বাঁকুড়ায় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষাদান করবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা (Civic Volunteer), সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ। আর পুলিশের এই সিদ্ধান্তের পরেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের শিক্ষামহলে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগও। আর তার মাঝেই এবার এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করলেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার ও মীরাতুন নাহার।
যা বলেছিলেন পুলিশ সুপার...
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের (Bankura District Police) নেওয়া এই উদ্যোগের কথা বুধবারই প্রকাশ্যে এসেছে। নয়া প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে 'অঙ্কুর'। এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, প্রায় ১৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁদের ইতিমধ্যেই নূন্যতম একটা শিক্ষা রয়েছে। পড়াশোনার দিক থেকেও তাঁরা ভাল। এক্ষেত্রে খাতরা মহকুমার বারিকুল, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, সিমলাপাল ও রাইপুর থানা এলাকার স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাকি থানার এলাকা থেকেও ১টি, ২টি বা ৩টি করে স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর প্রতিটি স্কুলের জন্য ২ জন করে সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাঁদের বাড়িও ওই এলাকাতেই। রোজ ১-২ ঘণ্টা ক্লাস নিতে হবে। এক্ষেত্রে অঙ্ক ও ইংরেজি শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি।
কড়া সমালোচনা পবিত্র সরকারের...
পুলিশের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারকে (Pabitra Sarkar) প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমি মনে করি এই সিদ্ধান্ত বিভ্রান্তিকর এবং অনুচিত। তার কারণ হল, সিভিক ভলান্টিয়ারদের শিক্ষাদীক্ষা নিয়ে আমি কোনও কটাক্ষ করছি না। তাঁদের মধ্যে হতেই পারেন যে পড়াতে পারেন, বা তাঁদের সেই যোগ্যতা আছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলে পড়াতে হলে আবার একটা ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণেরও দরকার হয়, এই সিভিক ভলান্টিয়ারদের সেটা আছে কিনা দেখতে হবে। কাজেই সিভিক ভলান্টিয়ার হলেই প্রাথমিক স্কুলে পড়ানোর যোগ্যতা অর্জন করবে, এটা অত্যন্ত ভ্রান্ত ধারণা। আমি মনে করি এই ধরনের এলোমেলো সিদ্ধান্তের ফলেই পশ্চিমবাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার এত দুর্গতি। এই ধরণের সোজা প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করি"।
সরব মীরাতুন নাহার...
প্রায় একই ধরনের কথা শোনা গেল শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহারের (Miratun Nahar) মুখেও। তিনি বলেন, "শিক্ষার ভবিষ্যৎ বলে কিছু আর নেই। বর্তমানটাই আমাদের পীড়িত করছে এবং বর্তমানটা দেখেই আমরা উদ্বিগ্ন, আহত, বীতশ্রদ্ধ সরকারের প্রতি। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কোনও আশার আলো আমরা এখনও পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি না। আমরা যাঁরা শিক্ষাব্রতী মানুষ, তাঁদের কাছে নিদারুণ দুঃসংবাদ। এমনিতে সিভিক ভলান্টিয়ারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট সম্পর্কেও রীতিমত সংশয় রয়েছে। সেই সিভিক ভলান্টিয়াররা আজকে একেবারে শিক্ষাক্ষেত্রে, কোন যোগ্যতায় তাঁদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, আমরা হতবাক হয়ে যাচ্ছি। আমরা বুঝতে পারছি না যে কী প্রক্রিয়ায় রাজ্যটা চলছে, রাজ্য প্রধান সত্যিই কি সুস্থ অবস্থায় আছেন"?
আরও পড়ুন - 'এই ট্যুইটটার জন্য জেলে যেতেও রাজি,' বিস্ফোরক দাবি মহুয়ার