প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিকে ঘিরে যখন তোলপাড় রাজ্য, তখনই প্রাথমিকের পঠন পাঠন নিয়ে প্রকাশ্যে এল বড় খবর। শিক্ষক নয়, প্রাথমিক স্কুলে এবার পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। বাঁকুড়া পুলিশের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষামহলে। নতুন এই প্রকল্পের নাম 'অঙ্কুর'। এর জন্য ইতিমধ্যেই ৪৬টি স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে এই বিষয়ে লিখিতভাবে বাঁকুড়ার জেলাশাসককে জানিয়েছেন ওই জেলার পুলিশ সুপার। তাতে বলা হয়েছে, এবার প্রাথমিক পড়ুয়াদের ক্লাস নেবেন প্রশিক্ষিত সিভিক ভলান্টিয়াররা। এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানান, প্রায় ১৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁদের ইতিমধ্যেই নূন্যতম একটা শিক্ষা রয়েছে। পড়াশোনার দিক থেকেও তাঁরা ভাল। এটি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে খাতরা মহকুমার বারিকুল, রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, সিমলাপাল ও রাইপুর থানা এলাকার স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাকি থানার এলাকা থেকেও ১টি, ২টি বা ৩টি করে স্কুলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর প্রতিটি স্কুলের ক্ষেত্রে ২ জন করে সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যাঁদের বাড়িও ওই এলাকায়। রোজ ১-২ ঘণ্টা ক্লাস নিতে হবে। এক্ষেত্রে অঙ্ক ও ইংরেজি শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার। ক্লাস নেওয়া হবে স্থানীয় ভাষাতেই।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূরক ক্লাস পরিচালনার দায়িত্ব সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছে'। পাশাপাশি সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ী সংবাদমাধ্যমকে জানান, 'এটা আসলে কিছুই না, কেন্দ্রীয় সরকার যে নয়া শিক্ষানীতি চালু করেছে, তাতে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে তুলে দিয়ে, গোটাটাকে বেসরকারি হাতে তুলে দাও। তার জন্য সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস কর। এটা সেই প্রকল্পের অংশ'। যদিও পাল্টা বাম আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা ও এইমসের নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে বিরোধীদের আক্রমণ করেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।