আজ ২০২৫। আর আজ থেকে ঠিক ২৫ বছর পর, অর্থাৎ ২০৫০ সালে স্কুলের চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে যাবে। তখন আর আজকের মতো পড়াশোনা হবে না। ক্লাসরুমগুলি হবে অন্যরকম। অন্তত এমনটাই মনে করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কগনিশন এডুকেশনের প্রফেসর, সাইকোলজিস্ট হাওয়ার্ড গার্ডনার এবং হার্ভার্ড ল স্কুলের ভিজিটিং প্রফেসর, ড্রাগনফ্লাই থিংকিং নামক নামক এআই ফার্মের সিইও অ্যান্থিয়া রবার্টস।
তাঁরা দুজনেই হার্ভার্ডের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব এডুকেশনের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে আগামিদিনের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। তাঁদের মতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই শুধু শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতিতে বদল আনবে না, বরং এটা মানুষ যে ভাবে জ্ঞান অর্জন করে, সেই প্রক্রিয়াতেও বিরাট পরিবর্তন আনবে।
গার্ডনারের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে বাচ্চারা পড়া, লেখা, অঙ্ক — আর তার সঙ্গে একটু কোডিং শিখবে। এটাই হবে পড়ার নতুন কৌশল।
এখানে বলে রাখা দরকার, গার্ডনার নিজের মাল্টিপল ইন্টেলিজেন্স থিয়োরির জন্য সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। আর এ দিনে অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'আগামিদিনে স্কুলের শিক্ষায় বড়সড় বদল আসতে চলেছে। গত ১০০০ বছরেও এমন কোনও বদল আসেনি।'
তাঁর মতে, আগে যেই সব স্কিলগুলিকে মনে করা হতো খুব গুরুত্বপূর্ণ, এখন আর সেগুলির প্রয়োজনই নেই। এখন সেগুলি যন্ত্রের মাধ্যমেই করা সম্ভব। তাই স্কিলগুলি নিজের গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সেগুলি নিয়ে বাচ্চাদের মাথা খারাপ করার কোনও প্রয়োজন নেই।
তিনি আরও জানান, এআই খুব দ্রুত গতিতে শিক্ষার ভবিষ্যত বদলে দিচ্ছে। যাঁরা এই সেক্টরে কাজ করছেন, তাঁদের সকলকে এই বিষয়টা বুঝতে হবে। সেই মতো নিজেদের তৈরি করতে হবে।
হার্ভার্ড গেজেটে গার্ডনারের মত জানিয়ে বলা হয়েছে, এখনও শিশুদের বেসিক পড়াশোনা, কোডিং শেখানো প্রয়োজন। কিন্তু তারপর শিক্ষককে মেন্টরের রোল নিতে হবে। আজকের শিক্ষকদের মতো আচরণ করলে চলবে না।
এছাড়া তিনি স্কুলের সময়সীমা কমানোর পক্ষেও সওয়াল করেছেন। তাঁর মতে, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ১০ থেকে ১৫ বছর স্কুলে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
ও দিকে রবার্টসও গার্ডনারের কথাগুলিরই মোটের উপর সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, আগামিদিনে শিক্ষার্থীরা এআই-এর দল পরিচালনা করবে। নিজেরাই সব কাজে অংশ নেবে।
অর্থাৎ সোজা ভাষায় বললে, আগামিদিনের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছেন এই দুই স্কলার।