মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে হয় দেবী সরস্বতীর আরাধনা। সরস্বতী পুজোর পাশাপাশি এই দিনটি বসন্ত পঞ্চমী হিসেবেও পালিত হয়। মনে করা হয়, এই দিনেই আবির্ভূতা হয়েছিলেন জ্ঞান, বিদ্যা ও শিল্পকলার দেবী সরস্বতী। প্রতি বছরই অধীর আগ্রহে সবাই সরস্বতী পুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বাঙালির ঘরে ঘরে এই মা সরস্বতী পূজিত হন। এছাড়াও স্কুল-কলেজে এই পুজো ঘিরে প্রায় একমাস ধরে উৎসাহ থাকে তুঙ্গে। মাঘ বা ফাল্গুন মাসের শ্রী পঞ্চমীতে ঘরে ঘরে পূজিত হন বাগদেবী। জেনে নেওয়া যাক এই বছর কবে পড়েছে সরস্বতী পুজো।
কবে সরস্বতী পুজো
এই বছর সরস্বতী পুজো পড়েছে ২ ফেব্রুয়ারি। আর এইদিন পুজো করার শুভ মুহূর্ত হল ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ১৪ মিনিট থেকে বেলা ১২টা ০১ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যেই বসন্ত পঞ্চমীর শুভ মুহূর্ত। ২ ফেব্রয়ারি সকাল ৯.১৪ মিনিটে শুরু হবে শ্রী পঞ্চমী তিথি৷ এই তিথি থাকবে পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকালে ৬.৫২ মিনিট পর্যন্ত। তারপর মাঘ শুক্লা ষষ্ঠী তিথি পড়ে যাচ্ছে। উদয়া তিথি অনুসারে ৩ ফেব্রুয়ারি হল বসন্ত পঞ্চমী। কিন্তু সেদিন যেহেতু খুব সকালেই পঞ্চমী ছেড়ে যাচ্ছে, তাই ২ না ৩ ফেব্রুয়ারি, কবে সরস্বতী পুজো করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অনেকেই।
২ নাকি ৩ ফেব্রুয়ারি
বেণীমাধব শীলের গার্হস্থ্য পঞ্জিকা অনুসারে রবিবার বেলা ১২টা ৩৪ মিনিটে পঞ্চমী পড়ছে। সোমবার ৯টা ৫৯ মিনিটে পঞ্চমী ছাড়ছে। সকালে পঞ্চমী ছেড়ে গেলেও বসন্ত পঞ্চমী তিথি যেহেতু ৩ ফেব্রুয়ারি, তাই সেদিনই পুজো করার পরামর্শ দিচ্ছেন জ্যোতিষবিদরা। তবে এই দুই দিনই সরস্বতী পুজো করতে পারবেন বাঙালিরা।
বসন্ত পঞ্চমীর মাহাত্ম্য
এই দিনে মা সরস্বতীর পাশাপাশি গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, পেন এবং বাদ্যযন্ত্রের পুজো করারও রীতি প্রচলিত আছে। অনেক বাড়িতে শিশুদের হাতেখড়ির অনুষ্ঠান করা হয় এদিন। তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম বিদ্যাচর্চা শুরু হয় এই দিন থেকে। বসন্ত পঞ্চমী থেকে শীত ঋতুর অবসান ও বসন্তের আগমন বার্তা ঘোষিত হয়।
সরস্বতী পুজোর পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র
ওঁ জয় জয় দেবী চরাচরসারে, কুচযুগ-শোভিত মুক্তাহারে। বীণারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমোহস্তুতে।।
নমঃসরস্বত্যৈ নমো নমঃ নিতং ভদ্রকাল্যৈ নমো নমঃ। বেদ-বেদাঙ্গ-বিদ্যাস্থানেভ্য এব চ। এষ সচন্দন পুষ্পবিল্ব পত্রাঞ্জলি সরস্বত্যৈ নমঃ।।
এই মন্ত্রে তিনবার অঞ্জলি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।