রাশিয়ার উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে পশ্চিমী বিশ্ব। মার্কিন ডলারে লেনদেন করতে পারছেন না রুশ ব্যবসায়ীরা। সেই সুযোগে সস্তায় তেল কিনছে ভারত। বুধবার ফের অপরিশোধিত তেল কিনল ইন্ডিয়ান অয়েল (IOCL)। এর মধ্যে রয়েছে 'ডিসকাউন্ট'-এ রাশিয়া থেকে নেওয়া অশোধিত তেলও ((Russian Ural)। এর পাশাপাশি পশ্চিম আফ্রিকান কাঁচা তেলও (West African Oil) বিপুল পরিমাণে কিনেছে সংস্থা।
একটি সূত্র উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, দেশের বৃহত্তম পেট্রোলিয়ম কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল মে মাসে রাশিয়া থেকে ৩০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল ক্রয়ের বরাত দিয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকা থেকে তেল কেনা হয়েছে ২০ লক্ষ ব্যারেল। রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলটি 'Vitol' নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছাড়ে কিনেছে ইন্ডিয়ান অয়েল।
আগেও রাশিয়া থেকে তেল কিনেছে ভারত
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) শুরু হওয়ার পর এনিয়ে দ্বিতীয়বার ইন্ডিয়ান অয়েল রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল (Russian Ural Crude Oil) কিনল। চলতি মাসের শুরুতে ভিটলের কাছ থেকে একই পরিমাণে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনেছিল সংস্থা। মে মাসে এই বরাত ডেলিভারি হওয়ার কথা।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এরপর একাধিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। ডলারে বাণিজ্য করতে না পারায় বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করতে সমস্যায় পড়েছে তারা। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি রাশিয়ার ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক ব্যবস্থার উপরও প্রভাব ফেলেছে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট দেশের মুদ্রায় বাণিজ্যিক লেনদেন শুরু করেছে রুশ কোম্পানিগুলি। সেই সঙ্গে বড় ছাড়ে অপরিশোধিতও তেল বিক্রি করছে।
নিষেধাজ্ঞা চাপায়নি ভারত
আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের বিবাদের নিষ্পত্তির আহ্বান করেছে ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও চাপিয়েছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ। সে দেশ থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানির উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। দুনিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদারিকারক ভারত। অপরিশোধিত তেলের চাহিদার ৮০ শতাংশ আমদানির উপর নির্ভর করে। তাই ছাড়ে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ইন্ডিয়ান অয়েল। এছাড়া এক্সন থেকে নাইজেরিয়ান উসান এবং আগাবামির অপরিশোধিত তেলের ১০-১০ ব্যারেল ক্রয় করা হয়েছে। যদিও এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি সংস্থা।
সস্তা হবে পেট্রোল-ডিজেল?
দেশের বৃহত্তম পেট্রোলিয়ম কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল। পেট্রোল এবং ডিজেলের খুচরা বাজারেও সংস্থার আধিপত্য রয়েছে। ফলে 'ছাড়ে' পাওয়া অপরিশোধিত তেলের লাভ পেতে পারে সাধারণ মানুষ। সস্তায় পেট্রোল-ডিজেল মিলতে পারে দেশীয় বাজারে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দামবৃদ্ধির জেরে এই সিদ্ধান্ত। তার আগে ১৩৭ দিন ধরে পেট্রোপণ্যের দর বাড়েনি।
আরও পড়ুন- রিলায়েন্সের দু'টি সংস্থা ছাড়তে বাধ্য হলেন মুকেশের ছোট ভাই Anil Ambani!