ভাই-বোনের উৎসব, খুনসুটির উৎসব, আন্দের উৎসব ভাইফোঁটা (Bhai Phota 2021). শুধু বাঙালিদের নয়, সারা দেশের বহু রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন নামে এই উৎসব পালিত হয়। দেশের কোটি কোটি ভাইবোনেরা একে অপরের সুখ-শান্তি এবং দীর্ঘায়ুর জন্য প্রার্থনা করেন। এই উৎসবের ভ্রাতৃদ্বিতীয়া নামেও পরিচিত। চলতি বছর ৬ নভেম্বর শনিবার এই উৎসব দেশজুড়ে পালিত হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। হিন্দিভাষীদের কাছে 'ভাইদুজ' (Bhai Dooj), বাঙালিদের 'ভাইফোঁটা', মহারাষ্ট্রে 'ভৌ বিজ', দক্ষিণ ভারতে 'যমদ্বিতীয়া' এবং নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব 'ভাইটিকা' (Bhai Tika) নামে পরিচিত।
উৎসবের শুভ সময় ও তিথি
প্রতিবছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ বছর ৬ নভেম্বর দ্বিতীয়া। যদিও আগের দিন ৫ নভেম্বর রাত ১১টা ১৪ মিনিটে দ্বিতীয়া শুরু হবে। চলবে পরদিন সন্ধে ৭টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। অর্থাৎ সারা দিন ভাইফোঁটা দিতে পারবেন বোনরা। তবে ফোঁটা দেওয়ার সবচেয়ে শুভ সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিট থেকে ৩টে ২১ মিনিট পর্যন্ত। অর্থাৎ এই ২ ঘণ্টা ১১ মিনিট ফোঁটা নেওয়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সময়।
দ্বিতীয় শুরু - ৫ নভেম্বর রাত ১১টা ১৪ মিনিট।
দ্বিতীয়া শেষ - ৬ নভেম্বর সন্ধে ৭টা ৪৪ মিনিট।
ফোঁটা দেওয়ার সবচেয়ে শুভ সময় - ৬ নভেম্বর দুপুর ১টা ১০ মিনিট থেকে ৩টে ২১ মিনিট পর্যন্ত।
কোন দিকে মুখ করে বসা উচিত?
ফোঁটা নেওয়ার সময় দিকেরও সম্পর্ক রয়েছে। শাস্ত্র অনুযায়ী সব সময় পূর্ব দিকে মুখ করে ফোঁটা নেওয়া শুভ। তবে সমস্যা থাকলে উত্তর দিক বা উত্তর-পূর্ব দিকে মুখ করে ফোঁটা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, কখনই দক্ষিণ দিকে মুখ করে ভাইফোঁটা নেবেন না। এটা অত্যন্ত অশুভ বলে বিবেচিত হয়।
ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনি জানুন:
এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী ধর্ম ও মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনা বা যমির ঘরে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান। কার্তিক মাসের দ্বিতীয় তিথিতে শুভ ক্ষণে দাদার কপালে তিলক লাগিয়ে তাঁর আরতি করে ঘরে আমন্ত্রণ জানান যমুনা। যত্ন করে তাঁকে খাওয়ান। বোনের রন্ধন কুশলতায় এবং আতিথেয়তায় অত্যন্ত খুশি হয়ে যম তাঁকে আশীর্বাদ করেন, এই শুভ দিনে যাঁরা বোনের হাত থেকে ফোঁটা নেবে তাঁরা নরক যাত্রা থেকে মুক্তি পাবেন।
ভাইফোঁটা নিয়ে মহাভারতে আরও একটি কাহিনি বর্ণিত আছে। নরকাসুর নামে এক দানবকে বধ করার পর দ্বারকায় ফেরেন কৃষ্ণ। দাদার আগমনে সুভদ্রা বিশেষ পূজা করেছিলেন। কৃষ্ণের কপালে পূজার তিলক লাগিয়ে তাঁকে বরণ করেন সুভদ্রা। সে দিনও ছিল কার্তিক মাসের দ্বিতীয় তিথি। সেই থেকে এই উৎসব সারা দেশে পালন করা শুরু হয়।