
বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্য কিংবা পারিবারিক চাপের থেকেও জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আধুনিক পরিবেশে মানুষ নিজের আবেগকে দমন না করে বরং খোলামেলা ভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করে। কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আগে বর্তমান যুগে স্বাধীন চিন্তাধারাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। পরিবারগুলিও ধীরে ধীরে এই ভাবধারার সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছে। কারণ শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক মা-বাবাই তাদের সন্তানের সুখ চায়। তবে এটাও সত্য, প্রেম করে বিয়ে করলেও বিচ্ছেদের ঘটনা আখছাড় ঘটছে। অনেকেই মনে করেন, সম্পর্কগুলি আজকাল কেবলমাত্র লোক দেখানোর জন্যই টিকিয়ে রাখা হয়। বৃন্দাবনের প্রেমানন্দ মহারাজ এই বিষয়ে তাঁর মতামত প্রকাশ করেছেন।
বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা বাড়ছে
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, 'প্রেম করে বিয়ে করো এবং তারপর বিবাহবিচ্ছেদ চাও। প্রেমের বিয়ে মানে তো ভালোবাসা। যদি কেউ তোমাকে ভালোবাসার সঙ্গে গ্রহণ করে তাহলে সে সারাজীবন তোমার সঙ্গে থাকবে এবং অন্য কারও দিকে তাকাবে না। এটাই হল প্রেমের বিয়ের অর্থ। এখন একজন পুরুষ এবং নারী সম্পর্কে স্বাধীন চিন্তাধারা রাখেন। নিজেদের মতো জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা থাকে তাঁদের। সম্পর্কেও ইচ্ছেমতো আচরণ করেন তাঁরা। বিয়ের পরেও আজকালকার ছেলে-মেয়েরা স্বাধীনতা চায়। যেখানে উভয়ের চিন্তাভাবনা মেলে না। তারপর কিছুদিন অতিবাহিত হলেই তাঁরা আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।'
সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব
প্রেমানন্দ মহারাজ আরও বলেন, 'সন্তানদের বাবা-মা এবং অন্য সকলেই বিশ্বাস করতে শুরু করেন, যদি দম্পতি তাদের নিজস্ব ইচ্ছেয় প্রেমের বিয়েতে আবদ্ধ হয় তাহলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। কারণ এই সিদ্ধান্তটি পছন্দ এবং প্রজ্ঞার সঙ্গে নেওয়া হয়। তাঁদের ভবিষ্যৎ এর উপর নির্ভর করে। তবে যখন অনুভূতি দোদুল্যমান তখন মন এদিক-সেদিক চলে যায়। এই কারণেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে।'
বিচ্ছেদের পর অনেকেই অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায় অথবা থাকতে শুরু করেন। তারপর আবার দেখা যায়, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে পুরনো সঙ্গীর কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে জন্মায়। তখন হৃদয় বলে, আগের সুখ কোথাও হারিয়ে গিয়েছে। এমনটাই মনে করেন প্রেমানন্দ মহারাজ। তাঁর মতে, 'এতে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। তাই ধর্মের পথ অনুসরণ করাই সর্বোত্তম। প্রেম করে বিয়ের এই প্রক্রিয়া ঠিক নয়।'