্ণুর শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একে বলা হয় পরিত্রাণের দেশ। এটি বিষ্ণু পুরাণ এবং বায়ু পুরাণেও আলোচনা করা হয়েছে। বিষ্ণু পুরাণ অনুসারে, গয়ায় পিণ্ড দান করলে পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করেন এবং তাঁরা স্বর্গে যান। এটা বিশ্বাস করা হয় যে বিষ্ণু স্বয়ং এখানে পিতৃ দেবতার রূপে উপস্থিত ছিলেন, তাই এটিকে 'পিতৃ তীর্থ'ও বলা হয়। গয়া 'মোক্ষস্থলী' নামেও পরিচিত। এখানে প্রতিবছর ১৭ দিনের জন্য একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয় যাকে পিতৃপক্ষ মেলা বলা হয়। পিতৃপক্ষে ফাল্গু নদীর তীরে বিষ্ণুপদ মন্দিরের কাছে এবং অক্ষয়বটের কাছে পিণ্ডদান করলে পূর্বপুরুষরা মোক্ষ লাভ করেন।

 

Advertisement