সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে উৎসবের আগে জিএসটি কমিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই সুবিধে কি গ্রাহকরা পাচ্ছেন? আসলে ই-কমার্স সাইটগুলিতে বিষয়টা এমন হয়ে উঠেছে, কর কম, দাম বেশি! ভুরি ভুরি অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। যার প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক।
একাধিক ছোট এবং বড় ই-কমার্স সাইটগুলিতে কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছে। এমনকি যে সব পণ্যের জিএসটি হার কম, বেড়েছে সে সবের দামও। এই সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে সরকার। সেই সতর্ক করা হয়েছে, অন্যায্য ব্যবসা করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছ থেকে জবাব তলব করা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার আগে পর্যন্ত তাদের কোনও উত্তর আসেনি।
কীভাবে কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে?
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই কেলেঙ্কারি কীভাবে প্রকাশ্যে এল? চলতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর জিএসটি কাউন্সিলের ৫৬তম সভায় জিএসটি হারে বড় পরিবর্তন ঘোষণা করা হয়। ১২% এবং ২৮% জিএসটি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তার বদলে ৫% এবং ১৮% কাঠামোই রাখা হয়। নতুন জিএসটি হার বাস্তবায়নের পর থেকে বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমেছে। তবে দাম কমানোর পরিবর্তে বেশ কয়েকটি অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট জিনিসপত্রের দর বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ।
কতগুলি অভিযোগ?
নতুন জিএসটি ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পর থেকে জাতীয় গ্রাহক হেল্পলাইনে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি জিএসটি সম্পর্কিত অভিযোগ এসেছে। ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব নিধি খারে জানিয়েছেন, প্রায় ৬৮% সরাসরি অভিযোগ। বাকিগুলি অনুসন্ধান করে মিলেছে। প্রায় ১,৭০০ অভিযোগ কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ডের (সিবিআইসি) কাছে পাঠানো হয়েছে। সর্বাধিক সংখ্যক অভিযোগ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, গৃহস্থালির যন্ত্রপাতি এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্য সম্পর্কিত। অভিযোগ, ভুল জিএসটি হার চাপানো হয়েছে।
আগেই অনুমান করেছিল কেন্দ্র
জিএসটি হার কমানোর সম্পূর্ণ সুবিধা জনসাধারণকে নাও দিতে পারে সংস্থাগুলি, সেই অনুমান আগেই করেছিল সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব বিভাগ সমস্ত কেন্দ্রীয় জিএসটি জোন কমিশনার এবং প্রধান কমিশনারদের কাছে একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে ২২ সেপ্টেম্বরের আগে এবং পরে ৫৪টি পণ্যের দামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়। এই পণ্যগুলির মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, খাবার এবং শিক্ষার উপকরণ অন্তর্ভুক্ত ছিল। আগামী ৬ মাসের জন্য প্রতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে তা জমা দিতে হবে। প্রথম রিপোর্ট ৩০ সেপ্টেম্বর জমা দেওয়ার কথা ছিল।
কী পদক্ষেপ করতে পারে সরকার?
মুনাফা সংক্রান্ত নিয়মকানুন জানা যাক। বর্তমানে জিএসটি আইনের অধীনে মুনাফা রোধ করে এমন কোনও আইন নেই। তবে ২০১৭ সালে ১ জুলাই দেশজুড়ে জিএসটি কার্যকর হয়। সেই সময় কেন্দ্রীয় জিএসটি আইনে মুনাফা বিরোধী বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় মুনাফা-রোধী কর্তৃপক্ষ (NAA) তৈরি হয়। এর কাজ সরবরাহকারী বা দোকানদাররা কর ফাঁকি দিচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা।