সামনেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের রেজল্ট। তারপরেই নতুন ভবিষ্যত গড়ার জন্য লড়াই। তবে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজন অর্থের। কিন্তু অনেক পরিবারেরই সামর্থ্য নেই পড়াশোনার খরচ চালানোর। মেধাবী অথচ আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে।এই স্কলারশিপের টাকা দিয়ে যেকোনো শিক্ষার্থী বিনা বাধায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হতে পারেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য এমন স্কলারশিপের হদিশই আজ এখানে দেওয়া হচ্ছে।
আর্থিক অসুবিধার কারণে বহু শিক্ষার্থী মাঝপথেই পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে দলছুট হয় সেই কারণে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকেই এ বিষয়ে সঠিক ভাবে জানেন না তাই এই ধরনের স্কলারশিপের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে না। এক নজরে দেখে নিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন কোন স্কলারশিপ প্রচলিত রয়েছে।
উত্তরকন্যা স্কলারশিপ/ নবান্ন স্কলারশিপ
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে প্রতিবছর প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে থাকে । যা আগে চিফ মিনিস্টার রিলিফ ফান্ড নামে পরিচিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে স্থান বিশেষে তা উত্তরবঙ্গে উত্তরকন্যা স্কলারশিপ এবং দক্ষিণবঙ্গে নবান্ন স্কলারশিপ নামে পরিচিত । এই স্কলারশিপটির গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যেসব ছাত্র ছাত্রীরা কোনো কারণবশত উচ্চমাধ্যমিক বা H.S পরীক্ষায় ৭৫% নম্বর পাননি তাদের জন্য এই স্কলাপশিপটি খুব সাহায্যকারী ভূমিকা পালন করে । কারণ, ৫৫% থেকে ৬৫% নম্বর প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। মোটামুটি সারা বছরই আবেদন করা যায় এই স্কলাপশিপের জন্য।
স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ
রাজ্য সরকার দ্বারা প্রচলিত একটি বিশেষ স্কলারশিপ হল স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ।এই স্কলারশিপের জন্য বিকাশ ভবনে গিয়ে আবেদন করতে হয়।তবে এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য বিশেষ কিছু শর্তাবলী প্রযোজ্য।এই স্কলারশিপের আবেদন করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে এবং এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের স্কুল ও কলেজগুলো থেকে পরীক্ষা দিতে হবে।মাধ্যমিকে ৭৫% ও উচ্চমাধ্যমিকে ৭৫% নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে অনার্সের বিষয়ে ৫৫% নম্বর পেতে হবে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীর পারিবারিক বার্ষিক আয় ৬০ হাজারের কম হতে হবে তবেই এই স্কলারশিপের আবেদন করা যাবে।
ওয়েসিস
তপশিলি জাতি বা উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ চালু করা হয়। বিদ্যালয় প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে অর্থাৎ মাধ্যমিকের আগে থেকে শুরু করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করা পর্যন্ত এই স্কলারশিপ দেওয়া হয়।এছাড়াও অন্যান্য টেকনিশিয়ান লাইনে যে সমস্ত শিক্ষার্থী রয়েছে তাদেরকেও এই স্কলারশিপের সুবিধা দেওয়া হয়।
জগদীশ বসু ন্যাশনাল ট্যালেন্ট সার্চ স্কলারশিপ
এই স্কলারশিপটি শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। জগদীশ বসু ন্যাশনাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ ক্লাব হল রাজ্য সরকারের একটি সংস্থা। প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে এই সংস্থার তরফ থেকে একটি পরীক্ষার আযোজন করা হয়। এই পরীক্ষা মাধ্যমিকে ৭৫% পাওয়া শিক্ষার্থীরা, উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং গ্রেজুয়েশনের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা দিতে পারেন। এই স্কলারশিপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবে এই স্কলারশিপের সুবিধা পাওয়া যায়।
মেরিট কাম মিনস
সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য এই স্কলাশিপটি চালু করা হয়েছে। মাধ্যমিকের আগে থেকে শুরু করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করা পর্যন্ত প্রত্যেক সংখ্যালঘু ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারেন। এর পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনিক্যাল ছাত্র-ছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের জন্য আন্দোলন করতে পারেন।