মহামান্য হাইকোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দেওয়ার পরও ডিএ (West Bengal Dearness Allowance) দেয়নি রাজ্য় সরকার। সেজন্য আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। ৪ নভেম্বরের মধ্যে সেই মামলায় মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থের কাছে হলফনামা তলব করেছে আদালত।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের অনেকের আশা, এই ৪ নভেম্বরের আগেই Da ঘোষণা করতে পারে রাজ্য। আর তাঁদের এই আশা আরও জোরালো হয়েছে একটি খবরে। বিভন্ন প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১ নভেম্বর মঙ্গলবার বৈঠক ডেকেছে রাজ্য সরকার। অর্থসচিবের ডাকা সেই বৈঠকে বিভিন্ন দফতরের অর্থ উপদেষ্টাদের হাজির থাকতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বকেয়া ডিএ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। রাজ্য সরকারের তরফে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য দেওয়া না হলেও সরকারি কর্মীরা আশাবাদী।
আরও পড়ুন : টেট নিয়ে বড় খবর, কারা পরীক্ষা দিতে পারবেন? ফের নয়া নির্দেশিকা
তাঁদের আশাবাদী হওয়ার পিছনে কারণও রয়েছে বলে মত আইনজীবীদের একাংশের। কারণ, গত ২১ মে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। সময়সীমা দিয়েছিল ৩ মাস। কিন্তু রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করে রাজ্য। তবে রায় বহাল রাখে মহামান্য হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। অর্থাৎ ডিএ দিতেই হবে রাজ্যকে, সেই নির্দেশ দেওয়া হয় আদালতের তরফে।
সরকারি কর্মী ও কর্মী সংগঠনগুলো মনে করছে, এই ৪ তারিখের আগেই সরকার ডিএ ঘোষণা করতে পারে। অথবা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। যদি সুপ্রিম কোর্টে যায় তাহলে সেখানে মামলা চলবে। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টে যদি না যায়, যদি ৪ তারিখে হাইকোর্টেই হলফনামা জমা দেয় তাহলে সরকারকে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে।
সেদিন যে হলফনামা রাজ্যকে জমা দিতে হবে সেখানে তাদের উল্লেখ করতে হবে কেন মহামান্য আদালতের নির্দেশের পরও রাজ্য বকেয়া ডিএ মেটায়নি। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে কি সরকার ডিএ দিতে অক্ষম বা আদালত আবমাননার দায়ে কেন চিফ সেক্রেটারি ও ফিনান্স সেক্রেটারির বেতন বন্ধ করা হবে না ? আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, সরকার মহামান্য হাইকোর্টের এই প্রশ্নের মুখে পড়তে চাইবে না। তাই তারা সুপ্রিম কোর্টেই যেতে পারে।
আরও পড়ুন : নোটে গান্ধীজির ছবি কেন, তার বদলে নেতাজি বা অন্য ছবি দেওয়া সম্ভব?
এই প্রসঙ্গে, কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ৪ তারিখের আগে ডিএ ঘোষণা করতেই পারে রাজ্য সরকার। কারণ, সরকার কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তারা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সময় চাইতেই পারে। কিন্তু শেষ রক্ষে হবে না।
আবার সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল জানিয়েছিলেন, আদালত অবমাননার মামলায় রাজ্যকে হলফনামা চেয়েছে মহামান্য হাইকোর্ট। ২০০৯ থেকে ২০১৫ - এই সময়কালের যে এরিয়ার বাকি আছে সেটাও যদি সরকার ইনস্টলমেন্টে কর্মীদের দেয় তাহলে আর আদালত অবমাননা হবে না। ডিএ-এরিয়ার বাবদ ১ লাখ কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। এখন থেকে সরকার যদি তা না করে সেই বকেয়ার পরিমাণ ক্রমশ বাড়তে থাকবে। সেক্ষেত্রে বিপদে পড়বে সরকারই। তাই তারাও চাইবে এই ভার লাঘব করতে। তাই ডিএ ঘোষণা করতেই পারে হাইকোর্টে হলফনামা পেশ বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বদলে।'