১৭৩০ সালে সেপ্টেম্বরের জন্মাষ্টমীতে লোকনাথের জন্ম। জন্মস্থান নিয়ে যদিও একটা দ্বিমত রয়েছে। কারও মতে উত্তর ২৪ পরগণার চাকলা গ্রাম। কারও মতে কচুয়া গ্রাম। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে বেশ কয়েকটি। তবে জন্মস্থান উত্তর ২৪ পরগনা তা নিয়ে দ্বিমত নেই।
তথ্য বলছে বাবা লোকনাথকে শিব লোকনাথ-ও বলা হয়। কেন বলা হয় তা হয়তো অনেকেই জানেন না। তথ্য অনুযায়ী, খুব ছোট বয়সে গুরু ভগবান গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে সংসার ছেড়ে বেরিয়ে যান লোকনাথ। কঠোর তপস্যার জন্য চলে যান হিমালয়ে। বরফে আবৃত হিমালয়ে গুহায় তপস্যায় বসেন গুরু ভগবান। তাঁর দেখাদেখি গুহার বাইরে তপস্যায় বসেন লোকনাথও। তপস্যার মাঝেই ধ্যানমগ্ন শিষ্যকে দেখতেন ভগবান। আবার তিনিও ধ্যানমগ্ন হতেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বাবা লোকনাথের শরীর ঢেকে যেত বরফে। ঋতুর পরিবর্তনে ফের গলে যেত বরফ।
কথিত আছে, লোকনাথের শরীর থেকে নব্বইবার বরফ গলে যেতে দেখেছিলেন তাঁর গুরু ভগবান গঙ্গোপাধ্যায়। তা থেকেই তিনি বুঝতে পারেন, কঠোর তপস্যায় ৯০ বছর পার করে ফেলেছেন তাঁরা। একদিন ঘটল এক অলৌকিক কাণ্ড। সকালের প্রথম রোদ লোকনাথের সিদ্ধাসনে এসে পড়েছে। গুহায় ধ্যানগ্ন হওয়ার আগে শিষ্যকে একবার দেখার জন্য গুহার বাইরে চোখ রাখেন গুরু ভগবান। দেখেন লোকনাথের জায়গায় ধ্যানমগ্ন স্বয়ং মহাদেব। প্রথমে খানিকটা চমকে গিয়েছিলেন ভগবান। পরে আবার মুখ ফেরাতে দেখতে পান শিষ্যকে। চারদিকে মুখ ঘুরিয়ে একবার দেখে নিয়ে শিষ্যের দিকে তাকাতে ফের একই দৃশ্য, সামনে ধ্যানমগ্ন দেবাদিদেব।
সে দিন গুরুদেব বুঝেছিলেন, আজ শিষ্যের তপস্যা সম্পূর্ণ হয়েছে। গুরু হয়েও লোকনাথকে প্রণাম করেন ভগবান গঙ্গোপাধ্যায়। সেই থেকে লোক মুখে প্রচার পায় শিব লোকনাথের নামও।