ফিউচার গ্রুপের 'ফিউচার' কী হতে চলেছে তা স্পষ্ট হচ্ছে না। প্রায় দেড় বছর আগে রিটেল স্টোরগুলি রিলায়েন্সকে বিক্রির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল তারা। প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে আপত্তি জানায় আমাজন। তার পর থেকে শুরু হওয়া বিতর্ক আর থামছে না। সবচেয়ে বেশি লোকসান হয়েছে যাঁরা ফিউচার গ্রুপের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন। আদালতের বাইরে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিল আমাজন ও ফিউচার গ্রুপ। তবে ১৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে আমাজন জানায়, সমাধানসূত্র মেলেনি।
২৫ ফেব্রুয়ারি ফিউচারের রিটেল স্টোরে আচমকা দেখা দেয় রিলায়েন্সের আধিকারিকদের। যা স্টোরগুলির দখল করার প্রক্রিয়া বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিগ বাজার স্টোরগুলির লিজের চুক্তিপত্র রিলায়েন্স নিজের হাতে নিয়ে নেয়। আর্থিক অনটনের কারণে ওই স্টোরগুলির ভাড়া মেটাতে পারছিল না ফিউচার। এটাও জানা গিয়েছে, বিগ বাজারের নাম বদল করতে চলেছে রিলায়েন্স। স্মার্ট বাজার নামকরণ করছে মুকেশ অম্বানির সংস্থা। এর মধ্যেই বুধবার ফিউচার রিটেল দাবি করে, নিজেদের স্টোরগুলি তারা ফেরত পেতে বদ্ধপরিকর। ভারতীয় স্টক একচেঞ্জে বিবৃতি দিয়ে কিশোর বিয়ানির সংস্থা জানায়, রিলায়েন্সের পদক্ষেপে সংস্থা হতবাক। রিটেল স্টোরগুলি তাদের হাত থেকে নিতে সংস্থা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কীভাবে সেটা সম্ভব তা স্পষ্ট করেনি ফিউচার। রিলায়েন্সের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে তারা।
বিতর্ক কোথায়?
ভারতের খুচরো বাজারের দখল নিয়ে রিলায়েন্স ও আমাজনের লড়াই তুঙ্গে। গত ১৫ মার্চ সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন দিয়ে রিলায়েন্স ও ফিউচার গ্রুপকে জালিয়াত বলেছিল আমাজন। তারা দাবি করে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে রিলায়েন্স। জাতীয় কোম্পানি আইন আদালতের অনুমতি ছাড়া বিগ বাজারের স্টোর দখল করতে পারে না তারা। ওই দিন সুপ্রিম কোর্টে আমাজন জানায়, মামলা চলা সত্ত্বেও নিজেদের স্টোরগুলি রিলায়েন্সের হাতে তুলে দিচ্ছে ফিউচার গ্রুপ। যা নিয়ে ফিউচার দাবি করে, এটা তাদের হাতে নেই। স্টোরের ভাড়া মেটাতে তারা অক্ষম।
২০২০ সালের অগাস্টে নিজেদের পাইকারি, খুচরো ও গুদামগুলি রিলায়েন্সকে বিক্রির কথা ঘোষণা করে ফিউচার গ্রুপ। দুপক্ষের মধ্যে ২৪ হাজার ৭১৩ কোটি টাকার চুক্তিও হয়। আমাজন তখন জানায়, ২০১৯ সালের চুক্তি খেলাপ করেছে ফিউচার। ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে ভারতীয় রিটেল সংস্থাকে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, সম্পত্তি কাউকে বেচতে পারবে না তারা।
শেয়ারের দরে পতন
ফিউচার রিটেলের শেয়ার দর ক্রমশ পড়ছে। বৃহস্পতিবার ৮.১ শতাংশ নীচে নেমে বন্ধ হয়েছে ৩৮.৮০ টাকায়। ৩৮.৩০ টাকা পর্যন্ত পতন হয়েছিল শেয়ারের। এটাই গত ৫২ সপ্তাহে সর্বনিম্ন দর।
ফিউচার লাইফস্টাইল ফ্যাশনের শেয়ারও ১০.০৯ শতাংশ পড়ে ৪০.৫৫ টাকায় চলে এসেছে। একটা সময় ৩৯.৫০ টাকায় চলে গিয়েছিল। এটাই গত ৫২ সপ্তাহে স্টকের সর্বনিম্ন দর।
আরও পড়ুন- চিনের দেনায় জর্জরিত পড়শি দেশকে ওষুধ, খাবার কিনতে বিপুল ঋণ SBI-র