scorecardresearch
 

Saraswati Puja Ritual: পুরোহিত ছাড়াই সরস্বতী পুজো করছেন? এই জিনিসগুলি লাগবেই, থাকল নিয়মাবলী

এবছর ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো। কিন্তু জানেন কি দেবী সরস্বতীর পূজায় কী কী উপকরণ বা দ্রব্য প্রয়োজন? হাতেখড়ির জন্যই বা কী কী প্রয়োজন ?

Advertisement
মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী বা সরস্বতী পুজো হয় মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী বা সরস্বতী পুজো হয়

মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে বসন্ত পঞ্চমী বা সরস্বতী পুজো হয়। বিদ্যার দেবীরূপে দেবী সরস্বতীর পূজা-অর্চনা করা হয়। সকাল থেকেই উপোস থেকে সকলে বাগ্দে‌বীর উদ্দেশ্যে অঞ্জলি দেন। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞানের প্রার্থনা করেন সরস্বতী মায়ের কাছে। এবছর ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো। কিন্তু জানেন কি দেবী সরস্বতীর পূজায় কী কী উপকরণ বা দ্রব্য প্রয়োজন? হাতেখড়ির জন্যই বা কী কী প্রয়োজন ?

 

 

বাংলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেল করে সরস্বতী পুজো হয়। এছাড়া গৃহস্থ বাড়িতেও সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাত্র ছাত্রীরা সরস্বতী পুজোর আয়োজন করে থাকেন। এদিন পুরোহিতরা ব্যস্ত থাকেন খুব। তাই আগে থেকে বলা না থাকলে সরস্বতী পুজোর দিন পুরোহিত পাওয়া খুব মুশকিল হয়ে যায়। তাহলে কি বাড়িতে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করবেন না? মনে রাখবেন, পুরোহিত ছাড়াও বাগদেবীর আরাধনায় নিজেই প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। কেমনভাবে তা সম্ভব? জেনে নিন…

সরস্বতী পুজোর জন্য কিছু বিশেষ উপাদানের প্রয়োজন, যা না থাকলে কিন্তু পুজো অসমাপ্ত হবে।তাই একবার ভালো করে চোখ বুলিয়ে নিন পুজোয় কি কি উপাদান প্রয়োজন বে।
 সরস্বতী পুজোর জন্য লাগবে-

  • দেবী সরস্বতীর মূর্তি বা ছবি
  • পরিষ্কার সাদা কাপড়
  • ফুল - পদ্ম, লিলি ও জুঁই ফুল থাকলে ভালো, পলাশ ফুল
  • আম পাতা ও বেল পাতা
  •  হলুদ, সিঁদুর, অল্প চাল, পাঁচ রকমের ফল যার মধ্যে নারকেল ও কলা থাকতেই হবে
  •  কলস, পান পাতা, সুপারি, ধূপকাঠি
  • প্রদীপ
  • দুধ
  • কালি ও দোয়াত

কী ভাবে করবেন পুজো-
সরস্বতী পুজোর দিন সকাল বেলা উঠে স্নান করার নিয়ম। পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য সকালে স্নান করা আবশ্যক। স্নানের জলে নিমপাতা ও তুলসী পাতা দেওয়ার নিয়ম আছে। এতে জলের শুদ্ধিকরণ ঘটে। এছাড়া স্নান করার আগে মুখে এবং গায়ে নিম ও কাঁচা হলুদ বাটা মাখতে হয়। এতে আমাদের দেহের শুদ্ধিকরণ ঘটে এবং শরীরের কোনো রকম ইনফেকশন থেকেও এই মিশ্রণ রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। স্নান করার পর যে পুজো করবে তাকে সাদা বা হলুদ বস্ত্র পরিধান করতে হয়।

Advertisement

 

 

মূর্তি এবং কলস স্থাপনের নিয়ম
প্রথমে পুজোর জায়গাটি ভালো করে পরিষ্কার করে মুছে নিয়ে একটি ছোট জলচৌকি বসাতে হবে।তবে এটি আবশ্যক নয়। এরপর একটি পরিষ্কার সাদা কাপড় পেতে দিতে হবে তার ওপর। এবার দেবী সরস্বতীর মূর্তিটি এর ওপর স্থাপন করতে হবে।দেবী মূর্তিকে ফুলের মালা পরিয়ে সুসজ্জিত করে এবং পুজোর স্থানে ভালো করে হলুদ, সিঁদুর এবং চাল দিয়ে আলপনা দিতে হবে। এছাড়া স্থানটি ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিতে হবে। বই, খাতা, পেন, পেন্সিল এবং হারমোনিয়াম ঠাকুরের মূর্তিটির পাশে রাখতে হবে, এবং সেখানেও ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিতে হবে। কালির দোয়াতগুলি দুধ দ্বারা পূর্ণ করতে হবে এবং তাতে খাগের কলমগুলি রাখতে হবে। এই কালির দোয়াতগুলি ঠাকুরের মূর্তির সামনেই রাখতে হবে। এবার কলস বা ঘট জল পূর্ণ করে তাতে প্রথমে আমের পল্লব রাখতে হবে।তার ওপর পানপত্র রেখে একটি সুপুরি রাখতে হবে। এর ওপর ফুল ও দূর্বা রাখতে হবে। দেবী মূর্তির পাশে একটি গণেশ ঠাকুরের মূর্তিও রাখতে পারেন।

পূজারম্ভ
প্রথমে ফুল ও বেলপাতা নিয়ে গণেশ ঠাকুরের চরণে তা অর্পণ করে পূজারম্ভ করতে হবে। তারপর একই ভাবে ফুল ও বেলপাতা একে একে বাগদেবীর চরণে অর্পণ করে পুজো আরম্ভ করতে হবে।এর সঙ্গে  দেবীকে আরাধনার মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে। এই মন্ত্রগুলির জন্য নির্দিষ্ট বই আছে যেখানে পুজোর সমস্ত নিয়ম আপনি জানতে পারবেন। এর পর ধুপ ও দীপ জেলে ফল, মিষ্টি ও নৈবিদ্য অর্পণ করে এবং সব শেষে পুষ্পাঞ্জলি দিতে হবে। পুষ্পাঞ্জলির সময় যে মন্ত্র উচ্চারণ করতে হয় তা হলো—
জয় জয় দেবী চরাচর সারে , কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে , ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।।

পুজো শেষ করে তবেই কিন্তু জল এবং খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আর ঐদিন কিন্তু পড়াশোনা একদম বন্ধ। আর প্রসাদ হিসেবে ওই দিনের খাবার কিন্তু ফল, খই, মুড়কি, মিষ্টি, খিচুড়ি, লাবড়া ইত্যাদি। পুজোর বাকি মন্ত্রের জন্য কিন্তু প্রয়োজন হবে পুজোর পাঁচালি, যা আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন।

এছাড়াও মনে রাখতে হবে
বাড়িতে পড়ুয়ারা থাকলে তাদের বই, খাতা, কলম, পেনসিল, গান ও আঁকার সরঞ্জামও দেবীর সামনে রাখতে হবে পুজোর সময়ে। যদি পুরোহিত পুজো করেন, তাঁর দক্ষিণাও রাখুন।

 দ্বিতীয় দিনের নিয়ম
পুজোর পরের দিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে পুজোয় ব্যবহৃত বেলপাতায় খাগের কলমগুলি দুধে চুবিয়ে 'ওম সরস্ব্ত্যই নমঃ' লিখতে হবে তিনবার। তারপর ফুল ও বেলপাতা সমেত পুষ্পাঞ্জলি দিতে হবে। এর পর ঠাকুরের নৈবিদ্যের খই,দই এবং মিষ্টি দ্বারা গোল মন্ডের মত আকারের প্রস্তুত করতে হবে একটি প্রসাদ যা অত্যন্ত উপাদেয় এবং এই প্রসাদ খাওয়ার জন্য কিন্তু বাড়ির ছোট বড় সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। একে দধিকর্মা বলা হয়। এরপর বই খাতাগুলি সরিয়ে নেওয়া যায়। পুজোর ফুল বেলপাতা সাধারণত আমরা বইয়ের পাতায় রেখে থাকি আশীর্বাদ স্বরূপ। এরপর কিন্তু দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে দেবী মূর্তিটিকে বিসর্জন দেওয়া হয়ে থাকে। দেবী মূর্তি সাধারণত সন্ধ্যেবেলায় বিসর্জন দেওয়া হয়।অনেক বাড়িতেই কিন্তু দেবীমূর্তিটি রেখে দেওয়া হয়। পরের বছর নতুন ঠাকুর আনার পর পুরনো মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয়। এই  নিয়ম মেনেই বাগদেবীর আরাধনা হয়। 

Advertisement

Advertisement