রান্নার গ্যাসের দাম ১০০০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। বেড়েছে শাক-সবজিরও দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে আটা, ময়দা, তেল-নুনের দামও। দিনে ৪টি রুটি খেলেও লাগে ১০০ গ্রাম আটা। ১০ বছর আগে প্রতি কেজি আটার দাম ছিল ২২.৪৮ টাকা। সেই হিসেবে ৪টি রুটির খরচ ২.২৪ টাকা। সেই আটাই এখন বিকোচ্ছে ৩২.৯১ টাকায়। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ৪টি রুটি তৈরির খরচ। এখন লাগছে ৩.২৯ টাকা।
কেন আটার দাম বাড়ছে?
এর পিছনে জোড়া কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, প্রথমত দেশে গমের উৎপাদন কমছে। সেই সঙ্গে মজুতও। দেশের বাইরে রফতানি বড়ে গিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ৯ মে রাজধানী দিল্লিতে এক কেজি আটার দাম ছিল ২৭ টাকা। আন্দামানের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকায়। মুম্বইয়ে এক কেজি আটা ৪৯ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে ক্রমবর্ধমান আটার দাম। ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত আটার দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ।
দ্বিতীয়ত, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধর গমের জোগানে টান পড়েছে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন বিশ্বের গম রফতানির এক চতুর্থাংশ বাজার। ২০১৯ সালে 8.14 বিলিয়ন এবং ইউক্রেন ৩.11 বিলিয়ন মূল্যের গম রফতানি করেছে রাশিয়া। এর ফলে বিদেশে ভারতীয় গমের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহণ খরচও বেড়েছে।
চাল-ডাল, তেল, লবণের দামও ঊর্ধ্বমুখী
শুধু আটা নয়, বেড়েছে চাল, ডাল, তেল ও লবণের দামও। ১০ বছরে এক কেজি চালের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৩ সালের ৯ মে এক কেজি চালের গড় দাম ছিল ২৫.৪০ টাকা। সেটাই ৯ মে ২০২২-এ বেড়ে ৩৬.০৭ টাকা হয়েছে। অড়হর ডালের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। ১০ বছরে এক কেজি ডালের দাম ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১০২ টাকা হয়েছে।
তেলের দামও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ১০ বছরে বাদাম তেলের দাম বেড়েছে ৪৩%। ৮৪ শতাংশ বেড়েছে সর্ষের তেলের দাম। সবথেকে বেশি দামি হয়েছে পাম তেল। ১০ বছরে দাম ১৪০% বেড়েছে। বনস্পতির দাম ১০ বছরে বেড়েছে ১২৯% ।
আটা-ময়দার দাম বাড়ায় বেকারি পণ্য দামি হয়েছে। বেড়েছে বিস্কুট ও পাউরুটির দাম। চলতি বছরের মার্চে পাউরুটির খুচরো মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৩৯ শতাংশ। যা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্রিটানিয়া ক্রিম বিস্কিট, মেরি গোল্ডের মতো বেকারির জিনিসও বিক্রি করে। ১০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থা। ব্রিটানিয়ার ম্যানেজিং ডিরেকটর বরুণ বেরি সম্প্রতি জানান, বিশ্বে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কাঁচামালের (আটা, চিনি, কাজু ইত্যাদি) দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন- মমতা চান মেয়াদবৃদ্ধি, জুনেই জিএসটি ক্ষতিপূরণ বন্ধের পথে কেন্দ্র