শনি কোষ্ঠিতে উচ্চ স্থিতিতে থাকলে ব্যক্তি শুভ ফল লাভ করে। শনির সাড়ে সাতি (Shani Sade Sati) বা মহাদশা (Mahadasha) প্রভাবের কারণে অনেক দুর্দশা ভোগ করতে হয়। শনির সাড়ে সাতির প্রথম পর্যায়, কোনও ব্যক্তি অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন। দ্বিতীয় পর্যায় তাঁর পরিবার এবং তৃতীয় পর্যায় স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। কোনও ব্যক্তির জীবনে এই তিনটি পর্যায় প্রায় আড়াই বছর ধরে চলে। যার মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়টি সবচেয়ে ভয়াবহ। এই আড়াই বছরের সময়কালকে জ্যোতিষে ঢাইয়া বলা হয়ে থাকে। এই তিন পর্যায়কে একত্রে বলা হয় শনির সাড়ে সাতি।
সাড়ে সাতির প্রভাব কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা যাঁরা প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁরাই জানবেন। আর্থিক, মানসিক, শারীরিক, পারিবারিক - সব দিক থেকে একের পর এক বিপর্যয় নেমে আসে সেই ব্যক্তির জীবনে। কিছু ধার্মিক ক্রিয়াকলাপ রয়েছে যার সাহায্যে সাড়ে সাতির প্রভাব সামান্য কম করা যায়। তবে তা সাময়িক। কিন্তু এমন কিছু পূজা রয়েছে যা করার ফলে শনির সাড়ে সাতির প্রভাব সম্পূর্ণ নির্মূল হতে পারে। যার মধ্যে একটি শীঘ্রই আসতে চলেছে আগামী অমাবশ্যা কালী পূজার (Kali Puja) দিনে। ওই দিনে শুদ্ধ মনে দশমহাবিদ্যার মহাকালীর (Mahakali Puja) আরাধনা করলে সাড়ে সাতির প্রভাব একেবারে কাটাতে পারবেন। এর সঙ্গে আরও কিছু শুভ প্রভাব নেমে আসবে আপনার জীবনে।
১. কাটবে অকাল মৃত্যু
মহাকাল থেকে মহাকালী শব্দের উৎপত্তী হয়েছে। মহাকাল অর্থাৎ সময়। মনে করা হয় মহাকালী জন্ম-মৃত্যু-সময় নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই নিয়ম মেনে মহাকালীর আরাধনা করলে কেটে যআয় অকাল মৃত্যু যোগ। মায়ের আশীর্বাদে কোনও দুর্ঘটনা বা কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।
২. রোগ নাশক
দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে অনেকে মহাকালের আরাধনা করেন। তেমনই তাঁর মাতৃরূপ মহাকালীর আরাধনাও করা হয়। শাস্ত্রমতে মনে করা হয়, এই পুজো করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়। রোগের বিনাশ হয়।
৩. আর্থিক শক্তি বাড়ে
শনির সাড়ে সাতির প্রভাবে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় জাতকদের। মহাকালীর আরাধনার প্রভাবে সেই আর্থিক সংকট মিটে গিয়ে টাকা পয়সা সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যা চলে যায়। মায়ের কৃপা দৃষ্টি যদি একবার আপনার উপর পড়ে, তবে সুসময় ফিরতে এবং সেই সুসময় দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকবে।
৪. কর্মক্ষেত্রে উন্নতি
চাকরিজীবী হোন বা ব্যবসায়ী, মহাকালীর আরাধনা এতটাই পডিটিভ এনার্জি তৈরি করে যে কর্মক্ষেত্রে জাতকের উন্নতির পথ প্রশস্ত হয়ে ওঠে। যারা আপনার শত্রু তাদেরও বিনাশ ঘটে। অফিসে নিষ্কন্টক হয়ে উন্নতির রাস্তা পরিষ্কার হয়। একই সঙ্গে যাঁরা নতুন চাকরি খুঁজছেন তাঁরাও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন।
৫. সুখী দাম্পত্য
সুখী দাম্পত্যের উদাহরণ হিসাবে শিব-কালী, বা হর-পার্বতীর কথা বলা হয়ে থাকে। তাই মহাকালীর আরাধনায় সাংসারিক কলহ থেকে মুক্তি ঘটে। দাম্পত্য সুখে ভরে ওঠে।
৬. সম্মান প্রতিপত্তি বাড়ে
সম্মান অর্জন করতে সারাজীবন লেগে যায়। কিন্তু তা ধুলোয় মিশতে সময় বিন্দুমাত্র সময় লাগে না। মহাকালীর কৃপায় সম্মানহানির ভয় কমে। একই সঙ্গে সামাজিক সম্মান এবং প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়।
৭. গ্রহদোষ কেটে যায়
রাশিচক্রে ৯টি গ্রহের অবস্থান নানা ভাবে বিভিন্ন রাশির জাতকদের নানা ফল প্রদান করে। কারও ক্ষেত্রে ফল শুভ হয়। কারও ক্ষেত্রে ফল হয় বিনাশকারী। মহাকালীর আরাধনা করলে গরহের বিনাশকারী ফলের প্রভাব কেটে যায়। কমে যায় ক্ষতির আশঙ্কা। সমৃদ্ধ জীবনের লক্ষ্য আরও এগোতে সাহায্য করেন দেবী মহাকালী।