বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance)-সহ মোট ৩ দফা দাবিতে আজ শুক্রবার নবান্নে বৈঠকে বসবেন সরকারি কর্মী তথা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। যা নিয়ে আশাবাদী সরকারি কর্মীরা। তাদের আশা এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। এখন অনেকের প্রশ্ন, কত শতাংশ ডিএ-র দাবি নবান্নের বৈঠকে জানাবেন সরকারি কর্মীরা?
শুক্রবার ২১ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনকারীদের ৫জন প্রতিনিধিকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। নবান্নের ১৩ তলায় মুখ্যসচিবের কনফারেন্স রুমে এই বৈঠক হবে। সূত্রের খবর, বৈঠকে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিব দুজনেই উপস্থিত থাকবেন।
কত শতাংশ ডিএ-র দাবি জানানো হবে?
সরকারি কর্মী তথা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যদের দাবি তাঁদের তরফে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের (6th pay commission) বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হবে রাজ্য সরকারের কাছে। তাঁদের দাবি, AICPI অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ বকেয়া রয়েছে সরকারি কর্মীদের। সেই দাবিই রাখা হবে নবান্নে।
এই বিষয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টে পঞ্চম বেতন কমিশনের বকেয়া ডিএ-র মামলা চলছে। তা নিয়ে আমাদের কোনও দাবি সরকারের কাছে থাকবে না। কারণ মামলাটি বিচারাধীন। তবে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় যে বকেয়া আছে তা মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হবে সরকারের কাছে। ছোটো-বড় সব রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের থেকে বেশি ডিএ পেয়ে থাকে। সরকারের কাছে তার উদাহরণও দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন : Electric Bill Reduce Tips And Tricks : ঠিক এই সময় AC, ফ্রিজ বন্ধ রাখলে কম আসবে বিদ্যুতের বিল
তবে সরকারি কর্মীরা এই দাবি জানালেও অনেকের মতে, ২০১৯-এর রোপায় রাজ্য সরকার ডিএ-র উল্লেখ রাখেনি। সেক্ষেত্রে সরকারি কর্মীদের দাবি নবান্ন কতটা মেনে নেবে তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে। যদিও মামলাকারী সংগঠনগুলির মতে, বাজেট ঘোষণার দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ষষ্ঠ বেতন কমিশমের আওতায় ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন। তাহলে সেটা কীভাবে করা হল ? সরকারি কর্মীদের আরও বক্তব্য, ডিএ ছাড়া পে কমিশন হতেই পারে না।
এদিকে নবান্নে শুক্রবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ নিয়ে মামলা করা সংগঠনগুলিও। এই বৈঠক নিয়ে কনফেডারেশন অফ গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'এই বৈঠকের দিকে আমাদের নজর থাকবে। ডিএ নিয়ে কী আলোচনা হবে বা হবে না-সেটা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। কারণ মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এখন কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে আন্দোলনকারীরা বাকি যে দাবিগুলি নিয়ে যাচ্ছেন, সেগুলিকে সমর্থন করি।'
সরকারি কর্মচারী পরিষদের দেবাশিস শীল বলেন, 'আন্দোলনকারীদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তাঁদের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে বলে আমি আশাবাদী। হাইকোর্টের নির্দেশে এই আলোচনায় বসছে সরকার। আলোচনায় রাজ্য সরকারী কর্মীদের স্বার্থ রক্ষিত হবে বলে মনে করছি।'
এদিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে মোট ৫ প্রতিনিধি যাবেন নবান্নে। আন্দোলনকারীদের অন্যতম সদস্য নির্ঝর কুণ্ডু বলেন, 'ডিএ-র পাশাপাশি আরও ২ দাবি সরকারের কাছে রাখা হবে। দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগ ও অস্থায়ী কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা। এই আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কয়েকজন সরকারি কর্মীকে বদলি করাও হয়েছে। সেটাও বিবেচনার আবেদন জানানো হবে।'
তবে সরকারি কর্মীরা একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, আলোচনায় প্রাধান্য পাবে ডিএ-র বিষয়টিই। কারণ, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের এই আন্দোলনকে অন্যমাত্রা দিয়েছে বকেয়া ডিএ-র দাবি।