এ যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া! শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দেখা দিল নতুন সমস্যা। করোনা অতিমারির পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল দ্বীপরাষ্ট্রের পর্যটন। শ্রীলঙ্কায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে দেশে ফিরছে বিদেশি পর্যটকরা।
দেশজুড়ে সরকার বিরোধী গণবিক্ষোভের জের পড়েছে পর্যটনশিল্পে। অশান্তির আশঙ্কায় শ্রীলঙ্কায় ট্যুর বাতিল করে দিয়েছেন পর্যটকরা। যাঁরা আছেন তাঁরা দেশে ফিরে যাচ্ছেন।
ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জ্বালানি ঘাটতি, খাদ্য সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঘাটতি, জরুরি অবস্থা এবং বিক্ষোভের কারণে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। আশঙ্কিত পর্যটকরা সে দেশ ছাড়ছেন।
পর্যটক চলে যাওয়ায় ছোট-বড় হোটেল এখন ফাঁকা। পর্যটন মরসুমের সেরা সময় হওয়া সত্ত্বেও বুকিং নেই। আসছেন পর্যটকরা। একে অর্থনৈতিক সংকট তার উপরে পর্যটকরা ফিরে গেলে আরও ক্ষতি! উদ্বিগ্ন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
কীভাবে ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ করবেন?
অনেকেই ব্য়াঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে হোটেল খুলেছেন। এই অবস্থা বুঝে উঠতে পারছেন না কীভাবে ঋণের কিস্তি মেটাবেন!
শ্রীলঙ্কার পাঁচতারা এবং চারতারা হোটেলগুলিতে প্রতিবছর এই সময় ১০০ থেকে ১৫০ ঘরের বুকিং করা হয়। কিন্তু এবার পুরো হোটেল খালি। পর্যটকশূন্য।
আজতককে এক হোটেল মালিক জানিয়েছেন, তাঁর হোটেলে ৫০-৬০টি ঘর আছে। মাত্র ৫টি ঘরে পর্যটক আছেন। এই অবস্থায় কর্মীদের মাস মাইনে দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না।
হোটেলের এক কর্মচারী জানান, বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় এসি কাজ করছে না।
ডিজেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে শ্রীলঙ্কায়। অথচ হোটেলে ডিজেলচালিত যন্ত্র রয়েছে। জ্বালানির অভাবে সেগুলি কাজ করছে না। ফলে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না অতিথিরা।
শ্রীলঙ্কা বেড়াতে যাওয়া শোরি এবং অনিতা জানিয়েছেন, তাঁরা এখন লন্ডনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। শ্রীলঙ্কায় সাধারণ জিনিসও পাওয়া যাচ্ছে না।
অনিতা বলছিলেন, হোটেল ছেড়ে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে ৪ ঘণ্টা আটকে থাকল ট্রেন। অপেক্ষা করে কাটাতে হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বহু মানুষের জীবনজীবিকা পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। দেশের জিডিপি-র ১২ শতাংশই আসে পর্যটন শিল্প থেকে।