সুরের সঙ্গতে যন্ত্রণা থেকে মুক্তির দাওয়াই। আর তাই মিউজিক থেরাপি (Music Therapy) শুরু করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University)। রোজ এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দুষ্ট লোকেদের গান গেয়ে যেমন থামিয়ে দিত গুপি-বাঘা। তেমনই সুরের জাদুতে পালানোর পথ খোঁজে মনের অসুখের কারণ। আর এই মনের অসুখ সারাতে, করোনা আক্রান্তের পাশাপাশি যারা করোনা ভয়ে গৃহবন্দি, তাঁদের মানসিক অবসাদ কাটাতে এবং তাদের মানসিক শান্তি দিতে এগিয়ে এল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University)।
বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University)-র সঙ্গীত ভবন শুরু করলো মিউজিক থেরাপি। প্রতিদিন একঘন্টা করে অনলাইন অনুষ্ঠান করবে সংগীত ভবনের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। বিশ্বভারতীর দেওয়ার লিঙ্কের মধ্যে দিয়ে যে কেউ অনুষ্ঠান শুনতে বা দেখতে পারবেন।
করোনা সময় সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভর্তি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেক আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগী। হাসপাতালে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নির্বাসনের মতো কাচের ঘরের ঘেরাটোপে স্বজন-বান্ধবহীন হয়ে প্রতি মূহুর্তে পাঞ্জা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।
করোনা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, ওষুধ, পথ্য যেমন জরুরি, তেমনই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই চালানোর জন্য প্রয়োজন অসম্ভব মনের জোর। বাঁচার ইচ্ছা, মনের জোর না থাকলে শত চেষ্টা করেও করোনা রোগীদের বাঁচানো সম্ভব নয়।
সুরের সঙ্গতে যন্ত্রণা থেকে মুক্তির দাওয়াই। গানের তালে ক্লান্তি কাটানোর চেষ্টা। চিকিৎসকদের একাংশের মত, মিউজিক থেরাপি মানুষের মস্তিষ্ককের প্রতিটি ভাগকে উজ্জ্বীবিত করে।
তাই ওই মুমূর্ষু রোগীদের জীবনীশক্তি ফেরাতে মিউজিক থেরাপি নিয়ে এগিয়ে এল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
বুধবার থেকে তারা অনলাইনে শুরু করেছে মিউজিক থেরাপি। তাদের সরকারি ওয়েবসাইটে লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University)-র কর্মী, অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি যে কেউ এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন।
তারা জানিয়ে দিয়েছে, রোগীদের পাশাপাশি যারা করোনার ভয়ে নিজেদের গৃহবন্দী করে রখেছে, যারা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তারা এই মিউজিক থেরাপির মাধ্যামে মনের জোর ফিরে পাবেন, মানসক শান্তি ফিরে পাবেন।
বুধবার ১৬ জুন থেকে প্রতিদিন বিকেলে এক ঘন্টার এই অনুষ্ঠান হবে দু'টি ভাগে। বিকেল ৪-৪.৩০ এবং ৪.৩০-৫টা পর্যন্ত। চলবে ২৩ জুন পর্যন্ত। এই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক, অধ্যাপিকারা যে যে বিষয়ের অধ্যাপক সেটা নিয়ে বিশ্লেষণ করবেন। পরে তিনি গান বা নৃত্য পরিবেশ করবেন।
রবীন্দ্র সঙ্গীতের পাশাপাশি রয়েছে সেতার,তবলা,এসরাজ, রবীন্দ্র নৃত্য ও মণিপুরি নৃত্য। পরিবেশন করবেন বাসবী মুখোপাধ্যায়, সুমিত বসু, সুমন ভট্টাচার্য, সুভায়ু সেন মজুমদার সহ অনান্যরা। একই ভাবে প্রতিদিন বিশ্বভারতী যোগ বিভাগ সকাল ৭ টা থেকে সকাল ৮টা এবং বিকাল ৫-৬টা পর্যন্ত যোগ এবং ব্রিদিং এক্সারসাইজ অনুষ্ঠান করছে।
এই বিষয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University)-এর মুখপাত্র অনির্বাণ সরকার বলেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেখানো পথ ধরে চলছে। করোনার সময় মানুষের পাশে থেকেছে। ত্রাণ বিলি থেকে মিউজিক থেরাপি- প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।