রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই আম্বানির আজ জন্মবার্ষিকী। ১৯৩২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম হয়। তাঁর পুরো নাম- ধীরজ লাল হীরাচন্দ আম্বানি। দশম শ্রেণি অবধি পাশ করা ধীরুভাইই পরবর্তীতে ভারতের বিখ্যাত শিল্পপতি হিসেবে স্থান পান। বর্তমানে এই ব্যবসা দেখেন তাঁর দুই পুত্র মুকেশ আম্বানি এবং অনিল আম্বানি। আসুন জেনে নেওয়া যাক তিনি কীভাবে তাঁর ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
ধীরুভাই আম্বানির সাফল্যের গল্প উৎসাহী করতে পারে অনেককেই। প্রথমে তাঁর মাসিক বেতন ছিল ৩০০ টাকা। তিনি কেবল তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ভিত্তিতে পরবর্তীতে কোটি কোটি টাকার মালিক হন। আজ মুকেশ আম্বানি ও অনিল আম্বানি সেই ব্যবসার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছেন।
ধীরুভাই আম্বানি গুজরাটের ছোট্ট গ্রাম চোরওয়াদ থেকে এসেছিলেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন সৌরাষ্ট্রের জুনাগড় জেলায়। তাঁর বাবা স্কুলে একজন শিক্ষক ছিলেন। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না, তিনি স্কুলের পড়া শেষ করেই ছোটখাটো কাজ শুরু করেছিলেন।
যখন তাঁর বয়স ১৭ বছর, তিনি তাঁর ভাই রমনিকলালের কাছে অর্থ উপার্জনের জন্য ইয়েমেনে যান। যেখানে তিনি পেট্রোল পাম্পে মাসে ৩০০ টাকা বেতন পেতেন। সংস্থার নাম ছিল 'এ বেসি এ্যান্ড কোম্পানি'। ধীরুভাইয়ের কাজ দেখে সংস্থাটি তাঁকে ফিলিং স্টেশনে ম্যানেজার করে দেয়।
সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পর ধীরুভাই ১৯৫৪ সালে দেশে ফিরে আসেন। ইয়েমেনে থাকাকালীন ধীরুভাই আরও অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন। তাই বাড়ি ফিরেই পাঁচশ টাকা নিয়ে মুম্বাই রওনা হন।
বাজার ও ব্যবসা সম্পর্কে ধীরুভাই আম্বানির ভাল জ্ঞান ছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে পলিয়েস্টার ও মশলার চাহিদা ভারতে এবং বিদেশে অনেক বেশি।
তিনি নিজের মন স্থির করলেন এবং রিলায়েন্স কমার্স কর্পোরেশন নামে একটি সংস্থা চালু করলেন, যা ভারতের পলিয়েস্টার ও মশলা বিদেশে বিক্রি করে।
২০০০ সালে আম্বানি দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসাবে স্থান পান। ২০০২ সালের ৬ জুলাই মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে মারা যান।
ধীরুভাইয়ের অফিসের জন্য প্রথমে ৩৫০ বর্গফুটের একটি ঘর ছিল। অফিস বলতে একটি টেবিল, তিনটি চেয়ার, দুজন সহযোগী এবং একটি টেলিফোন ছিল। বিশ্বের অন্যতম সফল মানুষটি কিন্তু ১০ ঘন্টার বেশি কাজ করেননি।
ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিনে ধীরুভাইকে নিয়ে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল সেই তথ্য থেকে জানা যায় ১০ ঘন্টা কাজকে যথেষ্ট বলেই মানতেন আম্বানি কর্তা। তাঁর মতে যারা ১২ ঘন্টা-১৬ ঘন্টার কথা বলেন হয় তাঁরা মিথ্যেবাদী কিংবা ধীর গতিতে কাজ করে থাকেন।
তবে কাজের পর ধীরুভাই আম্বানির পার্টি করা মোটেও পছন্দ করতেন না। বরং তিনি প্রতি সন্ধ্যায় পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতে ভালবাসতেন।