তথ্য বলছে ভারতের ঘরে ঘরে রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টন সোনা। সেখানে দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে রয়েছে ৮০০-টনের কাছাকাছি। অর্থাৎ ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে বেশি সোনা রয়েছে দেশের পরিবারগুলিতে।
এখানেই শেষ নয়, সারা পৃথিবীতে যত সোনা রয়েছে, তার প্রায় ১১ শতাংশই রয়েছে ভারতের ঘরে। এমনকী আমেরিকার সরকারের কাছে থাকা ৮২০০ টনের বেশি সোনা রয়েছে ভারতের ঘরে ঘরে বলে জানালেন দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং Manasi Research Foundation-এর চেয়ারম্যান মানসকুমার ঠাকুর। আর এই তথ্যই যে কোনও মানুষকে চমকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
কেন ভারতের ঘরে ঘরে সোনা?
এর পিছনে একটা বিরাট সময়ের ইতিহাস রয়েছে বলে জানালেন মানসবাবু। তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের ২ থেকে ৩ হাজার বছরের ইতিহাস ঘাঁটলেও সোনার উপস্থিতি দেখা যাবে। সেই সময় পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে সোনা আমদানি করা হতো। যার ফলে দেশের ঘর ঘর সোনায় ভরে যেত। এমনকী মন্দিরেও মজুত হতো সেনা। আর এই খবরটাই পৌঁছে যেত বিদেশি হামলাকারীদের কাছে। তাঁরা সেই খবর পেয়েই ভারতে হামলা চালাত। তার পর সোনা, হিরে লুঠ করে চলে যেত। এটাই ভারতের ইতিহাস। এই ইতিহাসকে অস্বীকার করার জায়গা নেই।'
সেই ধারাই এখনও চলছে
সোনা হল শুভ। তাই তো ধনতেরাস থেকে শুরু করে বিয়ে, যে কোনও শুভ কাজে ভারতীয়রা সোনা কেনে। এটা আমাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। আর সেই ধারা এখনও চলছে বলে মনে করেন মানসবাবু।
সোনা কি ভালো বিনিয়োগের রাস্তা?
এই প্রশ্নের উত্তরে মানসবাবু বলেন, 'সোনা খুবই ভালো বিনিয়োগের রাস্তা। তবে গহনা সোনাতে বিনিয়োগ করলে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সোনা খুব খারাপ পরিস্থিতি না হলে বিক্রি করা হয় না। তাই এটাকে ঠিক রোজকার মুনাফার বিনিয়োগ বলা যায় না। বরং এটা স্বাভিমানের প্রতীক। অপরদিকে সরকারি গোল্ড বন্ড একটা সুরক্ষিত বিনিয়োগের রাস্তা। এছাড়া কেউ ভালো করে শর্ত পড়ে গোল্ড ইটিএফও কিনতে পারেন। তাতেও লাভ মিলবে। বিনিয়োগের টাকা বৃদ্ধি পাবে।'
অর্থাৎ সোজা ভাষায়, গয়না সোনা কিনতেই পারেন। তবে সেটকে বিনিয়োগ না ভাবাই ভালো। ইনভেস্ট করতে চাইলে গোল্ড বন্ড বা ইটিএফ-এ বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ।