Fixed Deposit vs. PPF: সুরক্ষিত বিনিয়োগ বলতে এখনও সিংহভাগ মানুষই ফিক্সড ডিপোজিট (FD) এবং পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (PPF)-এ ভরসা করেন। বাজারে যতই শেয়ার, স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড আসুক, FD, PPF-এর জনপ্রিয়তা মোটেও হ্রাস পায়নি। বিশেষত রিটায়ারমেন্ট ফান্ড, সঞ্চয় বৃদ্ধি করার জন্য এগুলি অপরিহার্য।
তবে এই দুই বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই একটি লক-ইন পিরিয়ড থাকে। অর্থাত্ যখন খুশি টাকা তুলে নিতে পারবেন না। তাতে আপনার লোকসান হবে। ধৈর্য্য ধরে লম্বা সময় অপেক্ষা করলে তবেই লাভ। তবে অবসরের জন্য টাকা জমানোর পরিকল্পনা থাকলে এটি সত্যিই কাজে আসতে পারে। ফলে পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কে FD বা PPF অ্যাকাউন্ট খুলতেই পারেন।
দু'টিতেই নিশ্চিত রিটার্ন
বলাই বাহুল্য, PPF-এ বিনিয়োগ করলে আপনি নিশ্চিত রিটার্ন পাবেন। বর্তমানে, পিপিএফ-এ 7.1% হারে সুদ পাবেন। এই স্কিমে বিনিয়োগ করলে কিন্তু আপনি বেশি কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন। 'ট্রিপল ই' কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন—এক্সেম্পট-এক্সেম্পট-এক্সেম্প্ট (EEE) স্ট্যাটাস। অর্থাত্ বিনিয়োগ, জমা এবং টাকা তোলা। সব ক্ষেত্রেই দুর্দান্ত কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন।
আবার পোস্ট অফিস FD-তেও নিশ্চিত রিটার্ন পাবেন। ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হয়।
এক বছরের মেয়াদী আমানতে(টার্ম ডিপোজিট) 6.8% এবং দুই থেকে তিন বছরের FD-তে 7% সুদ পাবেন। আবার পাঁচ বছরের মেয়াদী আমানতে 7.5 % রিটার্ন পাবেন।
সুদের হার
১ বছরের পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট 6.9%
২ বছরের পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট 7%
৩ বছরের পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট 7%
৫ বছরের পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট 7.5%
FD ও PPF-এর মধ্যে কোনটি বেশি ভাল?
১. ৫ বছরের পোস্ট অফিস FD-তে তুলনামূলকভাবে কম মেয়াদের মধ্যেই সর্বোচ্চ 7.5% পর্যন্ত উচ্চ সুদের হার পাবেন। অন্যদিকে PPF (পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড)-এ বর্তমানে 7.1% সুদের হার পাবেন। তার উপর ১৫ বছরের লক-ইন পিরিয়ড রয়েছে। সুদের হার বার্ষিক হিসাবে প্রযোজ্য।
২. লক্ষ্য করে দেখুন, ৩ বছরের কম সময় পর্যন্ত পোস্ট অফিস টাইম ডিপোজিট (FD)-এ আপনি PPF-এর তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সুদের হার পাবেন। তাছাড়া PPF-এর মতো এতে কোনও কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন না। তবে টাকা যখন খুশি তোলা যাবে। হয় তো তাতে সুদের হারে সামান্য জরিমানা আরোপ হবে।
অর্থাত্, আপনার যদি মনে হয় যে, ২-৩ বছরের মধ্যে হঠাত্ টাকা তোলার দরকার হতে পারে, কিন্তু আপাতত সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা রাখতে চাইছেন না, সেক্ষেত্রেই কম মেয়াদের FD করতে পারেন।
৩. পোস্ট অফিস FD-তে বিনিয়োগে অনেক সুবিধাও আছে। যেমন ধরুন, ২০০ টাকার মতো ছোট অঙ্ক নিয়েই এবং সর্বোচ্চ বিনিয়োগের সীমা ছাড়াই এতে টাকা রাখতে শুরু করতে পারেন। কিন্তু PPF অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে ন্যূনতম ৫০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা।
৪. পোস্ট অফিস FD সময়ের আগেই তুলে নিতে পারবেন। খুবই সহজ প্রক্রিয়া। কিন্তু PPF-এর ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট খোলার পর ৫ অর্থবর্ষ গেলে, তবেই সময়ের আগে টাকা তুলতে পারবেন। PPF-এর প্রেক্ষিতে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনেক অতিরিক্ত শর্তাবলী রয়েছে।
৫. আগেই বলা হয়েছে, PPF EEE-র মধ্যেই আসে। তাই এতে এক অর্থবর্ষে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের উপর কর ছাড় পাবেন। জমাকৃত টাকার সঙ্গে প্রাপ্ত সুদের উপরেও কোনও কর কাটা হবে না। এদিকে ৫ বছরের টাইম ডিপোজিটেও আয়কর আইনের 80C ধারা অনুযায়ী কর ছাড় পাবেন। কিন্তু বিনিয়োগকৃত টাকার উপর যে সুদ পাবেন, সেটি করযোগ্য।
ফলে, যদি আপনার যদি অল্প মেয়াদের বিনিয়োগ করারই লক্ষ্য থাকে, সেক্ষেত্রে পোস্ট অফিস FD করাই ভাল। আবার আপনার যদি মনে হয়, ১৫ বছর পরের জীবনের জন্য এখন থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমাবেন, সেক্ষেত্রে PPF-এ বিনিয়োগ করা উচিত।