দেশের মহামারী পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এ রাজ্যেও নিয়ন্ত্রণে করোনা আক্রান্ত্রের সংখ্যা। তবে মহামারীর চেয়েও মুদ্রাস্ফীতির জেরে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের।
দেশজুড়ে পণ্য পরিবহণে বাড়তি জ্বালানির দামের বোঝায় বাড়তে শুরু করেছে শাক-সবজি থেকে যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রির দাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন মুরগির ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ফের বাড়তে শুরু করেছে মুরগির ডিমের দাম।
গত সপ্তাহেও এক ট্রে (৩০টি ডিম) মুরগির ডিমের দাম ছিল মোটামুটি ১৪০ টাকা। এখন সেটাই বেড়ে ১৭০ টাকা হয়েছে। ক’টা দিন আগেও যেখানে মুরগির ডিম ১০-১১ টাকা জোড়া বিক্রি হয়েছে, এখন সেই দাম বেড়ে ১২ টাকা জোড়া হয়ে গিয়েছে!
কিন্তু কেন বাড়ছে মুরগির ডিমের দাম? স্থানীয় ব্যবসায়িদের কথায়, মালের দামের সঙ্গে জুড়ছে পরিবহণের বাড়তি খরচ যা বিগত মাস তিনেকে অনেকটাই বেড়েছে! এছাড়াও বেড়েছে উৎপাদনের খরচ। ফলে মুরগির ডিমের দামে তার প্রভাব পড়ছে।
রাজ্যে মুরগির ডিমের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন (WEST BENGAL POULTRY FEDERATION)-এর সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি বলেন, “মহামারীর দু’বছরে খামারগুলিতে মুরগি প্রতিপালনের খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এর সঙ্গে বেড়ে বরিবহণের খরচ। সব মিলিয়ে গত দু’বছরে ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ৮৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “রাজ্যে ডিমের জোগানের কোনও ঘাটতি নেই। কিন্তু বিগত ৩-৪ মাস ধরে তেলের দাম ১০০ টাকার উপরে, অনেকটাই বেড়েছে ভোজ্যতেল ও তার কাঁচা মালের দাম। এই দুই চাপে, মুদ্রাস্ফীতির জেরে মুরগি প্রতিপালনের খরচ যতটা বেড়েছে, এ রাজ্যে ডিম, মুরগির মাংসের দাম ততটা বাড়েনি।”
তাঁর মতে, জ্বালানির দামের উপর বিপুল কেন্দ্রীয় করের বোঝা আর মুদ্রাস্ফীতির সাঁড়াশি চাপ সামলে কোনও রকমে টিকে রয়েছে এ রাজ্যের পোল্ট্রি শিল্প। ডিমের বা মুরগির মাংসের দাম সম্প্রতি ১৫-২০ শতাংশ বাড়লেও তাতে খামার মালিক বা ব্যবসায়িদের লাভ সামান্যই থাকে। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী এইটুকু দাম বাড়তে বাধ্য।