শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপুজোর কাউন্ট ডাউন। আর মাস খানেক পরেই বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। মহালয়ার দিন থেকে সূচনা হয় মাতৃপক্ষের। তার আগে ১৫ দিন চলে পিতৃপক্ষ। অর্থাৎ পিতৃপক্ষের অবসান হয়েই সূচনা হয় মাতৃপক্ষের। পিতৃপক্ষের শেষে পিতৃ তর্পণ ঘিরে হিন্দু ধর্মে নানা রীতিনীতি রয়েছে। সনাতন ধর্মে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানানোর রীতি প্রচলিত আছে। পিতৃপুরুষরা প্রসন্ন হলে সৌভাগ্য লাভ করা যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
পিতৃদোষ থেকে মুক্তি
বিশ্বাস করা হয় যে পিতৃপক্ষে শ্রাদ্ধ শান্তি ও তর্পণ করলে পূর্ব পুরুষেরা খুশি হন এবং আশীর্বাদ করেন। তাঁদের কৃপায় জীবনের অনেক বাধা দূর হয়। জীবনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে। জ্যোতিষীদের মতে, শ্রাদ্ধ না করলে আত্মা মুক্তি পায় না। পিতৃপক্ষের নিয়মকানুন পালন করলে দাতব্য করলে রাশিচক্র থেকে পিতৃদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পিতৃ পক্ষের শ্রাদ্ধ ও তর্পণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
পিতৃপক্ষের শুরু
শাস্ত্র মতে কোনও মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধ শান্তি করলে, তাঁর আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং সেই আত্মা মুক্তি লাভে সক্ষম হয়। হিন্দু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, পিতৃ দোষ সবেচেয়ে জটিল রাশিফের ত্রুটি বলে বিবেচিত। ব্রহ্ম বৈবত পুরাণ মতে, একজন ব্যক্তির, তাঁর পিতৃ পুরুষদের সন্তুষ্ট করা উচিত, দেবতাদের আগে। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী ভাদ্র পূর্ণিমা তিথিতে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়ে মহালয়ার দিন সমাপ্তি হয়।
অন্যদিকে উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্র মাসের পরিবর্তে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়।
পিতৃলোক
পুরাণ অনুযায়ী, কোনও জীবিত ব্যক্তির তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বসবাস করেন। এই লোক আসলে, স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত। মৃত্যু দেবতা যমরাজই পিতৃলোকের শাসক। সদ্য মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান যমরাজ। আবার পরবর্তী প্রজন্মের কারও মৃত্যু হলে, আগের প্রজন্মের একজনের স্বর্গে গমন হয় এই পিতৃলোক থেকে। স্বর্গে গমনের পর সেই আত্মা, পরমাত্মায় লীন হন।
পিতৃপক্ষ ২০২৫
আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদে পিতৃপক্ষ শুরু হয় এবং অমাবস্যা তিথি অবধি থাকে। এই বছর পিতৃপক্ষ শুরু হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এবং ২১ সেপ্টেম্বর, মহালয়ার দিন শেষ হয়ে মাতৃপক্ষ শুরু হবে।