আপনি যখন বাড়ির বাইরে বেড়াতে যান, আপনি প্রায়ই জলের বোতল কিনে খান। আপনি সেই বোতলটি পাচ্ছেন প্রতি লিটার ২০ টাকা দরে। জল বিক্রি করা কোম্পানিগুলির দাবি, জল ফিল্টার করে বিশুদ্ধ করা হয়, সে কারণেই জলের দাম বেশি। কিন্তু কোম্পানিগুলোর এই দাবি আসলেই সত্য কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়াও, বোতলটির প্রকৃত মূল্য কত তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আজ আমরা আপনাকে যা বলতে যাচ্ছি তা জানলে আপনি হতবাক হবেন।
জলের দাম কত?
'দ্য আটলান্টিক'-এ অর্থনীতিবিদ ডেরেক থম্পসন প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার কস্টের ব্যবসা বিশ্লেষণ করেছেন। ডেরেক থম্পসনের মতে, প্রচুর পরিমাণে উৎপাদনের কারণে কোম্পানিগুলিকে এক লিটার প্লাস্টিকের বোতলের জন্য ৮০ পয়সা দিতে হয়। এক লিটার জলের দাম আসে ১ টাকা ২০ পয়সা। তখন সেই জল বিশুদ্ধ করতে খরচ হয় ৩ টাকা ৪০ পয়সা। অতিরিক্ত খরচ হিসেবে কোম্পানিকে আরও ১ টাকা দিতে হয়। এভাবে সব খরচ মিটিয়ে কোম্পানিগুলো ৬ টাকা ৪০ পয়সায় জলের বোতল পায়, যা তারা ২০ টাকায় বিক্রি করে ৩ গুণেরও বেশি মুনাফা অর্জন করে।
প্যাকেজড ড্রিংকিং ওয়াটার কি নিরাপদ?
এত দামে কেনার পরেও কি বোতলবন্দি জল নিরাপদ? কোনভাবেই না। দামি ব্র্যান্ডের জল কেনা মানেই তার বিশুদ্ধতার লক্ষণ নয়। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভারত সরকার ২০১৪-১৫ সালে বোতলজাত জলের গুণমান পরীক্ষা করেছিল। এর ফলাফলে দেখা গেছে যে অর্ধেকেরও বেশি ব্র্যান্ডের মান খারাপ ছিল। অর্থাৎ, তারা জলের জন্য সর্বোত্তম মূল্য নিচ্ছিল কিন্তু জলের গুণমান ছিল খারাপ বা মাঝারি।
দেশে দ্রুত ব্যবসা বাড়ছে
প্যাকেজড পানীয় জলের ব্যবসা ভারতে গত ২০ বছর ধরে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি পশ্চিমা দেশগুলিতে শুরু হয়েছিল তবে এখন এটি সম্পূর্ণরূপে ভারতেও এর শিকড় স্থাপন করেছে। দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি এ ব্যবসারও দ্রুত প্রসার ঘটছে। বর্তমানে ভারতে বোতলজাত জলের ব্যবসায় নিয়োজিত রয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি নির্মাতা। তার কাছে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস লাইসেন্স আছে। এ ব্যবসার টার্নওভার কোটি টাকা। ভবিষ্যতে এর আরও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা লক্ষ্য করা হচ্ছে।